পাতা:Intermediate Bengali Selections.pdf/১৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

YSr. কপালকুণ্ডলা যাইতেছে। অলকাবলির প্রাচুর্য্যে মুখমণ্ডল সম্পূর্ণরূপে প্রকাশ হইতেছিল না-তথাপি মেঘবিচ্ছেদনিঃসৃত চন্দ্ররশ্মির ন্যায় প্রতীত হইতেছিল। বিশাল লোচনে কটাক্ষ অতি স্থির, অতি স্নিগ্ধ, অতি গম্ভীর অথচ জ্যোতির্ম্ময়; সে কটাক্ষ, এই সাগরহাদয়ে ক্রীড়াশীল চন্দ্রকিরণরেখার ন্যায় স্মিগ্ধোজ্জল দীপ্তি পাইতেছিল। কেশরাশিতে স্কন্ধাদেশ ও বাহুযুগল আচ্ছন্ন করিয়াছিল। স্কন্ধাদেশ একেবারে অদৃশ্য; বাহুযুগলে বিমল শ্রী কিছু কিছু দেখা যাইতেছিল। রমণীদেহ একেবারে নিরাভরণ। মূর্ত্তিমধ্যে যে একটি মোহিনী শক্তি ছিল, তাহ বর্ণিতে পারা যায় না। অৰ্দ্ধচন্দ্র— নিঃস্থত কৌমুদীবর্ণ; ঘনকৃষ্ণ চিকুরজাল; পরস্পরের সান্নিধ্যে কি বর্ণ, কি চিকুর, উভয়েরই যে শ্রী বিকসিত হইতেছিল, তাহা সেই গম্ভীরনাদী সাগরকুলে সন্ধ্যালোকে না দেখিলে, তাহার মোহিনী শক্তি অনুভূত হয় না। নবকুমার অকস্মাৎ এইরূপ বনমধ্যে দৈবী মূর্ত্তি দেখিয়া নিস্পন্দ্যশরীর হইয়া দাড়াইলেন। তাহার বাকশক্তি রহিত হইল,- স্তব্ধ হইয়া চাহিয়া রহিলেন। রমণীও সম্পন্দহীন, অনিমিষলোচনে বিশাল চক্ষুর স্থিরদৃষ্টি নবকুমারের মুখে ন্যস্ত করিয়া রাখিলেন। উভয়মধ্যে প্রভেদ এই যে, নবকুমারের দৃষ্টি চমকিত লোকের দৃষ্টির ন্যায়, রমণীর দৃষ্টিতে সে লক্ষণ কিছুমাত্র নাই, কিন্তু তাহাতে বিশেষ উদ্বেগ প্রকাশ হইতেছিল। অনন্ত সমুদ্রের জনহীন তীরে, এইরূপে বহুক্ষণ দুই চাহিয়া রহিলেন। অনেকক্ষণ পরে তরুণীর কণ্ঠস্বর শুনা গেল। তিনি অতি মৃদুস্বরে কহিলেন, “পথিক, তুমি পথ शाब्राझेब्रांइ?”