পাতা:গল্পগুচ্ছ (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২৬: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

JoyBot (আলোচনা | অবদান)
OCRed
(কোনও পার্থক্য নেই)

০২:৫০, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মেঘ ও রৌদ্র *○○ ভোরবেলা হইতে বাহিরে বসিয়া গা খালিয়া তামাক খাইতেছিলেন। গিরিকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “কোথায় যাচ্ছিস ।” গিরি কহিল, “শশিদাদার বাড়ি।” হরকুমার ধমক দিয়া কহিলেন, “শশিদাদার বাড়ি যেতে হবে না, ঘরে যা !" এই বলিয়া আসন্নশবশারগহবাস বয়ঃপ্রাপ্ত কন্যার লজ্জার অভাব সম্বন্ধে বিস্তর তিরস্কার করিলেন। সেই দিন হইতে তাহার বাহিরে আসা বন্ধ হইয়াছে । এবার আর তাহার অভিমান ভঙ্গ করিবার অবসর জটিল না। আমসত্ত্ব কেয়াখয়ের এবং জারক নেব ভাণ্ডারের যথাস্থানে ফিরিয়া গেল। বষ্টি পড়িতে লাগিল, বকুল কলে ঝরিতে লাগিল, গাছ ভরিয়া পেয়ারা পাকিয়া উঠিল এবং শাখাসখলিত পক্ষীচষ্টাক্ষত সপেক্ক কালোজামে তর-তল প্রতিদিন সমাচ্ছন্ন হইতে লাগিল। হায়, সেই ছিন্নপ্রায় চারপাঠখানিও আর নাই । সপ্তম পরিচ্ছেদ গ্রামে গিরিবালার বিবাহে যেদিন সানাই বাজিতেছিল সেদিন অনিমন্ত্রিত শশিভূষণ নৌকা করিয়া কলিকাতা অভিমুখে চলিতেছিলেন। মকদ্দমা উঠাইয়া লওয়া অবধি হরকুমার শশীকে বিষচক্ষে দেখিতেন। কারণ, তিনি মনে মনে সিথর করিয়াছিলেন, শশী তাঁহাকে নিশ্চয় ঘণা করিতেছে। শশীর মখে চোখে ব্যবহারে তিনি তাহার সহস্ৰ কালপনিক নিদশন দেখিতে লাগিলেন । গ্রামের সকল লোকই তাঁহার অপমানবত্তান্ত ক্রমশ বিস্মত হইতেছে, কেবল শশিভূষণ একাকী সেই দুঃসমতি জাগাইয়া রাখিয়াছে মনে করিয়া তিনি তাহাকে দই চক্ষে দেখিতে পারিতেন না। তাহার সহিত সাক্ষাৎ হইবামাত্র তাঁহার অন্তঃকরণের মধ্যে একটুখানি সলজ সংকোচ এবং সেই সঙ্গে প্রবল আক্লোশের সঞ্চার হইত। শশীকে গ্রামছাড়া করিতে হইবে বলিয়া হরকুমার প্রতিজ্ঞা করিয়া বসিলেন। শশিভূষণের মতো লোককে গ্রামছাড়া করা কাজটা তেমন দরহ নহে। নায়েব মহাশয়ের অভিপ্রায় অনতিবিলম্বে সফল হইল। একদিন সকালবেলা পুস্তকের বোঝা এবং গুটিদাইচার টিনের বাক্স সঙ্গে লইয়া শশী নৌকায় চড়িলেন। গ্রামের সহিত তাঁহার যে একটি সখের বন্ধন ছিল সেও আজ সমারোহ সহকারে ছিন্ন হইতেছে। সকোমল বন্ধনটি যে কত দৃঢ়ভাবে তাঁহার হদয়কে বেস্টন করিয়া ধরিয়াছিল তাহা তিনি পাবে সম্পণেরপে জানিতে পারেন নাই। আজ যখন নৌকা ছাড়িয়া দিল, গ্রামের বক্ষচড়াগুলি অপস্ট এবং উৎসবের বাদ্যধৰনি ক্ষীণতর হইয়া আসিল, তখন সহসা আশ্রবোপে হাদয় সফীত হইয়া উঠিয়া তাঁহার কণ্ঠ রোধ করিয়া ধরিল, রক্সোচ্ছাসবেগে কপালের শিরাগলা টন টন করিতে লাগিল এবং জগৎসংসারের সমস্ত দশ্য ছায়ানিমিত মায়ামরীচিকার মতো অত্যন্ত অপস্ট প্রতিভাত হইল। প্রতিকল বাতাস অতিশয় বেগে বহিতেছিল, সেইজন্য স্রোত অনকেল হইলেও নৌকা ধীরে ধীরে অগ্রসর হইতেছিল। এমন সময় নদীর মধ্যে এক কাণ্ড ঘটিল যাহাতে শশিভূষণের যাত্রার ব্যাঘাত করিয়া দিল । স্টেশন ঘাট হইতে সদর মহকুমা পর্যন্ত একটি নতন স্টিমার লাইন সম্প্রতি খালিয়াছে। সেই স্টিমারটি সশব্দে পক্ষ সঞ্চালন করিয়া ঢেউ তুলিয়া উজানে আসিতেছিল। জাহাজে নতন লাইনের অপবয়স্ক ম্যানেজার-সাহেব এবং অল্পসংখ্যক যাত্রী ১৬