পাতা:স্বামী - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

vSOq স্বামী যাবার সময় বলতে বলতে গেলেন, “সব মেয়ে মানুষের ঐ এক রোগ, कारकहे व कि ठि !” আমার বুকের মধ্যে যেন আহলাদের জোয়ার ডেকে উঠল। আমি কেন ঝগড়া করেচি, তা উনি জানতে পেরেছেন, এই কথাটা শতবার মুখে আবৃত্তি করে সহস্ৰ রকমে মনের মধ্যে অনুভূত্ব ক’তে লাগলুম। সকালের সমস্ত কথা আমার যেন ধুয়ে মুছে গেল! এখন কতবার মনে হয়, ছেলেবেলা থেকে কাজের আকাজের কত বই পড়ে কত কথাই শিখেছিলুম, কিন্তু এ কথাটা কোথাও যদি শিখতে পেতুম, পৃথিবীতে তুচ্ছ একটি কথা গুছিয়ে বলাবার দোষে, ছোট একটি কথা মুখ ফুটে না বলবার অপরাধে, কত শত ঘর-সংসােরই না ছারখার হয়ে যায়। হয় ত, তাহ’লে এ কাহিনী লেখবার আজ ; আবশ্যকই হ’ত না । তাই ত বার বার বলি, ওরে হতভাগী ! এত শিখেছিলি, এটা শুধু শিখিসনে, মেয়েমানুষের কার মানে মান! কার হতাদরে তোদের মানের অট্টালিকা তাসের অট্টালিকার মতই এক নিমিষে একটা ফুয়ে ধূলিসাৎ হয়ে যায় ! তবে, তোর কপাল পুড়বে না তা পুড়বে কার! সমস্ত সন্ধ্যাবেলাটা ঘরে খিল দিয়ে যদি সাজ-সজাই কবৃলি, অসময়ে ঘুমের ভাণ করে যদি স্বামীর পালন্ধের একাধারে গিয়ে গুতেই পাবৃলি, তাকে একটা সাড়া দিতেই কি তোর এমন কণ্ঠরোধ হ’ল ? তিনি ঘরে ঢুকে দ্বিধায়, সঙ্কোচে , বার বার ইতস্ততঃ ক’রে যখন বেরিয়ে গেলেন, একটা হাত বাড়িয়ে তঁর হাতটা ধরে ফেলতেই কি তোর হাতে পক্ষাঘাত হ’ত ? সেই তা সারারাত্রি ধরে মাটীতে পড়ে পড়ে কঁাদূলি, একবার মুখ ফুটে বলতেই কি শুধু এত বাধা হ’ল যে, আচ্ছা, তুমি তোমার বিছানাতে এসে শোও, আমি আমার ভূমিশয্যাতে না হয় ফিরে যাচ্ছি।