পাতা:হাস্যকৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
খ্যাতির বিড়ম্বনা

 কাঙালি। আর্যাবর্তে ভরত মুনি হচ্ছেন গানের প্রথম—

 দুকড়ি। ভরত মুনির নামে যদি কোনো মকদ্দমা থাকে তো বলে, নইলে বক্তৃতা বন্ধ করো।

 কাঙালি। অনেক কথা বলবার ছিল—

 দুকড়ি। কিন্তু অনেক কথা শোনবার সময় নেই।

 কাঙালি। তবে সংক্ষেপে বলি। এই মহানগরীতে “গানোন্নতিবিধায়িনী” নাম্নী এক সভা স্থাপন করা গেছে, তাতে মহাশয়কে—

 দুকড়ি। বক্তৃতা দিতে হবে?

 কাঙালি। আজ্ঞে না।

 দুকড়ি। সভাপতি হতে হবে?

 কাঙালি। আজ্ঞে না।

 দুকড়ি। তবে কী করতে হবে বলো। গান গাওয়া এবং গান শোনা, এ-দুটোর কোনোটা আমার দ্বারা কখনো হয় নি এবং হবেও না— তা আমি আগে থাকতে বলে রাখছি।

 কাঙালি। মশায়কে ও-দুটোর কোনোটাই করতে হবে না।

খাতা অগ্রসর করিয়া

 কেবল কিঞ্চিৎ চাঁদা—

 দুকডি। (ধড়ফড় করিয়া উঠিয়া) চাঁদা! আ সর্বনাশ! তুমি তো সহজ লোক নও হে— ভালোমানুষটির মতো মুখ কাচুমাচু করে এসেছ— আমি বলি বুঝি কি মকদ্দমার ফেসাদে পড়েছ। তোমার চাঁদার খাতা নিয়ে বেরোও এখনি— নইলে ট্রেসপাসের দাবি নিয়ে পুলিস-কেস আনব।

 কাঙালি। চাইলুম চাঁদা পেলুম অর্ধচন্দ্র! (স্বগত) কিন্তু তোমাকে জবদ করব।

৩৭