পাতা:হাস্যকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পেটে ও পিঠে

 বনমালী। (সরোদনে চীৎকারপূর্বক) না স্না স্না।

 তিনকড়ি। (শেষ সন্দেশটি নিঃশেষ করিয়া) তা হবে। তোমার তাহলে সয় না দেখছি। যার যেমন ধাত। তবে থাক্, তবে আর কাজ নেই। তবে এই স্থির হল কারো বা পেটে সমস্তই সয়, কারো বা পিঠে কিছুই সয় না। যেমন আমি আর তুমি।

সহসা বনমালীর পিতার প্রবেশ

 পিতা। কী রে ভুতু, কাঁদছিস কেন?

পিতাকে দেখিয়া বনমালীর দ্বিগুণ ক্রন্দন

 তিনকড়ি। (বনমালীর পৃষ্ঠে হাত বুলাইয়া অতি কোমল স্বরে) বাবা জিগ্‌গেস করছেন, কথার উত্তর দাও।

 বনমালী। (সরোদনে) আমাকে মেরেছে।

 তিনকড়ি। আজ্ঞে, পাড়ার একটা ডানপিটে ছেলে খামকা মেরে গেল, বেচারার কোনো দোষ নেই― সন্দেশগুলি খেয়ে ভুতুবাবু ঠোঙাটি নিয়ে খেলা করছিল—

 পিতা। (সরোষে) ভুতু, কে মেরেছে রে?

 বনমালী। (তিনকড়িকে দেখাইয়া) ও মেরেছে।

 তিনকড়ি। আজ্ঞে হাঁ, আমি তাকে খুব মেরেছি বটে। কার না রাগ হয় বলুন দেখি। ছেলেমানুষ খেলা করছে― খামকা ওকে মেরে ওর ঠোঙাটা কেড়ে নেও কেন বাপু? আপনি থাকলে আপনিও তাকে মারতেন।

 পিতা। আমি থাকলে তার দুখানা হাড় একত্তর রাখতেম না। যত সব ডানপিটে ছেলে এ-পাড়ায় জুটেছে।

 বনমালী। বাবা, ও আমার সন্দেশ―