পাতা:স্বামী - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

V20: একাদশী বৈরাগী করিয়া রক্ষা করে, দেখিতে হইবে। কারণ, বাস না করিলেও এই বাস্তুভিটার উপর একাদশীয় যে অত্যন্ত মমতা, স্থতিরত্বের তাহা অগোচর ছিল না। যেহেতু, বছর-দুই পূর্বে এই জমীটুকু খরিদ করিয়া নিজের বাগানের অঙ্গীভূত করিবার অভিপ্ৰায়ে সবিশেষ চেষ্টা করিয়াও তিনি সফলকাম হইতে পারেন নাই। তাহারুইপ্ৰস্তাবে তখন একাদশী অত্যন্ত সাধু ব্যক্তির ন্যায় কাণে আঙল দিয়া বলিয়াছিল, “এমন অনুমতি কবৃবেন। না ঠাকুর-মশাই, ঐ এক ফোটা জমীর বদলে ব্ৰাহ্মণের কাছে দাম নিতে আমি কিছুতেই পাবুব না। ব্ৰাহ্মণের সেবায় সাগবে, এ তো আমাব সাত-পুরুষের ভাগ্য।” স্মৃতিরত্ন নিরতিশয় পুলকিতচিত্তে তাহার দেব-দ্বিজে ভক্তি-শ্রদ্ধার লক্ষকোটি সুখ্যাতি করিয়া অসংখ্য আশীৰ্বাদ করার পরে, একাদশী করযোড়ে সাবনয়ে নিবেদন করিয়াছিল,-“কিন্তু, এমনি পোড়া অদৃষ্ট, ঠাকুর-মশাই, যে সাত-পুরুষের ভিটে আমার কিছুতেই হাতছাড়া করবার জো নেই। বাবা মরণকালে মাথার দিব্যি দিয়ে বলে গিয়েছিলেন, খেতেও যদি না পাস বাবা, বাস্তু-ভিটে কখনো ছাড়িসা নে!” ইত্যাদি ইত্যাদি ! সে আক্রোশ স্মৃতিরত্ন বিশ্বত হন নাই। দিন-পাঁচেক পরে, একদিন সকালবেলা এই ছেলের দলটি দুই ক্রোশ পথ হাটিয়া একাদশীর সদরে আসিয়া উপস্থিত হইল। বাড়ীটি মাটির , কিন্তু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। দেখিলে মনে হয়, লক্ষ্মীশ্ৰী আছে। অপূর্ব কিংবা তাহার দলের আর কেহ একাদশীকে পূৰ্ব্বে কখনো দেখে নাই ; সুতরাং চণ্ডীমণ্ডপে পা দিয়াই তাহদের মন বিতৃষ্ণায় ভরিয়া গেল। এ’ লোক টাকার কুমীরই হৌক, হাঙ্গরই হৌক, লাইব্রেরীর সম্বন্ধে "ষৈ পুটি মাছটির উপকারে আসিবে না, তাহা নিঃসন্দেহ। একাদশীর পেশা তেজারিতি। বয়স ষাটের উপর গিয়াছে। সমস্ত দেহ যেমন শীর্ণ, তেমনি শুষ্ক। কণ্ঠভরা তুলসীর মালা । দাড়ি-গোঁফ কামানো (R