পাতা:স্বামী - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বামী So “মেঘ বুঝি। এ দিকে ফিরে দেখা যায় না ?”. “কৈ যায় ?” বলৈ আমি ভুলে হঠাৎ মুখ ফেরাতেই দু’জনের চোখোচৌখি হ’য়ে গেল। নরেন ফিক্‌ ক’রে হেসে বললে, “একখানা আরসি থাকুলে যায় কি না, দেখিয়ে দিতুম। নিজের মুখে চোখেই একসঙ্গে মেঘ-বিদ্যুৎ দেখতে পেতে ; কষ্ট ক’রে আকাশে খুঁজতে श्'ऊ बा !” ' আমি তখন চােখ ফিরিয়ে নিলুম। রূপের প্রশংসা আমি ঢের শুনেছি, কিন্তু, নরেনের চাপা হাসি, চাপা ইঙ্গিত, সেদিন আমার বুকের মধ্যে ঢুকে আমার হৃৎপিণ্ডটাকে যেন সজোরে দুলিয়ে দিলে। এই ত সে পাঁচ বছর আগের কথা, কিন্তু আজ মনে হয়, সে সৌদামিনী বুঝি বা আর কেউ ছিল ! / নরেন বললে, “মেঘ না কাটলে ব্ৰজবাবুকে ব’লে দেব, লেখা-পড়া শেখানো মিছে। তিনি আর যেন কষ্ট না করেন।” আমি বলুলুম, “বেশ ত, ভালই তাঁ। আমি ওসব পড়তেও চাইনে, বরং গল্পের বই পড়তেই আমার ঢের ভাল লাগে।” নরেন হাততালি দিয়ে ব’লে উঠল, “দাড়াও ব’লে দিচ্ছি-আজ কাল নভেল পড়া হচ্চে বুঝি ?” • আমি বলুলুম, “গল্পের বই তবে আপনি নিজে পড়েন কেন ?” নরেন বললে, “সে শুধু তোমাকে গল্প বলুবার জন্যে। নইলে পড়তুমি না।” বৃষ্টির দিকে চেয়ে বললে, “আচ্ছা, এ জল যদি আজ না থামে ? কি কয়বে ?” বলুলুম, “ভিজে-ভিজে চলে যাব।” *আচ্ছা, এ যদি আসামের পাহাড়ী বৃষ্টি হ’ত, তা হ’লে ?” গল্প জিনিসটা চিরদিন কি ভালই বাসি ! একটুখানি গন্ধ পাবামাত্ৰ আমার চোখের দৃষ্টি একমুহূৰ্ত্তে আকাশ থেকে নরেনের মুখের উপর