পাতা:স্বামী - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৬৯

Wes একাদশী বৈরাগী আগাগোড়া তন্ন-তন্ন করিয়া নিরীক্ষণ করিয়া, শেষে একটা নিশ্বাস ফেলিয়া খাতাটা ফিরাইয়া দিয়া বলিল, “আমি বুড়ো-মানুষ, আমার কাছে আবার $ाक्ष ८द्रुन ?” অপূৰ্ব কোনমতে রাগ সামলাইয়া কহিল, “বুড়ো মানুষ টাকা দেবে না ত ছােট ছেলেতে টাকা দেবে ? স্যারা পাবে কোথুয়ি শুনি ?” বুড়া সে কথার উত্তর না দিয়া কহিল, ইস্কুল তা হয়েছে কুড়ি পঁচিশ বছর ; কৈ, এতদিন ত কেউ লাইব্রেরীর কথা তোলে নি বাপু ? তা যাক, এ তো আর মন্দ কাজ নয়,-আমাদের ছেলে।পুলে বই পড়ুক আর না পাডুক, আমার গায়ের ছেলেরাই পড়াৱে ত! কি বল ঘোষাল-মশাই ?” ঘোষাল ঘাড় নাড়িয়া কি যে বলিল বোঝা গেল না । একাদশী কহিল, “তা বেশ, চান্দা দেব আমি, -একদিন এসে নিয়ে যাবেন চার আনাপয়সা । কি বল ঘোষাল, এর কমে আর ভাল দেখায় না ! অতদুর থেকে ছেলেরা এসে ধরেচে—যা”হােক একটু নাম-ডাক আছে বলেই তা ? আরও তা লোক আছে তাদের কাছে ত চাইতে যায় না,-কি বল হে ?” ক্ৰোধে অপুর্বর মুখ দিয়া কথা বাহির হইল না । অনাথ কহিল, “এই চার আনার জন্যে আমরা এত দুরে এসোঁচি ? তাও আবার আর একদিন এসে নিয়ে যেতে হবে ?” একাদশী’ মুখে একটা শব্দ করিয়া মাথা নাড়িয়া নাড়িয়া বালিতে লাগিল, “দেখুলেন ত অবস্থা,-ছটা পয়স হকের সুন্দ আীয় কতে ব্যাটাদের কাছে কি ছাছড়াপনূই না করতে হয় ? তা, এ পাট-টা বিক্ৰী না হয়ে গেলে আর চাদা দেবার সুবিধে-” • অপুর্বর রাগে ঠোঁট কঁাপিতে লাগিল ; বলিল, “সুবিধে হবে এখানেও ধোপা-নাপিত বন্ধ হলে। ব্যাটা পিশাচ সৰ্বাঙ্গে ছিটে ফোটা কেটে জাত হারিয়ে বোষ্টম হয়েছেন,-আচ্ছা !” বিপিন উঠিয়া দাড়াইয়া একটা আঙ্গুল তুলিয়া শাসাইয়া কহিল, “বারুইপুরের রাখালদাসবাবু আমাদের কুটুম-মনে থাকে যেন বৈরাগী !”