পাতা:Intermediate Bengali Selections.pdf/১৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঐহিক অমরত পৃথিবীর এক দৃশ্য সূতিকাগৃহ, আর এক দৃশ্য শ্মশান! পর্ব্বতে উচ্চতা আছে, নদীর তরঙ্গে শোভা আছে, নদী প্রবাহসম্মিলিত সমুদ্রের বক্ষে অনির্ব্বচনীয় বিস্তার আছে —ফুলে মধু, ফুলভারাবনত লতা দেহে মাধুরী এবং লতার আকণ্ঠবিসৰ্পি-বেষ্টনবদ্ধ অচল-পাদপে গরিমার এক অপূর্ব্ব বিলাসভঙ্গি আছে। কবি অথবা ভাবুকের চক্ষু লইয়া দেখিতে হইলে, দেখিবার এইরূপ কত বস্তুই যে চারিদিকে পড়িয়া রহিয়াছে, কে তাহার গণনা করিবে? আবার মানুষী শক্তির জয়স্তম্ভ দেখিতে হইলে, নগর, উপনগর, দুৰ্গ, সেতু, জল-যান, স্থল-যান, ব্যোমি-যান, আগ্রার তাজ এবং মিসরের পিরামিড প্রভূতি কতই কি না মনুষ্যচক্ষুর সন্নিহিত হইতেছে! কিন্তু দৃশ্য পদার্থের গুঢ় গৌরব ভাবিয়া দেখিলে, তথাপি ইহাই পুনঃ পুনঃ বলিতে ইচ্ছা হয় যে, পৃথিবীর এক দৃশ্য সুতিকাগৃহ, আর এক দৃশ্য শ্মশান। এই দুইয়ের তুলনা নাই। জলে যেমন জলবুহুদের উদয় ও বিলয় হইতেছে, বসুন্ধরার বক্ষঃস্থলরূপ বিশাল নিকেতনে সুতিকা ও শ্মশানের প্রকোষ্ঠীদ্বয়েও, প্রতি মুহূর্ত্তে, প্রতি নিমিষে, সেইরূপ অসংখ্য প্রাণীর উদয় ও বিলয় অথবা আবির্ভাব ও তিরোভাব ঘটতেছে। যে ছিল না, সে আসিতেছে। যে ছিল, সে চলিয়া যাইতেছে। যাহাকে দেখি নাই, সে নয়নপথের নূতন পথিক হইয়া হাসিতেছে, নাচিতেছে এবং ভালবাসার বাহু প্রসারিয়া বুকে আসিতে যত্ন পাইতেছে। যাহাকে দেখিতাম, জানিতাম, ভালবাসিতাম, সে যেন নয়নপথের অন্তরালে অনন্ত ও অতলস্পর্শ অন্ধকার-সমুদ্রে বিলীন হইতেছে।