পাতা:হত্যাকারী কে? - পাঁচকড়ি দে.pdf/২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

QC55AK KQ RS আমার মানসিক প্ৰবৃত্তিসমূহে তখন কেমন একটা গোলমাল পড়িয়া গেল। কি ভাবিতেছি-কি ভাবিতে হইবে-কি হইল, এই সব তোলাপাড়া করিতে করিতে যেন আমি কতকটা আত্মহারা হইয়া গেলাম। অশেষসদগুণাভরণা, সৌম্যশ্ৰী লীলার সুখ দুঃখ যে এখন এমন একটা দয়াশূন্য, ক্ষমাশূন্য, নিষ্ঠুরতম বৰ্ব্বরের হাতে নির্ভর করিতেছে, এ চিন্তা প্রতিক্ষণে আমার হৃদয়ে সহস্ৰ বৃশ্চিক-দংশনের জ্বালা অনুভব করাইতে লাগিল । তমনি প্রতিক্ষণে একটা শ্বাপদ সুলভ প্ৰতিহিংসাতৃষ্ণা হৃদয়ের মধ্যে একান্ত অদম্য হইয়া উঠিতে লাগিল। এবং তেমনি প্রতিক্ষণে মন্ত্রৌষধিরুদ্ধবীৰ্য্য সপীর ন্যায়। সেই প্ৰতিহিংসা নিশ্চেষ্ট হইয়া পড়িতে লাগিল। কি করিব ? কোন উপায় নাই। নিজের বুকে বিষাক্ত দীর্ঘ ছুরিকা শতবার আমূল বিদ্ধ করিতে পারি ; কিন্তু মূঢ় শশিভূষণের গায়ে একবার একটা আঁচড় ই, এমন ক্ষমতা আমার নাই। নির্জনে পথিমধ্যে প্ৰতিমুহূৰ্ত্তে আমার বেশ স্পষ্ট অনুভূত হইতে লাগিল যে, নির্বিম্বে চিন্তারাক্ষসী আমার হৃদপিণ্ড শোষণ করিয়া রক্তশোষণ করিতেছে। আমি মুমূর্ষুর ন্যায় গৃহে ফিরিলাম। তাহার পর-হে সৰ্ব্বজ্ঞ ! সৰ্ব্বশক্তিমান! তুমি জান প্ৰভো! তাহার পর যাহা ঘটিয়াছিল । অষ্টম পরিচ্ছেদ হয়, পরদিন প্ৰভাতের সেই লোমহর্ষণ ঘটনার সেই ভয়ঙ্করী স্মৃতির হাত হইতে আমি কি মরিয়াও অব্যাহতি পাইব ? তখন বেলা ঠিক দশটা। এমন সময়ে নরেন্দ্রনাথ উৰ্দ্ধশ্বাসে চুটিয়া আসিয়া আমার ঘরে প্রবেশ করিল। দেখিলাম তাহার মুখ বিবৰ্ণ, এবং দৃষ্টি উন্মাদের। মুখ চোখের ভাবে যেন একটা কোন ভীষণতার ছায়া : লাগিয়া রহিয়াছে। দেখিয়া শিহরিয়া উঠিলাম।