পাতা:Intermediate Bengali Selections.pdf/৩১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাব্যের উপেক্ষিতা SSVO জিজ্ঞাসা করিলেন, “বৎস ৷ ইনি কে?” লক্ষ্মণ লজ্জিত-হাস্তে মনে মনে কহিলেন, ওহো উর্ম্মিলার কথা আর্য্যা জিজ্ঞাসা করিতেছেন! এই বলিয়া তৎক্ষণাৎ লজ্জায় সে ছবি ঢাকিয়া ফেলিলেন; তাহার পর রামচন্দ্রের এত বিচিত্র সুখদুঃখচিত্রশ্রেণীর মধ্যে আর একটিবারও কাহারও কৌতুহল-অঙ্গুলী এই ছবিটির উপরে পড়িল না। সে ত কেবল বধু উর্ম্মিলা মাত্র। তরুণ শুলভালে যেদিন প্রথম সিন্দুরবিন্দুটি পরিয়াছিলেন, উর্ম্মিলা চিরদিনই সেইদিনকার নববধূ। কিন্তু রামের অভিষেকমঙ্গলাচরণের আয়োজনে যেদিন অন্তঃপুরিকাগণ ব্যাপৃত ছিল সেদিন এই বধুটিও কি সীমান্তের উপর অৰ্দ্ধাবগুণ্ঠন টানিয়া রঘুকুললক্ষ্মীদের সহিত প্রসন্নকল্যাণমুখে মঙ্গল্য রচনায় নিরতিশয় ব্যস্ত ছিল না? আর যেদিন অযোধ্যা অন্ধকার করিয়া দুই কিশোর রাজভ্রাতা সীতাদেবীকে সঙ্গে লইয়া তপস্বিবেশে পথে বাহির হইলেন সেদিন বধু উর্ম্মিলা রাজহর্ম্ম্যের কোন নিভৃত শয়নকক্ষে ধূলিশয্যায় বৃন্তচু্যত মুকুলটির মত লুষ্ঠিত হইয়া পড়িয়াছিল তাহা কি কেহ জানে? সেদিনকার সেই বিশ্বব্যাপী বিলাপের মধ্যে এই বিদীর্য্যমাণ ক্ষুদ্র কোমল হৃদয়ের অসহ শোক কে দেখিয়াছিল? যে ঋষিকবি ক্রৌঞ্চবিরাহিণীর বৈধব্যদুঃখ মুহুর্তের জন্য সহ করিতে পারেন নাই, তিনিও একবার চাহিয়া দেখিলেন না। লক্ষ্মণ রামের জন্য সর্বপ্রকারে আত্মবিলোপসাধন করিয়াছিলেন, -সে গৌরব ভারতবর্ষের গৃহে গৃহে আজও ঘোষিত হইতেছে, কিন্তু সীতার জন্য উর্ম্মিলার আত্মবিলোপ কেবল সংসারে নহে, কাব্যেও। লক্ষ্মণ তাহার দেবতা যুগলের জন্য কেবল নিজেকে উৎসর্গ করিয়াছিলেন, উর্ম্মিলা নিজের চেয়ে অধিক নিজের স্বামীকে দান