পাতা:স্ত্রীস্বাধীনতা ও স্ত্রীশিক্ষা.pdf/২৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
(১৯)

দর্শন করিয়া অভ্যাস করিতেন। পরে উপযুক্ত কালে উপযুক্ত পাত্রের হস্তে অর্পিত হইতেন। পাত্রও এখনকার মতন ইন্দ্রিয়াসক্ত ছিলেন না। কারণ, যিনি পাত্র তিনি কখন অপাত্র হইতে পারেন না। দুঃখের বিষয় আজকাল সেরূপ পাত্র মেলা কঠিন। পূর্ব্বে বলা হইয়াছে যে, বালকের গুরুগৃহে থাকিয়া যখন আত্মবিদ্যাবলে সর্ব্বশাস্ত্রবিৎ হইতেন, তখন গুরুর অনুমতিক্রমে গৃহে আসিয়া দারপরিগ্রহ করিতেন। পূর্ব্বে উক্তরূপ পাত্রের হস্তেই কন্যা অর্পিত হইত। হিন্দুর বিবাহ ইন্দ্রিয়পরিতৃপ্তির জন্য নয়। হিন্দুরা স্ত্রীকে সহধর্ম্মিণী বলিয়া থাকেন। স্ত্রীর সহিত একত্র ধর্ম্ম আচরণ করিতে হয় বলিয়া, স্ত্রীকে সহধর্ম্মিণী বলা হয়। পূর্ব্বে বলা হইয়াছে, বালিকা পিতামাতার কার্য্য দেখিয়া যাহা যাহা অভ্যাস করিয়াছেন, স্বামিগৃহে আসিয়া পূর্ব্বে পিতাকে যেরূপ ভাবে দেখিতেন, এক্ষণে সেই ভাবে স্বামীর পিতা অর্থাৎ শ্বশুরকে দেখিতে লাগিলেন, এবং মার প্রতি যেরূপ ভাব ছিল এক্ষণে শাশুড়ির প্রতি সেই ভাব প্রযুক্ত হইল। মা যেরূপ ভাবে নিজ স্বামীকে দেখিতেন কন্যাও নিজ পতিকে সেই ভাবে দেখিতে লাগিলেন এবং মার যে সকল গুণ ছিল তাহা পূর্ব্বে অভ্যস্থ হইয়াছিল মাত্র এক্ষণে তাহা কার্য্যে পরিণত হইতে চলিল। স্বামী নিজে স্বাধীনচেতা, স্ত্রীও স্বাধীন চিত্ত লাভ করিবার জন্য স্বামীর নিকট আত্মবিদ্যা শিক্ষা করিতে আরম্ভ করিলেন। এ শিক্ষা স্বামীর নিকট যত সহজে হইতে পারে এমন আর কুত্রাপি হয় না। তবে স্বামীর অভাবে কোন সংযমী পুরুষের নিকটেও হইতে পারে। কারণ, সংযমী পুরুষের নিকট কাহারও কোন আশঙ্কা নাই।