পাতা:রাজর্ষি-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৪৫: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
রাজা ফিরিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “কে তুমি?”
38 রাজর্ষি

রাজা ফিরিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “কে তুমি ?”
পরিচিত স্বর কহিল, “আমি আপনার অধম সেবক, আমি জয়সিংহ । মহারাজ, আপনি আমার গুরু, আমার প্রভু। আপনি ছাড়া আমার আর কেহ নাই। যেমন আপনি আপনার কনিষ্ঠ ভ্রাতার হাত ধরিয়া অন্ধকারের মধ্য দিয়া লইয়া যাইতেছেন তেমনি আমারও হাত ধরুন;আমাকেওসঙ্গে লইয়াযান আমি শুরুতর অন্ধকারের মধ্যে পড়িয়াছি। আমার কিসে ভালো হইবে, কিসে মন্দ হইবে কিছুই জানি না । আমি একবার বামে যাইতেছি, একবার দক্ষিণে যাইতেছি, আমার কর্ণধার কেহ নাই।")
পরিচিত স্বর কহিল, “আমি আপনার অধম সেবক, আমি জয়সিংহ। মহারাজ আপনি আমার গুরু, আমার প্রভু। আপনি ছাড়া আমার আর কেহ নাই। যেমন আপনি আপনার কনিষ্ঠ ভ্রাতার হাত ধরিয়া অন্ধকারের মধ্যে দিয়া লইয়া যাইতেছেন, তেমনি আমারও হাত ধরুন, আমাকেও সঙ্গে লইয়া যান; আমি গুরুতর অন্ধকারের মধ্যে পড়িয়াছি। আমার কিসে ভালো হইবে, কিসে মন্দ হইবে আমি কিছুই জানি না। আমি একবার বামে যাইতেছি, একবার দক্ষিণে যাইতেছি, আমার কর্ণধার কেহ নাই।”

সেই অন্ধকারে অশ্রু পড়িতে লাগিল, কেহ দেখিতে পাইল না, কেবল আবেগভরে জয়সিংহের আর্দ্র স্বর কঁাপিতে কঁাপিতে রাজার কর্ণে প্রবেশ করিতে লাগিল। স্তব্ধস্থির অন্ধকার বায়ুচঞ্চল সমুদ্রের মতে কঁাপিতে লাগিল । রাজা জয়সিংহের হাত ধরিয়া বলিলেন, “চলো, আমার সঙ্গে
সেই অন্ধকারে অশ্রু পড়িতে লাগিল, কেহ দেখিতে পাইল না, কেবল আবেগভরে জয়সিংহের আর্দ্র স্বর কাঁপিতে কাঁপিতে রাজার কর্ণে প্রবেশ করিতে লাগিল। স্তব্ধ স্থির অন্ধকার বায়ুচঞ্চল সমুদ্রের মতো কাঁপিতে লাগিল। রাজা জয়সিংহের হাত ধরিয়া বলিলেন, “চলো, আমার সঙ্গে প্রাসাদে চলো।”
প্রাসাদে চলো ।”
<section begin="11" />##12#
দ্বাদশ পরিচ্ছেদ

তাহার পরদিন যখন জয়সিংহ মন্দিরে ফিরিয়া আসিলেন তখন পূজার সময় অতীত হইয়া গিয়াছে। রঘুপতি বিমর্ষমুখে একাকী বসিয়া আছেন। ইহার পূর্বে কখনও এরূপ অনিয়ম হয় নাই ।

জয়সিংহ আসিয়া গুরুর কাছে না গিয়া তাহার বাগানের মধ্যে গেলেন । তাহার গাছপালাগুলির মধ্যে গিয়া বসিলেন । তাহারা তাহার চারি দিকে কঁাপিতে লাগিল, নড়িতে লাগিল, ছায়া নাচাইতে লাগিল। তাহার চারি দিকে পুষ্পখচিত পল্লবের স্তর, শ্যামল স্তরের উপর স্তর,ছায়াপূর্ণসুকোমল স্নেহের আচ্ছাদন, সুমধুর জাহান, প্রকৃতির প্রতিপূর্ণ আলিঙ্গন। এখানে সকলে অপেক্ষা করিয়া থাকে- কথা
{{কেন্দ্র|{{x-larger|দ্বাদশ পরিচ্ছেদ}}}}
জিজ্ঞাসা করে না, ভাবনার ব্যাঘাত করে না, চাহিলে তবে চায়, কথা

তাহার পরদিন যখন জয়সিংহ মন্দিরে ফিরিয়া আসিলেন, তখন পূজার সময় অতীত হইয়া গিয়াছে। রঘুপতি বিমর্ষ মুখে একাকী বসিয়া আছেন। ইহার পূর্বে কখনো এরূপ অনিয়ম হয় নাই।

জয়সিংহ আসিয়া গুরুর কাছে না গিয়া তাঁহার বাগানের মধ্যে গেলেন। তাঁহার গাছপালাগুলির মধ্যে গিয়া বসিলেন। তাহারা তাঁহার চারি দিকে কাঁপিতে লাগিল, নড়িতে লাগিল, ছায়া নাচাইতে লাগিল। তাঁহার চারি দিকে পুষ্পখচিত পল্লবের স্তর, শ্যামল স্তরের উপর স্তর, ছায়াপূর্ণ সুকোমল স্নেহের আচ্ছাদন, সুমধুর আহ্বান, প্রকৃতির প্রীতিপূর্ণ আলিঙ্গন। এখানে সকলে অপেক্ষা করিয়া থাকে, কথা জিজ্ঞাসা করে না, ভাবনার ব্যাঘাত করে না, চাহিলে তবে চায়, কথা <section end="11" />