পাতা:স্বামী - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্বামী (tR তোমাদের আমি কিছুতে দেব না, তা নিশ্চয় জেনো। আমার মামার বাড়ীতে এখনো ত রান্না-ঘরটা বাকী আছে, আমি তার মধ্যেই আবার ফিরে যাব। কা’ল আমি যাচ্ছি।” স্বামী অনেকক্ষণ চুপ ক’রে বসে থেকে বললেন, “যাওয়াই উচিত বটে ! কিন্তু, তোমার গয়নাগুলো রেখে যেয়ো ।” শুনে অবাক হঁয়ে গেলুম। এত হীন, এত ছোট স্বামীর স্ত্রী আমি। পোড়া মুখে হঠাৎ হাসি এলো। বলুলুম, “সেগুলো কেড়ে নিতে চাও অ, বেশ, আমি রেখেই খাব।” প্রদীপের ক্ষীণ আলোতে স্পষ্ট দেখতে পেলুম, তার মুখখানি যেন শাদা হয়ে গেল ! বললেন, “না না, তোমার কিছু গয়না। আমি ভিক্ষে চাচ্ছি। আমার টাকার বড় অনাটন, তাই বাধা দেবো।” কিন্তু এমুনি পোড়াকপালী আমি যে, ও-মুখ দেখেও কথাটা বিশ্বাস কম্বতে পাম্বলুম না। বলুলুম, “বাধা দাও, বেচে ফ্যালো, যা ইচ্ছে কোরো, তোমাদের গয়নার ওপর আমার এতটুকু লোভ নেই।” ব’লে, তখুনি বাক্স খুলে আমার সমস্ত গয়না বিছানার ওপর ছুড়ে ফেলে দিলুম। যে দুর্গাছি বালা মা দিয়েছিলেন, সেই দুটি ছাড়া গা থেকে পৰ্যন্ত সমস্ত গয়না খুলে ফেলে দিলুম। তাতেওঁ তৃপ্তি হ’লো না, বেনারসী কাপড় জমা প্রভৃতি যা কিছু এরা দিয়েছিলেন, সমস্ত বার ক’রে টান মেরে ফেলে দিলুম। : স্বামী পাথরের মত স্থির-নিৰ্বাক্‌ হ’য়ে বসে রইলেন। আমার ঘূণায় বিতৃষ্ণায় সমস্ত মনটা এমনি বিধিয়ে উঠল যে, এক ঘরের মধ্যে থাকাও অসহ্য হ’য়ে প’ড়ল। • বেরিয়ে এসে অন্ধকার বারান্দায় একাধারে আঁচল৷ পেতে শুয়ে পড়লুম। মনে হ’ল, দোরের আড়াল থেকে কে যেন বেরিয়ে গেল । কান্নায় বুক ফেটে যেতে লাগল, তবু প্ৰাণপণে, মুখে কাপড় গুজে बिद्ध यान दांत्रांयूम।