পাতা:রাজর্ষি-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৩৯: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
ইহাদের খরনখরাঘাতে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হইয়া, ইহাদের রক্তের তৃষা মিটাইয়া এখান হইতে অপসৃত হওয়াই ভালো।’প্রভাত-আকাশে গোবিন্দমাণিক্য যে প্রেমমুখচ্ছবি দেখিয়াছিলেন তাহা কোথায় মিলাইয়া গেল।
'Sbo . রাজর্ষি

খরনখরাঘাতে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হইয়া,ইহাদের রক্তের তৃষা মিটাইয়া, এখান হইতে অপস্থত হওয়াই ভালো।’ প্রভাত-আকাশে গোবিন্দমাণিক্য যে প্রেমচ্ছবি দেখিয়াছিলেন তাহ কোথায় মিলাইয়া গেল।
উঠিয়া দাড়াইয়া মহারাজ গম্ভীরস্বরে বলিলেন,"নক্ষত্র,অাজ অপরাহে গোমতীতীরের নির্জন অরণ্যে আমরা দুই জনে বেড়াইতে যাইব ।”
উঠিয়া দাঁড়াইয়া মহারাজ গম্ভীরস্বরে বলিলেন, “নক্ষত্র, আজ অপরাহ্ণে গোমতীতীরের নির্জন অরণ্যে আমরা দুইজনে বেড়াইতে যাইব।”

রাজার এই গভীর আদেশবাণীর বিরুদ্ধে নক্ষত্রের মুখে কথা সরিল না, কিন্তু সংশয়ে ও আশঙ্কায় তাহার মন আকুল হইয়া উঠিলু । তাহার মনে হইতে লাগিল, মহারাজ তক্ষণ নীরবে দুই চকু তাহারই মনের দিকে নিবিষ্ট করিয়া বসিয়া ছিলেন– সেখানে অন্ধকার-গর্তের মধ্যে যে ভাবনাগুলো কীটের মতো কিলবিল করিতেছিল সেগুলো যেন সহস। আলো দেখিয়া অস্থির হইয়া বাহির হইয়া পড়িয়াছে) ভয়ে ভয়ে নক্ষত্ররায় রাজার মুখের দিকে একবার চাহিলেন ; দেখিলেন, তাহার মুখে কেরল সুগভীর বিষগ্ন শাস্তির ভাব, সেখানে রোষের রেখামাত্র নাই । Gनवलन्त्र কঠিন নি দেখিয়া কেবল সুগভীর শোক
রাজার এই গম্ভীর আদেশবাণীর বিরুদ্ধে নক্ষত্রের মুখে কথা সরিল না, কিন্তু সংশয়ে ও আশঙ্কায় তাঁহার মন আকুল হইয়া উঠিল। তাঁহার মনে হইতে লাগিল, মহারাজ এতক্ষণ নীরবে দুই চক্ষু তাঁহারই মনের দিকে নিবিষ্ট করিয়া বসিয়াছিলেন– সেখানে অন্ধকার গর্তের মধ্যে যে ভাবনাগুলো কীটের মতো কিল্‌বিল্‌ করিতেছিল, সেগুলো যেন সহসা আলো দেখিয়া অস্থির হইয়া বাহির হইয়া পড়িয়াছে। ভয়ে ভয়ে নক্ষত্ররায় রাজার মুখের দিকে একবার চাহিলেন– দেখিলেন তাঁহার মুখে কেবল সুগভীর বিষণ্ন শান্তির ভাব, সেখানে রোষের রেখামাত্র নাই। মানবহৃদয়ের কঠিন নিষ্ঠুরতা দেখিয়া কেবল সুগভীর শোক তাঁহার হৃদয়ে বিরাজ করিতেছিল।
র্তাহাৰ হৃদয়ে বিরাজ করিতেছিল ।

বেলা পড়িয়া আসিল । তখনও মেঘ করিয়া আছে। নক্ষত্ররায়কে
সঙ্গে লইয়া মহারাজ পদব্রজে অরণ্যের দিকে চলিলেন। এখনও সন্ধ্যা হইতে বিলম্ব আছে, কিন্তু মেঘের অন্ধকারে সন্ধ্যা বলিয়া ভ্রম হইতেছে— কাকেরা অরণ্যের মধ্যে ফিরিয়া আসিয়া অৰিশ্ৰাম চীৎকার করিতেছে, কিন্তু দুই-একটা চিল এখনও আকাশে সাতার দিতেছে । দুই ভাই যখন নির্জন বনের মধ্যে প্রবেশ করিলেন তখন নক্ষত্ররায়ের গা ছমছম্ করিতে লাগিল। বড়ো বড়ো প্রাচীন গাছ জটলা করিয়া দাড়াইয়া আছে- তাহারা একটি কথা কহে না, কিন্তু স্থির হইয়া যেন কীটের পদশষ্ট্রকু পর্যন্তও শোনে ; তাহারা কেবল নিজের ছায়ার দিকে তলস্থিত অন্ধকারের দিকে অনিমেষ নেত্রে চাহিয়া থাকে। অরণ্যেঃ
বেলা পড়িয়া আসিল। তখনো মেঘ করিয়া আছে। নক্ষত্ররায়কে সঙ্গে লইয়া মহারাজ পদব্রজে অরণ্যের দিকে চলিলেন। এখনো সন্ধ্যা হইতে বিলম্ব আছে, কিন্তু মেঘের অন্ধকারে সন্ধ্যা বলিয়া ভ্রম হইতেছে– কাকেরা অরণ্যের মধ্যে ফিরিয়া আসিয়া অবিশ্রাম চীৎকার করিতেছে, কিন্তু দুই-একটা চিল এখনো আকাশে সাঁতার দিতেছে। দুই ভাই যখন নির্জন বনের মধ্যে প্রবেশ করিলেন, তখন নক্ষত্ররায়ের গা ছম্‌ছম্‌ করিতে লাগিল। বড়ো বড়ো প্রাচীন গাছ জটলা করিয়া দাঁড়াইয়া আছে– তাহারা একটি কথা কহে না, কিন্তু স্থির হইয়া যেন কীটের পদশব্দটুকু পর্যন্তও শোনে; তাহারা কেবল নিজের ছায়ার দিকে, তলস্থিত অন্ধকারের দিকে অনিমেষ নেত্রে চাহিয়া থাকে। অরণ্যের