পাতা:হনুমানের স্বপ্ন ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

প্রেমচক্র

 কন্দর্প বললেন—মোটে? বেশ, তাই হবে। আমি বর দিচ্ছি, ভুবনমোহন রূপ ধারণ কর। বৎসরান্তে আবার স্বমূর্তি ফিরে পাবে, তখন যত খুশি তপস্থা ক’রো, কেউ বাধা দেবে না।

 ভুণ্ডিলের আপাদমস্তকে একটা তারুণ্যের প্লাবন ব’য়ে গেল। কাঁচা-পাকা জটাজুট উড়ে গিয়ে মাথায় ভ্রমরবিনিন্দিত কৃষ্ণ কেশ ঝাঁকড়া ঝাঁকড়া গজিয়ে উঠল। একটা অদৃশ্য ক্ষুর চরর্ ক’রে মুখমণ্ডল নির্লোম ক’রে দিলে, রইল শুধু দু-পাশে ছুটি কচি কচি জুলপি। ছাতাপড়া নড়া দাঁত খটাখট উপড়ে গিয়ে দু-পাটি দন্তরুচিকৌমুদী ফুটে উঠল। কটিতটে শুভ্র পট্টবাস জড়িয়ে গেল, কাঁধে চড়ল আপীত উত্তরীয়, গলায় মল্লিকার মালা, হাতে মোহন মুরলী, সর্বাঙ্গে দিব্যকান্তির পলেস্তারা। ভুণ্ডিল একটি লম্ফ দিয়ে হুংকার, ছেড়ে বললেন ভো বিশ্বচরাচর, শৃণ্বন্তু, আমি আছি তোমরাও আছ, এইবার দেখে নেব।

 কন্দর্প বললেন —অভি পাকা কথা। আচ্ছা, এইবার ওই সুদূর নৈমিষারণ্যে দৃষ্টিনিক্ষেপ কর।

 ভুণ্ডিল তাই করলেন। আহ্লাদে আটখানা হয়ে বললেন— আহা, কি দেখলুম!

 কি দেখলে?

 তিনটি পরমাসুন্দরী তরুণী গোমতীসলিলে স্নান করছে।

১৩৯