আর তাহার স্মরণ ছিল না। দেহ অপেক্ষাকৃত সুস্থ, মনও শান্ত, প্রসন্ন ছিল।
শিবচরণ জিজ্ঞাসা করিল, কেমন আছ বড়বৌ?
লক্ষ্মী উঠিয়া বসিয়া কহিল, ভাল আছি।
শিবচরণ কহিল, সকালের ব্যাপার জান ত? বাছাধনকে ডাকিয়ে এনে সক্কলের সাম্নে এম্নি কড়কে দিয়েছি যে, জন্মে ভুল্বে না। আমি বেলপুরের শিবচরণ! হাঁ!
হরিলক্ষ্মী ভীত হইয়া কহিল, কাকে গো?
শিবচরণ কহিল, বিপ্নেকে। ডেকে বলে দিলাম, তোমার পরিবার আমার পরিবারের কাছে জাঁক করে তাকে অপমান ক’রে যায়, এত বড় আস্পর্দ্ধা! পাজী, নচ্ছার, ছোটলোকের মেয়ে! তার ন্যাড়া মাথায় ঘোল ঢেলে গাধায় চড়িয়ে গাঁয়ের বার ক’রে দিতে পারি জানিস্?
হরিলক্ষ্মীর রোগক্লিষ্ট মুখ একেবারে ফ্যাঁকাশে হইয়া গেল—বল কি গো?
শিবচরণ নিজের বুকে তাল ঠুকিয়া সদর্পে বলিতে লাগিল, এ গাঁয়ে জজ বল, ম্যাজিষ্ট্রেট বল, আর দারোগা পুলিস বল, সব এই শর্ম্মা! এই শর্ম্মা! মরণ-কাঠি, জীয়ন-কাঠি এই হাতে।