পাতা:ঝিলে জঙ্গলে শিকার - কুমুদনাথ চৌধুরী - প্রিয়ম্বদা দেবী.pdf/১১৪: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

Text from Google OCR
 
(কোনও পার্থক্য নেই)

১৬:১৭, ৮ অক্টোবর ২০১৮ তারিখে সম্পাদিত সর্বশেষ সংস্করণ

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৭৮ ঝিলে জঙ্গলে শিকার। সাঁতার দিয়ে কোন রকমে পারে পৌছিলাম। দৃশ্যটি বিশেষ উপভােগ্য হয়েছিল এ কথা বলতে পারিনে। জলাভূমি আর ধানক্ষেতের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ পথ কায়ক্লেশে অতিক্রম করবার সময় রােদে । বাতাসে সব শুকিয়ে ঠিক হয়ে যেতেও বেশী সময় লাগেনি। | একবার নাকানি চুবানি খেয়ে আর কয়েকবার এ বিভ্রাট হতে আত্মরক্ষা করে, আমি অবশেষে একখানি ভােঙ্গা নিজে তৈরি করেছিলাম। পিয়ানাে বাজাবার টুলের মত তার ঠিক মাঝখানে, চারিদিকে ঘােরে এমনি একটা বসার জায়গা করে নিয়েছিলাম। তেমন বেশী উচু নয় ; আর ঠিক জায়গাটিতে বসলে ডানপার হতে যে স্নাইপ উড়ে উঠত সহজেই তাদের হিসাব নিকাশ করা চলত। পদ্মবনে তাদের খুজে পাওয়া কষ্টসা ছিল না, কিন্তু যেগুলো আগাছার মধ্যে গিয়ে পড়ত তাদের বার করাই হত বড় মুস্কিল। ডােঙ্গাটি যতদূর সম্ভব আগাছার উপর এগিয়ে দিয়ে ডোঙ্গার উপর হতে একটা লম্বা লগি ফেলা হত, তখন মাঝিদের মধ্যে একজন তার উপর দিয়ে সাবধানে পুলের মত করে হেঁটে গিয়ে পাখী কুড়িয়ে আনত। একটা দাড় নিয়ে নিজের টলমল অবস্থা সামঞ্জস্য করে লগিটাকে ঠেলে ঠেলে এগিয়ে চলতে লাগল। অনেক সময় তার হাঁটু পর্যন্ত ডুবে যাচ্ছিল। তার এই গতিবিধি দেখে মনে ভয়ের সঞ্চার না হয়ে যায়নি। তাই যতক্ষণে সে নিরাপদে তরি নিয়ে তীরে না পৌছল ততক্ষণ মনে, সোয়াস্তি পেলাম । দৈবাৎ ঘটনা হতে উদ্ধার করবার জন্যে আমি সর্বদাই একটা লম্বা দড়ি কাছে রাখতাম। কাজটা বিশেষ বিপজ্জনক হলেও যারা এ কাজে লিপ্ত থাকত তার তেমন কিছু মনে করত না ; বেশ সহজ ভাবেই চলাফেরা করত। আমার একটা Bull Terrier কুকুর ছিল, তার নাম ILucy। সে আমার নিত্য, সঙ্গী হয়ে উঠেছিল, আর কালক্রমে চমৎকার শিকারী হয়ে দাঁড়াল। মার পাখী সে অতি নিপুণতার সঙ্গে উদ্ধার করে আন্ত। বাধা দেবার আগেই সে স্নাইপ খুঁজে আনবার জন্যে ঝাঁপিয়ে পড়ে, আগাছায় আটকে একবার মারা পড়বার মত হয়। অনেক কষ্টে তাকে সেবার রক্ষা করেছিলাম। বেচারা Lucy এত দিনে সে রম্যতর কোন মৃগয়াক্ষেত্রে বিচরণ করছে ; আর কখনও ফিরবে না। তবে শান্তিতে মৃতপ্রায় হয়ে সে যখন ডুবে যাচ্ছে তখনও যে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সইপটিকে মুখে করে রেখেছিল, এ কথা আমি কখনও ভুলতে পারব না। মহিষের পাল অনেক সময় এই ঘন আগাছায় ঢাকা জলাভূমিতে চরতে আসে। তাদের পায়ের চাপে একবার যখন এই গুল্মলতা-আচ্ছন্ন প্রান্তর ভেঙ্গে গিয়ে গলিপথের সৃষ্টি করে, তখন সে পথে সহজেই ভােঙ্গা চালিয়ে যাতায়াত করা যায়। এক দিন এমনি এক দল মােষ বিলের উপর চরছিল, আর যখনি আমার গুলির আওয়াজ হচ্ছিল তখনই চমকে 'ঠে পা ছুড়ে এই আগাছার রাশি চাপা দিয়ে দাবিয়ে দিচ্ছিল। তাদের এই ভয় আর এ ভয়ের অভিব্যক্তি দেখতে ভারি মজার। গাইপগুলিকে আমার দিকে গড়িয়ে আনবার জন্যে অন্য নৌকায় আরাে জনকত লােক ছিল। আমি তাদের এই মহিষের পালকে শাসনে রাখবার জন্ঠে পাঠিয়ে দিলাম আর আমি নিজে আমার আস্তানা এ বদল করে এই সুযােগে অতি সহজেই অনেকগুলি স্নাইপ মারলাম। | কোন কোন ঝিলে আগাছায় ভরা ঘাসে ঢাকা চলন্ত কতকগুলি দ্বীপ থাকে। সূর্যের তাপ যখন অত্যধিক হয়,.মাইপের ঝাক গিয়ে তল্পি মধ্যে আশ্রয় নেয়। চুপি চুপি নৌকা বেয়ে তার কাছে