হনুমানের স্বপ্ন ইত্যাদি গল্প
জবরউন্নিসা। কন্দর্পচাপতল্য তাঁহার ভ্রূযুগল কুঞ্চিত করিয়া বলিলেন ‘বেওকুফ, তুমি কাহার সঙ্গে কথা কহিতেছ? ছিলে নগণ্য কিজিলবাশ ক্রীতদাস, আজ বাদশাহের দয়ায় সেনাপতি হইয়াছ। বস্, ঐখানেই ক্ষান্ত হও, অধিক ঊর্ধ্বে নজর দিও না।’
কোফতা খাঁ যথোচিত ভীষণতা সহকারে একটি অট্টহাস্য হাসিলেন। বলিলেন ‘শাহজাদী, কে তোমার পিতাকে তখ্তে চড়াইয়াছে? মারহাট্টার আক্রমণ কে বার বার রোধ করিয়াছে? কাহার অনুগ্রহে তোমার এই ভোগৈশ্বর্য, এই হীরাজহরত, এই লীলা-উদ্যান, এই হাজারবুলবুল-মুখরিত বুস্তাঁ? ইন্শাল্লাহ্! জান, একটি অঙ্গুলির হেলনে সমস্ত ভূমিসাৎ করিতে পারি? আজ হিন্দুস্তানের প্রকৃত মালিক কে? তোমার অক্ষম পিতা, না এই মহাবীর রুস্তম-ই-হিন্দ্ কোফতা খান ফতে জঙ্গ্?
জবরউন্নিসা বলিলেন— ‘কুত্তার গর্দানে লোম গজাইলেই সে সিংহ হয় না।’
সেনাপতি কহিলেন—‘বিসমিল্লাহ্! এ কথা আর কেহ বলিলে এই মুহূর্তে তাহাকে কতল করিতাম। কিন্তু তুমি আমার দিল গিরিফতার করিয়াছ, এবারকার মত মাফ করিলাম। যাহা হউক, এখনও বল তুমি আমার হৃদয়েশ্বরী হইবে কি না।’
৩৪