পাতা:স্বামী - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Šš) স্বামী আমি বলুলুম, “দরকার কি, আমার ত কষ্ট হয় না।” তিনি বললেন, “না হ’লেও একদিন অসুখ ক’রতে পারে যে ” আমি বলুলুম, “তোমার এতই যদি ভয়, আমার আর কোন ঘরে শোবার ব্যবস্থা ক’রে দিতে পার না ?” তিনি বললেন, “ছিঃ, তা কি হয় ?• তাতে কত রকমের অপ্রিয় আলোচনা উঠবে।” বলুলুম, “ওঠে উঠুক, আমি গ্ৰাহ করি নে ৷” তিনি একমুহূৰ্ত্ত চুপ করে আমার মুখের পানে চেয়ে থেকে বললেন, “এত বড় বুকের পাটা যে তোমার চিরকাল থাকবে, এমন কি কথা আঁছে ?” বলে একটুখানি হেসে কাজে চলে গেলেন। আমার মেজ-দেওর টাকা চল্লিশের মত কোথায় চাকুরী করতেন ; কিন্তু একটা পয়সা কখন সংসারে দিতেন না। অথচ, তার আফিসের সময়ের ভাত, আফিস থেকে এলে পা ধোবার গাড়ৎগামছা, জল-খাবার, পান তামাক ইত্যাদি যোগাবার জন্যে বাড়ী শুদ্ধ সবাই যেন ত্ৰস্ত হয়ে থাকৃত। দেখতুম, আমার স্বামী আর আমার মেজ-দেওর হয় ত কোন ৷ দিন একসঙ্গেই বিকেলবেলায়, বাড়ী ফিরে এলেন, সবাই তঁার জন্যেই ব্যতিব্যস্ত ; এমন কি চাকরাটা পৰ্য্যন্ত তঁাকে প্ৰসন্ন করুবার জন্যে ছুটোছুটি ক’রে বেড়াচ্চে। তার একতিল দেৱী কিংবা অসুবিধা হ’লে যেন পৃথিবী রসাতলে যাবে। অথচ আমার স্বামীর দিকে কেউ চেয়েও দেখত না । তিনি আধঘণ্টা ধ’রে হয় তা এক ঘটী জলের জুস্ত দাড়িয়ে আছেন-কারও সে দিকে গ্রাহাই নেই। অথচ এদের খাওয়া-পরা মুখ-সুবিধের জন্তেই , তিনি দিবা-রাত্রি খেটে মক্‌চেন। ছ্যাকুরা গাড়ীর ঘোড়াও মাঝে মাঝে বিদ্রোহ করে, কিন্তু, তার যেন কিছুতেই শ্ৰান্তি নেই, কোন দুঃখই যেন তাকে পীড়া দিতে পারে না। এমন শান্ত, এত ধীর-এত পরিশ্রমী, এর আগে কখনও আমি চোখে দেখিনি। আর চোখে দেখেচি ব’লেই