পাতা:হত্যাকারী কে? - পাঁচকড়ি দে.pdf/৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

প্রথম পরিচ্ছেদ

যোগেশচন্দ্রের কথা

কি মনে করিয়া যে আমি তখন অক্ষয়বাবুকে আমার কাজে নিয়োজিত করিয়াছিলাম, সে কথা এখন ঠিক করিয়া বলিতে পারিব না। কতক বা ভয়ে, কতক বা রাগে এবং কতক বা অনুতাপে, তখন আমি কতকটা পাগলের মতনই হইয়া গিয়াছিলাম। যদি আপনি কখনও কাহাকে ভালবাসিয়া থাকেন-প্রকৃত ভালবাসা যাহাকে বলে, যদি আপনি সেইরূপ ভালবাসায় কাহাকে ভালবাসিয়া থাকেন, তাহা হইলে আপনি বুঝিতে পরিবেন, কি মর্ম্মান্তিক ক্লেশ আমি ভোগ করিতেছি। কি আশ্চর্য্য, আমি এখনও সেই নিদারুন যন্ত্রণা সহ্য করিয়া বাঁচিয়া আছি।

 আমি বাল্যকাল হইতেই লীলাকে ভালবাসিয়া আসিতেছি। লীলাও আমাকে সর্বান্তঃকরণে ভালবাসিত; সে ভালবাসার তুলনা হয় না। মরিয়াও কি লীলাকে ভুলিতে পারিব? শৈশবকাল হইতেই শুনিতাম লীলার সহিত আমার বিবাহ হইবে। তখন হৃদয়ের কোন প্রবৃত্তি সজাগ হয় নাই, তথাপি সে কথায় কেমন একটি অজানিত আনন্দ-প্রবাহে সমগ্র হৃদয় উল্লসিত হইয়া উঠিত। তাহার পর বড় হইয়াও সেই ধারণা অটুট ছিল। আমাদিগের আর্থিক অবস্থা তেমন সচ্ছল ছিল না বলিয়া, আমার সহিত লীলার বিবাহে লীলার পিতার কিছু অনিচ্ছা থাকিলেও লীলার মাতার আর তাহার ভ্রাতা নরেন্দ্রনাথের একান্ত আগ্রহ ছিল। নরেন্দ্রনাথ আমার সহাধ্যায়ী বন্ধু। এমন কি, অবশেষে তঁহাদিগের আগ্রহে লীলার পিতাকেও সম্মত হইতে হইয়াছিল। সুতরাং লীলা যে একদিন আমারই হইবে, এ দৃঢ় বিশ্বাস আমার সমভাবে অক্ষুন্ন ছিল।