পাতা:হাস্যকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



চিন্তাশীল

প্রথম দৃশ্য

চিস্তাশীল নরহরি চিন্তায় নিমগ্ন। ভাত শুকাইতেছে
মা মাছি তাড়াইতেছেন

 মা। অত ভেবো না মাথার ব্যামো হবে বাছা।

 নরহরি। আচ্ছা মা, ‘বাছা’ শব্দের ধাতু কী বলো দেখি!

 মা। কী জানি বাপু!

 নরহরি। ‘বংস’। আজ তুমি বলছ ‘বাছা’— দু-হাজার বৎসর আগে বলত ‘বৎস’– এই কথাটা একবার ভালো করে ভেবে দেখো দেখি মা! কথাটা বড়ো সামান্য নয়। এ কথা যতই ভাববে ততই ভাবনার শেষ হবে না।

পুনরায় চিন্তায় মগ্ন

 মা। যে ভাবনা শেষ হয় না এমন ভাবনার দরকার কী, বাপ। ভাবনা তো তোর চিরকাল থাকবে, ভাত যে শুকোয়। লক্ষ্মী আমার, এক বার ওঠ্।

 নরহরি। (চমকিয়া) কী বললে মা? লক্ষ্মী? কী আশ্চর্য! এক কালে লক্ষ্মী বলতে দেবী-বিশেষকে বোঝাত। পরে লক্ষ্মীর গুণ অনুসারে সুশীলা স্ত্রীলোককে লক্ষ্মী বলত, কালক্রমে দেখো পুরুষের প্রতিও লক্ষ্মী শব্দের প্রয়োগ হচ্ছে। একবার ভেবে দেখো মা, আস্তে আস্তে ভাষার কেমন পরিবর্তন হয়! ভাবলে আশ্চর্য হতে হবে।

ভাবনায় দ্বিতীয় ডুব

 মা। আমার আর কি কোনো ভাবনা নেই, নরু? আচ্ছা তুই তো

২৩