পাতা:হনুমানের স্বপ্ন ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

হনুমানের স্বপ্ন ইত্যাদি গল্প

ধৃতরাষ্ট্র এই বলেছেন— বৎস যুধিষ্ঠির, তোমরা পঞ্চ ভ্রাতা আমার শত পুত্রের সমান স্নেহপাত্র। এই লোকক্ষয়কর জ্ঞাতিধ্বংসী আসন্ন যুদ্ধ যেকোনও উপায় নিবারণ করা কর্তব্য। আমি অশক্ত অন্ধ বৃদ্ধ, আমার পুত্রেরা অবাধ্য এবং যুদ্ধের জন্য উৎশুক। আমি বহু চিন্তা ক’রে স্থির করেছি যে হিংস্র অস্ত্রযুদ্ধের পরিবর্তে অহিংস দ্যুতযুদ্ধেই উভয় পক্ষের বৈবভাব চরিতার্থ হ’তে পারে। অতি কষ্টে আমার পুত্রগণ ও তাদের মিত্রগণকে এতে সম্মত করেছি। অতএব তুমি সবান্ধবে কৌরবশিবিরে এসে আর একবার সুহৃদ্যূতে প্রবৃত্ত হও। পণ পূর্ববৎ সমগ্র কুরুপাণ্ডবরাজ্য। যদি দুর্যোধনের প্রতিনিধি শকুনির পরাজয় ঘটে তবে কুরুপক্ষ সদলে রাজ্য ত্যাগ ক’রে চিরতরে বনবাসে যাবে। যদি তুমি পরাস্ত হও তবে তোমরাও রাজ্যের আশা ত্যাগ ক’রে চিরবনবাসী হবে। বৎস, তুমি কপটতার আশঙ্কা ক’রো না। আমি দুই প্রস্থ অক্ষ সজ্জিত রাখব, তুমি স্বহস্তে নিজের জন্য বেছে নিও, অবশিষ্ট অক্ষ শকুনি নেবেন। এর চেয়ে অসন্দিগ্ধ ব্যবস্থা আর কি হ’তে পারে? সঞ্জয়ের মুখে তোমার সম্মতি পাবার আশায় উদ্গ্রীব হয়ে রইলাম। হে তাত যুধিষ্ঠির, তোমার সুমতি হ’ক, তোমাদের পঞ্চ ভ্রাতার কল্যাণ হ’ক, অষ্টাদশ অক্ষৌহিণী সহ কুরুপাণ্ডবের প্রাণ রক্ষা হ’ক।’

১৭০