পাতা:রাজর্ষি-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৬৮: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

ইতিহাস ব্রাউজ করুন

← পুরনো সম্পাদনা নতুনতর সম্পাদনা →

@@ পাতার অবস্থা / পাতার অবস্থা @@
-মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
@@ ১ নং লাইন: / ১ নং লাইন: @@
+রঘুপতি চলিয়া গেলে নক্ষত্ররায়ের দিকে চাহিয়া রাজা দৃঢ়স্বরে কহিলেন, “নক্ষত্ররায়, তোমার অপরাধ তুমি স্বীকার কর কি না।”
-রাজর্ষি ჯ,°
-রঘুপতি চলিয়া গেলে নক্ষত্ররায়ের দিকে চাহিয়া রাজ দৃঢ়ম্বরে কহিলেন, “নক্ষত্ররায়, তোমার অপরাধ তুমি স্বীকার কর কি না ?”
-নক্ষত্ররায় বলিলেন, “মহারাজ, আমি অপরাধী, আমাকে মার্জনা করুন।” বলিয়া ছুটিয়া আসিয়া রাজার পা জড়াইয়া ধরিলেন।
+নক্ষত্ররায় বলিলেন, “মহারাজ, আমি অপরাধী, আমাকে মার্জনা করুন।”বলিয়া ছুটিয়া আসিয়া রাজার পা জড়াইয়া ধরিলেন।
-মহারাজ বিচলিত হইলেন; কিছুক্ষণ বাক্যন্মুতি হইল না। অবশেষে আত্মসম্বরণ করিয়া বলিলেন, “নক্ষত্ররায়, ওঠে, আমার কথা শোনো । আমি মার্জনা,করিবার কে (আমি আপনারশাসনে আপনি বহুর্বেদীও যেমন বদ্ধ বিচারকও তেমনি বন্ধ) একই অপরাধে আমি একজনকে দণ্ড দিব, একজনকে মার্জনা করিব, এ কী করিয়া হয় ? তুমিই বিচার করো ।”
+মহারাজ বিচলিত হইলেন, কিছুক্ষণ বাক্যস্ফূর্তি হইল না। অবশেষে আত্মসম্বরণ করিয়া বলিলেন, “নক্ষত্ররায়, ওঠো, আমার কথা শোনো। আমি মার্জনা করিবার কে? আমি আপনার শাসনে আপনি বদ্ধ। বন্দীও যেমন বদ্ধ, বিচারকও তেমনি বদ্ধ। একই অপরাধে আমি একজনকে দণ্ড দিব, একজনকে মার্জনা করিব, এ কী করিয়া হয়? তুমিই বিচার করো।”
-সভাসদেরা বলিয়া উঠিলেন, “মহারাজ, নক্ষত্ররায় আপনার ভাই, আপনার ভাইকে মার্জন করুন।”
-রাজা দৃঢ়স্বরে কছিলেন, তোমরা সকলে চুপ করে। যতক্ষণ আমিএই আসনে আছি ততক্ষণ আমি কাহারও ভাই নহি, কাহারও বন্ধু নহি ।”)
+সভাসদেরা বলিয়া উঠিলেন, “মহারাজ, নক্ষত্ররায় আপনার ভাই, আপনার ভাইকে মার্জনা করুন।”
-সভাসদের চারি দিকে চুপ করিলেন। সভা নিস্তব্ধ হইল। রাজা গম্ভীর স্বরে কহিতে লাগিলেন, “তোমরা সকলেই শুনিয়াছ— আমার রাজ্যে নিয়ম এই যে, যে ব্যক্তি দেবতার উদ্দেশে জীববলি দিবে বা দিতে উদ্যত হইবে তাহার নির্বাসনদণ্ড। কাল সন্ধ্যাকালে নক্ষত্ররায় পুরোহিতের সহিত ষড়যন্ত্র করিয়া বলির মানসে একটি শিশুকে হরণ করিয়াছিলেন। এই অপরাধ সপ্রমাণ হওয়াতে আমি তাহার আট বৎসর নির্বাসনদণ্ড বিধান করিলাম।” ।
-প্রহরীরা যখন নক্ষত্ররায়কে লইয়া যাইতে উদ্যত হইল তখন রাজা আসন হইতে নামিয়া নক্ষত্ররায়কে আলিঙ্গন করিলেন ; রুদ্ধ কণ্ঠে কছিলেন, বৎস, কেবল তোমার দও হইল না, আমারও দণ্ড হইল। না জানি পূর্বজন্মে কী অপরাধ করিয়াছিলাম। যত দিন তুমি বন্ধুদের
+রাজা দৃঢ়স্বরে কহিলেন, “তোমারা সকলে চুপ করো। যতক্ষণ আমি এই আসনে আছি, ততক্ষণ আমি কাহারও ভাই নহি, কাহারও বন্ধু নহি।”
+সভাসদেরা চারি দিকে চুপ করিলেন। সভা নিস্তব্ধ হইল। রাজা গম্ভীর স্বরে কহিতে লাগিলেন, “তোমরা সকলেই শুনিয়াছ– আমার রাজ্যের নিয়ম এই যে, যে ব্যক্তি দেবতার উদ্দেশে জীব-বলি দিবে বা দিতে উদ্যত হইবে তাহার নির্বাসনদণ্ড। কাল সন্ধ্যাকালে নক্ষত্ররায় পুরোহিতের সহিত ষড়যন্ত্র করিয়া বলির মানসে একটি শিশুকে হরণ করিয়াছিলেন। এই অপরাধ সপ্রমাণ হওয়াতে আমি তাঁহার আট বৎসর নির্বাসনদণ্ড বিধান করিলাম।”
+প্রহরীরা যখন নক্ষত্ররায়কে লইয়া যাইতে উদ্যত হইল তখন রাজা আসন হইতে নামিয়া নক্ষত্ররায়কে আলিঙ্গন করিলেন, রুদ্ধকণ্ঠে কহিলেন, “বৎস, কেবল তোমার দণ্ড হইল না, আমারও দণ্ড হইল। না জানি পূর্বজন্মে কী অপরাধ করিয়াছিলাম! যতদিন তুমি বন্ধুদের