পাতা:হত্যাকারী কে? - পাঁচকড়ি দে.pdf/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তৃতীয় পরিচ্ছেদ পরদিন অপরান্ত্রে আমি বালিগঞ্জে গিয়া, অক্ষয়বাবুর নূতন বাগান অনুসন্ধান করিয়া বাহির করিলাম। তখন সূৰ্য্যাস্তের স্বর্ণচ্ছায়া মিলাইয়া যাইতে আর বড় বিলম্ব ছিল না। পশ্চিম আকাশে দূরব্যাপী জলদ-পৰ্ব্বতান্তর্বক্তিনী কনককিরণচ্ছটা কোন এক অপূৰ্ব্বদৃষ্টা মহীয়সী দেবী প্রতিমার মত হেমাচলশিরে পদাঙ্গুষ্ঠের উপর ভর দিয়া সম্প্রসারিত দেহ এবং উৰ্দ্ধমুখ উর্দুদৃষ্টি ও উৰ্দ্ধবাহু হইয়া দাড়াইয়া আছে। এবং তাহার লাবণ্যোেজল-দোঙ্গাস্বলিত সোণালী অঞ্চল যেন প্রতিক্ষণে কম্পিত ও বায়ুচঞ্চল হইয়া উঠিতেছে। কি এক অপ্রত্যাশিতপূর্ব বিপুল পুলকপ্লাবনে সমগ্ৰ বিশ্ব ভরিয়া গিয়াছে। এবং বিশ্ব-পৃথিবীর অনন্ত জনপ্রাণী সেন্স বিরাট দৃশ্যের সম্মুখে স্তম্ভিত হইয়া আছে। আর আমার হৃদপিণ্ড ভেদ করিয়া একটা মৰ্ম্মাহত ব্যাকুল কাতরতা পিঞ্জরাবদ্ধ পক্ষীর ন্যায় বক্ষঃপঞ্জরে দুর্দান্তবেগে প্ৰতিনিয়ত আঘাত করিতেছে ; আজি মাতৃহৃদয় শান্তিদেবী যেন চরাচর সমুদায় তাহার নিভৃত ক্ৰোড়ে টানিয়া লইয়াছে, আর সন্তাপদগ্ধ আমি সেই মাতৃস্বৰ্গ হইতে পৃথিবীর কোন অজানা দূরতম প্রদেশে একাকী স্বলিত হইয়া পড়িয়াছি। আমি উদ্যানে প্রবিষ্ট হইয়াই দেখিলাম, অক্ষয়কুমারবাবু একটি ফ্ল্যানেলের চায়না কোটি গায়ে দিয়া উদ্যানে পাদচারণা করিতেছেন। র্তাহার ভাবে তাহাকে বিশেষ কিছু চিন্তিত বোধ হইল। আমি তাহার সমীপবৰ্ত্তী হইতেই তিনি আমার দিকে একটা চকিত দৃষ্টিনিক্ষেপ করিয়া বলিলেন, “এই যে আপনি আসিয়াছেন, আমি আপনাকে ডাকিবার জন্য এইমাত্ৰ লোক পাঠাইব, মনে করিতেছিলাম।” আমি । আমি কি বড় বিলম্ব করিয়াছি ?