গুরুবিদায়
উদয় বলিল——‘বউ আজ ওকে একছড়া গাঁদাফুলের মালা খাইয়েছে, তাইতে বোধ হয়।’
খল্বিদং ভ্রূকুটি করিয়া বলিলেন ‘ও-সব আমি শুনতে চাই না। এ বাড়িতে দুজনের স্থান নেই, হয় আমি নয় ঐ ব্যাটা।’
বংশলোচন দুরুদুরু বক্ষে পত্নীর দিকে চাহিয়া বলিলেন ‘কি বল? ছাগলটাকে তা হ’লে বিদেয় করা যাক?’
মানিনী সবেগে ঘাড় নাড়িয়া বলিলেন- ‘বাপরে, সে আমি পারব না।’ এই কথা বলিয়াই তিনি সটান দোতলায় গিয়া হাঁপাইতে হাঁপাইতে বংশলোচনের এক জোড়া ছেঁড়া মোজা মেরামত করিতে লাগিয়া গেলেন।
খম্বিদং বলিলেন ‘তা হ’লে আমিই বিদায় হই।’
চাটুজ্যে মহাশয় স্বামীজীর পিঠে হাত বুলাইয়া বলিলেন —‘যা বলেছ দাদা। এই নির্বান্ধব পুরে দুশমনের হাতে কেন প্রাণটা খোয়াবে, ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে যাও, বেঁচে থাকলে অনেক শিষ্য জুটবে। এস, আমি একটা ট্যাক্সি ডেকে দিচ্ছি।’
বংশলোচন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলিয়া ভাবিতে লাগিলেন —স্ত্রীচরিত্র কি অদ্ভুত জিনিস।
১৩৩৭
৫৩