পাতা:স্বর্গীয় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর - রজনীকান্ত গুপ্ত.pdf/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
(১৩)

বচনের অর্থপরিগ্রহ কুরিয়া, সেইরূপ প্রফুল্ল হইলেন। আর তাহার বাসায় যাওয়া হইল না। তিনি পুনর্ব্বার প্রফুল্লভাবে কলেজের পুস্তকালয়ে যাইয়া লিখিতে বসিলেন। লিখিতে লিখিতে রাত্রি শেষ হইয়া গেল। বিদ্যাসাগর মহাশয় হিন্দুবিধবার দুঃখদগ্ধ হৃদয়ে শান্তিসলিল প্রক্ষেপের জন্ত এইরূপ অধ্যবসায়ের সহিত শাস্ত্র-সিন্ধুমন্থনে উদ্যত হইয়াছিলেন। সে সময়ে তাহার আয় সামান্ত ছিল। তথাপি তিনি এজন্য অবিকীরচিত্তে তুর্ব্বহ ঋণভার বহন করিয়াছিলেন। র্তাহার চেষ্টা সর্ব্বাংশে সফল ও র্তাহার মত সমাজের সর্ব্বত্র পরিগৃহীত না হইলেও, কেহই তাহার অধ্যবসায়, দয়াশীলতা ও স্বার্থত্যাগের প্রশংসাবাদে বিমুখ হইবেন না।

 বিদ্যাসাগর মহাশয় যখন বিধবাবিবাহ প্রচলিত করিবার জন্ত শাস্ত্রীয় বিচারে প্রবৃত্ত হয়েন, তখন তিনি পরমারাধ্য পিতা ও স্নেহ ময়ী মাতার অনুমতি .গ্রহণ করিয়াছিলেন। মাতাপিত তাহার নিকটে প্রত্যক্ষদেবতাস্বরূপ ছিলেন। পিতার অমতে বা মাতার বিনানুমতিতে তিনি কখনও কোনও কার্য্যে হস্তক্ষেপ করিতেন না। মাতাপিতার প্রতি র্তাহার এইরূপ অসাধারণ ভক্তি ছিল। কথিত আছে, কোনও বালিকার বৈধব্য দেখিয়া, তাহার মাতা সজলনয়নে তাহাকে বিধবাবিবাহ শাস্ত্রসিদ্ধ কি না, বিচার করিক্তে বলেন। পিতা নিকটে উপবিষ্ট ছিলেন, তিনিও এ. বিষয়ের অনুমোদন করেন। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে, বিধবাবিবাহের বিচার প্রবৃত্ত হইলে, শাস্ত্র কখনও উহার বিরোধী হইবে না। কিন্তু চিরন্তন অনুশাসন ও চির-প্রচলিত রীতির বিরুদ্ধে কোনও কথাবলিলৈ, পাছে ভক্তিভাজন জনকজননী মনঃক্ষুন্ন হয়েন, এই জন্ত তিনি উহাতে হস্তক্ষেপ করেন নাই; শেষে মাতপিতার সম্মতি দর্শনে তাহাঁর আগ্রহ ও অপাবসাগের সঞ্চার হয়। তিনি বিধবার