পাতা:হাস্য-কৌতুক - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রােগের চিকিৎসা
১৭

 পিতা।  (সরােষে) পা ভাঙলি কিরে!

 হারা।  (সভয়ে) আজ্ঞে, আমি ইচ্ছে করে ভাঙিনি!

 পিতা।  তা ত জানি! কি ক’রে ভাঙল সেইটে বল্‌না।

 হারা।  জানিনে বাবা!

 পিতা।  তাের পা ভাঙল তুই জানিস্‌নে ত কি ও পাড়ার গােব্‌রা তেলি জানে!

 হারা।  কখন ভাঙল টের পাইনি বাবা!

 পিতা।  বটে! এই লাঠির বাড়ি তাের মাথাটা ভাঙলে তবে টের পাবি বুঝি!

 হারা।  (তাড়াতাড়ি হাত দিয়া মাথা আড়াল করিয়া) না বাবা! ঐ মাথাটা বাঁচাতে গিয়েই পা-টা ভেঙেছি।

 পিতা।  বুঝেছি। তবে বুঝি সেদিনকার মত ডাক্তার সাহেবের বাড়িতে হাঁসের ডিম চুরি করতে, গিয়েছিলি তাই তারা মেরে তাের পা ভেঙে দিয়েছে!

 হারা।  (চোখ রগ্‌ড়াতে রগ্‌ড়াইতে) হাঁ বাবা! আমার কোন দোষ নেই। পা আমি নিজে ভাঙিনি, পা তারাই ভেঙে দিয়েছে।

 পিতা।  লক্ষ্মীছাড়া তাের কি কিছুতেই চৈতন্য হবে না।

 হারা।  চৈতন্য কাকে বলে বাবা?

 পিতা।  চৈতন্য কাকে বলে দেখ্‌বি? (পিঠে কিল মারিয়া) চৈতন্য একে বলে।

 হারা।  এ ত আমার রােজই হয়।

 পিতা।  আমি দেখছি তুমি জেলে গিয়েই মরবে!

 হারা।  না বাবা রােজ চৈতন্য পেলে ঘরে মরব।

 পিতা।  নাঃ, তােকে আর পেরে উঠলেম না!

2