পাতা:ঝিলে জঙ্গলে শিকার - কুমুদনাথ চৌধুরী - প্রিয়ম্বদা দেবী.pdf/১০৪: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

Text from Google OCR
 
(কোনও পার্থক্য নেই)

১৬:১৫, ৮ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঝিলে জঙ্গলে শিকার এক দল লােক এই সব ঝােপ ঝাড় কেটে বাধা দূর করে পথ সুগম ও পরিস্কার করে দিচ্ছিল। আলগা বড় বড় পাথরে অসমান ধারাল পর্বত গাত্রের উপর দিয়ে হাতী কোন ক্রমে পথ করে চল ছিল। কখনাে হাঁটু গেড়ে গুড়ি মেরে যাচ্ছিল কখনাে বা গাছের ডাল শুড় দিয়ে জঙিয়ে ধরে কায় ক্লেশে আপনাকে উপরে টেনে তুলছিল। সব চেয়ে দুর্গম পথটা তখনো সম্মুখে। সেটি একটা পৰ্বত সঙ্কট, সঙ্কীর্ণ পথ, এক ধারে উচু প্রাচীরের মত খাড়া পাহাড়, অন্য ধারে ৬০০ ফুট গভীর খাত। সেখানে তরঙ্গসঙ্কুল উদ্দাম উন্মত্তগতি গিরি নদী গদগদ শব্দে বয়ে চলেছে। বেদিচত্বরের মত যে অপ্রশস্ত পথে আমরা চলেছি তার বিস্তার তিনফুটের অকি নয়, এই পথের অনেক অতীত ঘটনার কথা মাহুত আমাদের শোনাচ্ছিল। একবার এই ধানটিতে একটা বাঘ ও একটী হরিণের মুখে মুখি দেখা হয়েছিল (অামার Browning'এর Donald'এর কথা মনে পড়ছিল। তার পর হরিণটা এক লক্ষে একেবারে অনন্তের পথের যাত্রী হয়েছিল। আর একবার একটী বুনাে হাতী পা ফসকে আব বিভ্ৰমময়ী গিরিনদীর বুকের উপর গিয়ে পড়েছিল। সেখানে কোন আশ্রয় না পেয়ে ভেসেই চলেছিল। সেও অনন্তের কুলে পৌহিত বোধ হয় দেবাং যদি না তটবর্তী মহীরুহ প্রসারিত শাখা বাহর সাহায্যে তর প্রাণ রক্ষা করত। এই সব অতীত কাহিনী আমাদের মনে কতদুর উৎসাহ সঞ্চয় করছিল সে কথা ব্যক্ত করে না বও কল্পনার সাহায্যে পাঠকের হৃদয়ঙ্গম হরে সন্দেহ ন ই। মাহত আমাদের কানে মাভৈঃ মন্ত্র দেওয়া সত্বেও বনবিভাগের কর্মচারীর পরামর্শমত আমরা রাজোচিত বাহন ত্যাগ করে সে পথটুকু পদব্রজে পার হওয়াই কর্তব্য মনে করেছিলাম। পাহাড়ের পথের আলগা পাথর সর্বত্র নিরাপদ হিল না। হাতী কিন্তু এতটুকুও চঞ্চল না হয়ে পথটা অতিক্রম করে এল ; কেবল আত্মরক্ষার জন্যে সাবধানী লোকের মত পৰ্বত প্রাচীরে নির্ভর করে ধীরে সতর্ক ভাবে প্রতি পদক্ষেপ করছিল। আমার রবার দেওন্না জুতো বন বিভাগের কর্মচারীর মােট। মারহাট্টি চটির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারেনি। একটা বিশেষ স্মরণীয় দিনের পর হতে এই ব্যক্তি কি অশ্বপৃষ্ঠে কি পদব্রজে আর কখনও চটি ছাড়া অন্য কিছু ব্যবহার করতেন ন। কেন যে করতেন না সে, কাহিনী তােমরা অতঃপর শুনতে পাবে। এই চটি ভিন্ন তার আরও একটা বড় আদরের বস্তু ছিল – সে হচ্ছে তার পাটকিলে রংএর দেশী টাটু ঘোড়াট। তারই পরিচৰ্য্যায় সেও বার্ধক্য সীমায় এসে দাড়িয়েছিল। তার এমন বন্ধু আর দু ছিল না। বনের মধ্যেই কর্মচ.রী মহাশয় জীবনের অধিকাংশ ভাগ কাটিয়েছিলেন। ১৫ ক্রোশ পরিধি পরিনিত প্রদেশের প্রত্যেক পাহাড় প্রতি নালা করস্থিত আমলকৰং তিনি জানতেন। কাজেই বনতীর্থ পথে এই পাণ্ডাটী যে আমাদের নিরাপদে নিয়ে গন্তব্য স্থানে উপনীত করেছিলেন সে কথা বলাই বাহুল্য। বনে বনে ঘুরে তার গায়ের রং পােড় ইটের মত পাটকিলে হয়ে গিয়েছিল। ঝড় বৃষ্টি বােদ কিছুতেই তাঁর সানাত না ; ক্ষুধা তৃষ্ণাতে কস্মিন কালেও তার মনের প্রশান্ত প্রফুল্ল ভাবে কিছুমাত্র ব্যত্যয় হত না। একদিন সকালে দেখি কি তিনি জঙ্গলের জ্বরের প্রকোপে একেবারে ভাল্লুকের মত থর থর করে কাপছেন। এ জব পুরান বন্ধু। থেকে থেকেই তাকে দেখা দিয়ে যেত। আর আসা সত্বেও তিনি আসিয়া ভরসা দিলেন যে সন্ধ্যার পর্বেই ouামাদের সঙ্গ ধরবেন। সন্ধ্যার কিছু আগেই ১৫ মাইল পথ অতিক্রম করে ব্রাউন টাটুর উপর . পােয়র হয়ে তিনি আমাদের শিবিরে এসে ঠিক উপস্থিত হলেন! এবার অরটা তাঁকে অধিকক্ষণ ধরে আলাতন করেনি। তার বিদায়ের পর খুব খানকটে কুইনিনের সঙ্গে ভরা এক পেট প্রাতরাশ +