পাতা:Intermediate Bengali Selections.pdf/২৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর RR কৃপায় মানুষের দুঃখের ত আর অভাব নাই, তবে কেন মানুষ আবার সাধ করিয়া আপন দুঃখের বোঝায়। ভার চাপায়। ইহা তিনি বুঝিতেন না এবং ইহা তিনি সহিতেনও না। বালবিধবার দুঃখ দর্শনে তঁাহার হৃদয় বিগলিত হইল এবং সেই বিগলিত হৃদয়ের প্রস্রবণ হইতে করুণামন্দাকিনীর ধারা বহিল! সুর নদী যখন ভূমিপৃষ্ঠে অবতরণ করে, তখন কার সাধ্য যে, সে প্রবাহ রোধ করে। বিদ্যাসাগরের করুণার প্রবাহ যখন ছুটিয়াছিল, তখন কাহারও সাধ্য হয় নাই যে, সেই গতির পথে দাড়াইতে পারে। দেশাচারের দারুণ বাধা তাহা রোধ করিতে পারে নাই। সমাজের ভ্রকুটীভঙ্গিতে তাহার স্রোত বিপরীত মুখে ফিরে নাই। এইখানে বিদ্যাসাগরের কঠোরতার পরিচয়। সরল, উন্নত, জীবন্ত মনুষ্যত্ব লইয়া তিনি শেষ পর্য্যন্ত স্থিরভাবে দণ্ডায়মান ছিলেন; কাহার ও সাধ্য হয় নাই যে, সেই মেরুদণ্ড নমিত করে। কিন্তু এই সমাজসংস্কার-ব্যাপারেও বিন্যাসাগরের একটু অসাধারণত্ব দেখা যায়। প্রথমতঃ বিধবাবিবাহে হস্তক্ষেপের পূর্বে তিনি পিতামাতার অনুমতি চাহিয়াছিলেন। দ্বিতীয়তঃ বিধবাবিবাহের শাস্ত্রীয়তা প্রতিপাদনে তিনি প্রয়াসী হইয়াছিলেন। এই দুইটাই আমাদের পক্ষে চিন্তনীয় বিষয়। সম্প্রতি আমরা নীতিশাস্ত্র হইতে মিরাল কারেজ’ নামক একটা সামগ্রী প্রাপ্ত হইয়াছি। কর্ত্তব্য বুদ্ধির প্ররোচনায় স্বার্থবিসর্জন ব্যাপারটা ষে কোন দেশের একচেটিয়া নহে, তাহ সদা সর্ব্বদা আমরা ভুলিয়া যাই। আমাদের প্রাচীন ভারতভূমিতেও এই কর্ত্তব্যের জন্য স্বার্থবিসর্জনের উদাহরণ ভুরি পরিমাণে পাওয়া যাইতে পারে।