পাতা:Vanga Sahitya Parichaya Part 1.djvu/৪৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩১০
বঙ্গ-সাহিত্য-পরিচয়।

হরিরাম।

 দ্বিজ হরিরাম-কৃত চণ্ডীমঙ্গলের যে পুথি হইতে নিম্নের অংশগুলি উদ্ধৃত হইল, তাহা শ্রীযুক্ত নগেন্দ্রনাথ বসু প্রাচ্যবিদ্যা-মহার্ণব মহাশয়ের পুস্তকাগারে আছে। তাহার নকলের তারিখ ১০৮০ বাং সন। আমাদের বিশ্বাস দ্বিজ হরিরাম, কবিকঙ্কণের পূর্ব্ববর্তী কবি। কবিকঙ্কণের কবিত্ব যে সকল উপাদানে পুষ্ট হইয়াছিল, সেই সকল উপাদান অপেক্ষাকৃত অমার্জ্জিতভাবে মাধবাচার্য্য ও হরিরামের কাব্যে দৃষ্ট হয়।

 গো-সাপ-রূপিণী চণ্ডী পরমা রূপবতী রমণীর বেশ পরিগ্রহ করিয়া ফুল্লরাকে দর্শন দিয়া তাহার গৃহে থাকিবার সঙ্কল্প জ্ঞাপন করিলে সন্দেহ-বাণবিদ্ধা ফুল্লরা স্বীয় স্বামীকে ভর্ৎসনা করিতেছেন।

ব্যাধ-ভবনে চণ্ডী।

চণ্ডিকার এত বাণী শুনি ব্যাধ-নিতম্বিনী
যায় রামা আকুল কুন্তলে।
বিগলিত হয় বাস ঘন বহে নিশ্বাস
পতির সমীপে রামা চলে॥
গোলা হাটে প্রবেশে ফুল্লরা।
ক্রোধে কম্পবান কায় ঊর্দ্ধমুখ করি যায়
যথা বীর করয়ে পসরা॥
প্রণমিঞা মহাবীরে ফুল্লরা কাকুতি করে
শুন নাথ মোর নিবেদন।
দ্বাদশ বৎসর কালে আইলাঙ তোমার ঘরে
নাঞি কভু দেখিএ এমন॥
শুন হে পরাণনাথ মাংস বেচ্যা থাই ভাত
রাত্রি দিবা উদরের চিন্তা।
নহ কিছু ধনবান্‌ দেখি না গবালি[১] খান
হরিয়া আনিলে কার কান্তা॥
সীতা হরে দশশির মাল্য[২] তারে রঘুবীর
শচী হর‍্যে ছিল শুম্ভরায়।
পৃথিবী না সহে ভার বংশনাশ হৈল তার
হেন বুঝি মরিবার উপায়॥

  1. গবালি=গোয়ালি=গোয়াল ঘর।
  2. মারিল