পাতা:Vanga Sahitya Parichaya Part 1.djvu/১০৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৪৮
বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয়।

লক্ষ্মী দিয়াছেন বর ঘুচেছে পত্রিকা-ঘর
মনোহর হয়েছে আগার॥
দ্বিজের বনিতা যিনি ভূষণে ভূষিতা তিনি
দাস দাসী হয়েছে বিস্তর।
না দেখিয়া নিজ-ভর্ত্তা দুঃখে ব্রাহ্মণী উন্মত্তা
কোথা কর্ত্তা বলে নিরন্তর॥
হেন কালে দ্বিজবর না দেখিয়া নিজ-ঘর
প্রতিবাসিগণে জিজ্ঞাসয়।
মম গৃহ কি হইল ব্রাহ্মণী কোথায় গেল
কে লইল আমার বিষয়॥
রাধাকৃষ্ণ-রাঙ্গা-পায় বিক্রীত করিয়া কায়
মনে ভেবে যুগল-চরণ।
সেই রাধাকৃষ্ণ দাস এই দ্বারকা বিলাস
পদ্যমতে করিল রচন॥

ব্রাহ্মণীর সহিত ব্রাহ্মণের পরিচয়।

 ব্রাহ্মণ আপন ভবন অন্বেষণ না পাইয়া অত্যন্ত অশান্ত-ভ্রান্তযুক্ত হইয়া নগর-পথে ভ্রমণ করিবাতে ভগবদিচ্ছায় ঐ ব্রাহ্মণের ব্রাহ্মণী বসন ভূষণ পরিধান পূর্ব্বক দাসীগণ সমভিব্যাহারে অট্টালিকার উপরিভাগে আরোহণ পূর্ব্বক স্বপতি অভাবে ঐ সতী অতি সকাতরা হইয়া পতির জন্যে দুঃখান্তঃকরণে রাজপথ বিলক্ষণরূপে নিরীক্ষণ করিতেছেন। এমত কালে আপন ভর্ত্তা ব্রাহ্মণকে সন্দর্শন করিয়া অত্যন্ত হর্ষ পূর্ব্বক জনৈক দাসীকে কহিলেন—হে দাসী ঐ ব্রাহ্মণকে আমার নিকটে ডাকিয়া আন। যে আজ্ঞা বলিয়া দাসী ত্বরিত গমনে দ্বিজ-সন্নিধানে আগমন পূর্ব্বক বিনয় বাক্যের দ্বারায় ব্রাহ্মণের প্রতি কহিতেছেন—হে ঠাকুর মহাশয় আমাদিগের কর্ত্রী ঠাকুরাণী আপনাকে স্মরণ করিয়াছেন। ব্রাহ্মণ কহিল হে দাসী আমি ভিক্ষুক দরিদ্র নির্ধন ব্রাহ্মণ আমাকে তোমার ঠাকুরাণীর কি প্রয়োজন। দেখিতে পাই তুমি ভাগ্যবন্ত ব্যক্তির বাটীতে থাক এবং ভাগ্যবতী নারীর প্রেরিতা আমি কি ভরসায় নারীর কথায় যাই, তথাপি দাসী সে সমস্ত কথা অন্যথা করিয়া ব্রাহ্মণের করগ্রহণ পূর্ব্বক বাটীর মধ্যে লইয়া গেল। ব্রাহ্মণী ব্রাহ্মণকে অবলোকন করিয়া হাস্য বদনে পতির চরণে শিরঃ সংস্থাপন করিবাতে ব্রাহ্মণের আশীর্ব্বাদ—এস বাছা পুত্ত্রবতী ভব। ব্রাহ্মণী ব্রাহ্মণের কুরব শ্রবণে লজ্জিতা হইয়া বলে সে আবার কি কথা, চিনিতে বুঝি পার না,