পাতা:স্বামী - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*GN: স্বামী তিনি মানমুখে আস্তে আস্তে বলুলেন, “আর একটা কথা-মায়ের কাছে আজ মাপ' চেয়ে ।” আমার সর্বাঙ্গ রাগে জ্বলে উঠলো ; বলুলুম, “মাপ চাওয়াটা কি ছেলেখেলা, না, তার কোন অর্থ আছে ?” স্বামী বললেন, “অর্থ তার এই যে, সেটা তোমার কৰ্ত্তব্য ।” বলুলুম, “তোমাদের ভগবান বুঝি বলেনু, যে নিরপরাধ, সে গিয়ে অপরাধীর নিকট ক্ষমা চেয়ে কৰ্ত্তব্য করুকৃ ?”, স্বামী আমাকে ছেড়ে দিয়ে আমার মুখের পানে, খানিকক্ষণ চুপ ক’রে চেয়ে রইলেন। তার পর ধীরে ধীরে বললেন, “ভগবানের নাম নিয়ে তামাসা কবৃতে নেই, এ কথা ভবিষ্যতে কোন দিন। আর যেন মনে ক’রে দিতে আমায় না হয়। আমি তর্ক কবৃতে ভালবাসিনে-মায়ের কাছে মাপ চাইতে না পারে, তার সঙ্গে আর কখনও বিবাদ কবৃতে যেয়ে না ।” বলুলুম, “কেন, শুনতে পাইনে ?” তিনি বললেন, “না। নিষেধ করা আমার কৰ্ত্তব্য, তাই নিষেধ করে দিলুম।” এই বলে তিনি বাহিরে যাবার জন্য উঠে দাড়ালেন। আমি আর সইতে পাৰ্বলুম না, বলুলুম, “কৰ্ত্তব্যজ্ঞানটা তোমাদেরই যদি শুশ্ৰত বেশি, সে কি আর কারও নেই ? আমিও তা মানুষ, বাড়ীর মধ্যে স্থামারও ত একটা কৰ্ত্তব্য আছে। তা যদি তোমাদের ভাল না লাগে, আমাকে বাপের বাড়ী পাঠিয়ে দাও। থাকুলেই বিবাদ হবে, এ নিশ্চয় বলে দিচ্ছি।” তিনি ফিরে দাড়িয়ে বললেন, “তাহ’লে গুরুজনের সঙ্গে বিবাদ করাই বুঝি তোমার কৰ্ত্তব্য ? সে যদি হয়, যেদিন ইচ্ছে বাপের বাড়ী যাও, আমাদের কোন আপত্তি নেই।” স্বামী চলে গেলেন, আমি সেইখানে ধপ ক’রে বসে পড়ুলুম।