পাতা:১৫১৩ সাল.pdf/৯৮

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৫১৩ সাল।
৮১

তেছে। আর নিস্তার নাই। এই সময় ভগবানকে স্মরণ করুন। আমার কোন দোষ নাই। আমি জ্ঞানতঃ কোন ত্রুটি করি নাই। বিদায়! বিদায়!! ওঃ! ওঃ!!” এইরূপ চীৎকার করিয়া উন্মাদের ন্যায় তিনি কেবিন হইতে বহির্গত হইলেন এবং নিমিষের মধ্যে সমুদ্রে ঝম্প প্রদান করিলেন।

 তাঁহার চীৎকার শুনিয়া কতকগুলি খালাসী দৌড়াইয়া আসিল। আমরা তাহাদিগকে তৎক্ষণাৎ লাইফ্‌বেল্ট পরিতে বলিয়া বিপদবার্ত্তাজ্ঞাপক ঘণ্টা বাজাইতে লাগিলাম। উহা শুনিবামাত্র, যে যেখানে ছিল ছুটিয়া আমাদিগের নিকট উপস্থিত হইল। আমরা তাহাদিগকেও ঐরূপ আদেশ দিয়া লাইফ্‌বেল্ট পরিয়া ডেকের উপর স্থিরচিত্তে দণ্ডায়মান হইয়া শেষ মুহূর্ত্তের জন্য অপেক্ষা করিতে লাগিলাম।

 সহসা কি এক বস্তু আমাদিগের জাহাজকে আঘাত করিল। তাহাতেই উহার একপ্রান্ত হইতে অপর প্রান্ত পর্য্যন্ত কাঁপিয়া উঠিল। পর মুহূর্ত্তে একজন খালাসী চীৎকার করিয়া বলিল যে, উহার তলদেশ বিদ্ধ হইয়া হু হু করিয়া জল উঠিতেছে। পাঁচ মিনিটের মধ্যেই আমাদের সাধের “সোনার ভারত” অতল জলে নিমজ্জিত হইল।

 আমি একবার চারিদিকে চাহিয়া দেখিলাম। আমার নিকটে আট দশ জন লোক ভাসিতেছে, তাহাদিগের মধ্যে বন্ধুবর একজন। বুঝিলাম আর সকলে “সোনার ভারতে”র সহিত ডুবিয়াছে। তখন এক দীর্ঘ নিশ্বাস আপনা আপনি বহির্গত হইল। অজ্ঞাতসারে কয়েক ফোঁটা অশ্রুজল গণ্ডস্থল বহিয়া পড়িল। “হায় ভগবান্, এই কি তোমার মনে ছিল?” এই কথা মনের আবেগে চীৎকার করিয়া বলিয়া তাঁহাকে প্রণাম করিলাম।

 তাঁহার কৃপায় আমাদিগকে অধিকক্ষণ জলে ভাসিতে হইল না। ঘণ্টা খানেকের মধ্যে দেখি একখানি বৃহৎ পোত আমাদিগের দিকেই