পাতা:রাজর্ষি-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/১০: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
‘এত রক্ত কেন!’ তিনি সহসা শিহরিয়া উঠিলেন।
রাজর্ষি -వ

*এত রক্ত কেন তিনি সহসা শিহরিয়া উঠিলেন
(বহুদিন ধরিয়া প্রতিবৎসর রক্তের স্রোত দেখিয়া আসিতেছেন,
বহুদিন ধরিয়া প্রতিবৎসর রক্তের স্রোত দেখিয়া আসিতেছেন, একটি ছোটো মেয়ের প্রশ্ন শুনিয়া তাঁহার মনে উদিত হইতে লাগিল, ‘এত রক্ত কেন!’ তিনি উত্তর দিতে ভুলিয়া গেলেন। অন্য মনে স্নান করিতে করিতে ঐ প্রশ্নই ভাবিতে লাগিলেন।

একটি ছোটো মেয়ের প্রশ্ন শুনিয়া তাহার মনে উদিত হইতে লাগিল "এত রক্ত কেন ) তিঁনি উত্তর দিতে ভুলিয়া গেলেন। অন্তমনে স্নান করিতে করিতে ঐ প্রশ্নই ভাবিতে লাগিলেন ।
হাসি জলে আঁচল ভিজাইয়া সিড়িতে বসিয়া ধীরে ধীরে রক্তের রেখা মুছিত্বে লাগিল, তাহার দেখাদেখি ছোটো হাতদুটি দিয়া তাতাও তাহাই করিতে লাগিল । হাসির আঁচলখানি রক্তে লাল হইয়া গেল । রাজার যখন স্নান হইয়া গেল তখন দুই ভাইবোনে মিলিয়া রক্তের দাগ মুছিয়া ফেলিয়াছে।
হাসি জলে আঁচল ভিজাইয়া সিঁড়িতে বসিয়া ধীরে ধীরে রক্তের রেখা মুছিতে লাগিল, তাহার দেখাদেখি ছোটো হাত দুটি দিয়া তাতাও তাহাই করিতে লাগিল। হাসির আঁচলখানি রক্তে লাল হইয়া গেল। রাজার যখন স্নান হইয়া গেল, তখন দুই ভাইবোনে মিলিয়া রক্তের দাগ মুছিয়া ফেলিয়াছে।

সেইদিন বাড়ি ফিরিয়া গিয়া হাসির জর হইল । তাত কাছে বসিয়া দুটি ছোটাে আঙলে দিদির মুদ্রিত চোখের পাতা খুলিয়া দিবার চেষ্টা করিয়া মাঝে মাঝে ডাকিতেছে, “দিদি ৷” দিদি আমনি সচকিতে একটুখানি জাগিয়া উঠিতেছে। “কী তাতা” বলিয়া তাহাকে কাছে টানিয়া লইতেছে, আবার তাহার চোখ চুলিয়া পড়িতেছে। তাত অনেকক্ষণ ধরিয়া চুপ করিয়া দিদির মুখের দিকে চাহিয়া থাকে, কোনো কথাই বলে না। অবশেষে অনেকক্ষণ পরে ধীরে ধীরে দিদির গলা জড়াইয়া দিদির মুখের কাছে মুখ দিয়া আস্তে আস্তে বলিল, “দিদি, তুই উঠবি নে ?” হাসি চমকিয়া জাগিয়া তাতাকে বুকে চাপিয়া কহিল, "কেন উঠব না, ধন !” কিন্তু দিদির উঠিবার আর সাধ্য নাই । তাতার ক্ষুদ্র হৃদয় যেন অত্যন্ত অন্ধকার হইয়া গেল ; তাতার সমস্ত দিনের খেলাধূলা আনন্দের আশা একেবারে স্নান হইয়া গেল। আকাশ অত্যন্ত অন্ধকার, ঘরের চালের উপর ক্রমাগতই বৃষ্টির শব্দ শুনা যাইতেছে, প্রাঙ্গণের তেঁতুল গাছ জলে ভিজিতেছে, পথে পথিক নাই। কেদারেশ্বর একজন বৈদ্যকে সঙ্গে করিয়া আনিল বৈদ্য নাড়ী টিপিয়া"
সেইদিন বাড়ি ফিরিয়া গিয়া হাসির জ্বর হইল। তাতা কাছে বসিয়া দুটি ছোটো আঙুলে দিদির মুদ্রিত চোখের পাতা খুলিয়া দিবার চেষ্টা করিয়া মাঝে মাঝে ডাকিতেছে, “দিদি!” দিদি অমনি সচকিতে একটুখানি জাগিয়া উঠিতেছে। “কী তাতা” বলিয়া তাতাকে কাছে টানিয়া লইতেছে; আবার তাহার চোখ ঢুলিয়া পড়িতেছে। তাতা অনেকক্ষণ ধরিয়া চুপ করিয়া দিদির মুখের দিকে চাহিয়া থাকে, কোনো কথাই বলে না। অবশেষে অনেকক্ষণ পরে ধীরে ধীরে দিদির গলা জড়াইয়া ধরিয়া দিদির মুখের কাছে মুখ দিয়া আস্তে আস্তে বলিল, “দিদি, তুই উঠবি নে?” হাসি চমকিয়া জাগিয়া তাতাকে বুকে চাপিয়া কহিল, “কেন উঠব না ধন!” কিন্তু দিদির উঠিবার আর সাধ্য নাই। তাতার ক্ষুদ্র হৃদয় যেন অত্যন্ত অন্ধকার হইয়া গেল। তাতার সমস্ত দিনের খেলাধুলা আনন্দের আশা একেবারে ম্লান হইয়া গেল। আকাশ অত্যন্ত অন্ধকার, ঘরের চালের উপর ক্রমাগতই বৃষ্টির শব্দ শুনা যাইতেছে, প্রাঙ্গণের তেঁতুল গাছ জলে ভিজিতেছে, পথে পথিক নাই। কেদারেশ্বর একজন বৈদ্যকে সঙ্গে করিয়া আনিল। বৈদ্য নাড়ি টিপিয়া