পাতা:গল্পগুচ্ছ (চতুর্থ খণ্ড).pdf/১৪৩: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
১১৪ গল্পগুচ্ছ না, আমাকে রক্ষা করো, আমি মরিলে যে আমার মা কাঁদিবে, আমার অমর কাঁদিবে।"
না, আমাকে রক্ষা করো, আমি মরিলে যে আমার মা কাঁদিবে, আমার অমর কাঁদিবে।”

ক্ৰমে বালিকা অচেতন হইয়া পড়িল। কমল আললিতকুতলে শিথিল-অঞ্চলে তুষারে অধ্যমগনা হইয়া ব্যক্ষচু্যত মলিন ফলটির মতো পথপ্রান্তে পড়িয়া রহিল। তুষারের উপর তুষার পড়িতে লাগিল, বালিকার বক্ষের উপর তুষারের কণা পড়িতেছে ও গলিতেছে। এবং ক্ৰমে জমিয়া যাইতেছে। এই অাঁধার রাত্রিতে একজন পার্থও পথ দিয়া যাইতেছে না। বাস্টি পড়িতে লাগিল। রাত্রি বাড়িতে লাগিল। বরফ জমিতে লাগিল। বালিকা একাকিনী শৈলপথে পড়িয়া রহিল।
ক্রমে বালিকা অচেতন হইয়া পড়িল। কমল আলুলিতকুন্তলে শিথিল-অঞ্চলে তুষারে অর্ধমগ্না হইয়া বৃক্ষচ্যুত মলিন ফুলটির মতো পথপ্রান্তে পড়িয়া রহিল। তুষারের উপর তুষার পড়িতে লাগিল, বালিকার বক্ষের উপর তুষারের কণা পড়িতেছে ও গলিতেছে। এবং ক্রমে জমিয়া যাইতেছে। এই আঁধার রাত্রিতে একজন পান্থও পথ দিয়া যাইতেছে না। বৃষ্টি পড়িতে লাগিল। রাত্রি বাড়িতে লাগিল। বরফ জমিতে লাগিল। বালিকা একাকিনী শৈলপথে পড়িয়া রহিল।


দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ

কমলের মাতা ভগন কুটিরে রোগশয্যায় শয়ান। জীণ গহে ভেদ করিয়া শীতের বাতাস তীব্ৰবেগে গহে প্রবেশ করিতেছে। বিধবা তৃণশয্যায় শ্যইয়া থরথর করিয়া কাঁপিতেছেন। গহ অন্ধকার, প্রদীপ জবালিবার লোক নাই। কমল প্রাতে ভিক্ষা করিতে গিয়াছে, এখনও ফিরিয়া আসে নাই। ব্যাকুল বিধবা প্রত্যেক পদশব্দে কমল আসিতেছে বলিয়া চমকিয়া উঠিতেছেন। কমলকে খুজিবার জন্য বিধবা কতবার উঠিতে চেষ্টা করিয়াছেন, কিন্তু পারেন না। কত কী আশঙ্কায় আকুল হইয়া মাতা দেবতার নিকট কাতর ক্লদনে প্রার্থনা করিয়াছেন ; আশ্রজেলে কতবার কহিয়াছেন, “আমি হতভাগিনী, আমার মরণ হইল না কেন । কখনও ভিক্ষা করিতে জানে না যে বালিকা, তাহাকেও আজ অনাথার মতো বারের বাহিরে দাঁড়াইতে হইল ? ক্ষুদ্র বালিকা অধিক দীর চলিতে পারে না— সে এই অন্ধকারে, তুষারে, বটিতে কণী করিয়া বাঁচবে।”

উঠিতে পারেন না--- অথচ কমলকে দেখিতে পাইতেছেন না, বিধবা বক্ষে করাঘাত করিয়া অধীর ভাবে কাঁদিতে লাগিলেন। দই-একজন প্রতিবাসী বিধবাকে দেখিতে আসিয়াছিল ; বিধবা তাহাদের চরণ জড়াইয়া ধরিয়া সজল নয়নে কাতরভাবে মিনতি করিলেন, “আমার পথহারা কমল কোথায় ঘুরিয়া বেড়াইতেছে, একবার তাহাকে খুজিতে যাও।”
কমলের মাতা ভগ্ন কুটিরে রোগশয্যায় শয়ান। জীর্ণ গৃহ ভেদ করিয়া শীতের বাতাস তীব্রবেগে গৃহে প্রবেশ করিতেছে। বিধবা তৃণশয্যায় শুইয়া থরথর করিয়া কাঁপিতেছেন। গৃহ অন্ধকার, প্রদীপ জ্বালিবার লোক নাই। কমল প্রাতে ভিক্ষা করিতে গিয়াছে, এখনও ফিরিয়া আসে নাই। ব্যাকুল বিধবা প্রত্যেক পদশব্দে কমল আসিতেছে বলিয়া চমকিয়া উঠিতেছেন। কমলকে খুঁজিবার জন্য বিধবা কতবার উঠিতে চেষ্টা করিয়াছেন, কিন্তু পারেন নাই। কত কী আশঙ্কায় আকুল হইয়া মাতা দেবতার নিকট কাতর ক্রন্দনে প্রার্থনা করিয়াছেন; অশ্রুজলে কতবার কহিয়াছেন, “আমি হতভাগিনী, আমার মরণ হইল না কেন। কখনও ভিক্ষা করিতে জানে না যে বালিকা, তাহাকেও আজ অনাথার মতো দ্বারের বাহিরে দাঁড়াইতে হইল? ক্ষুদ্র বালিকা অধিক দূর চলিতে পারে না— সে এই অন্ধকারে, তুষারে, বৃষ্টিতে কী করিয়া বাঁচিবে।”
তাহারা বলিল, “এই তুষারে, অন্ধকারে, আমরা ঘরের বাহিরে যাইতে পারি না।” বিধবা কাঁদিয়া কহিলেন, “একবার যাও— আমি অনাথ, দরিদ্র, অর্থ নাই, তোমাদের কী দিব বলো। ক্ষুদ্র বালিকা, সে পথ চিনে না, সে আজ সমস্ত দিন কিছ খায় নাই— তাহাকে মাতার ক্লোড়ে আনিয়া দেও—ঈশ্বর তোমাদের মঙ্গল করিবেন।”

কেহ শুনিল না। সে বাটিবজ্রে কে বাহির হইবে। সকলেই নিজ নিজ গ্যহে ফিরিয়া গেল।
উঠিতে পারেন না— অথচ কমলকে দেখিতে পাইতেছেন না, বিধবা বক্ষে করাঘাত করিয়া অধীর ভাবে কাঁদিতে লাগিলেন। দুই-একজন প্রতিবাসী বিধবাকে দেখিতে আসিয়াছিল; বিধবা তাহাদের চরণ জড়াইয়া ধরিল সজল নয়নে কাতরভাবে মিনতি করিলেন, “আমার পথহারা কমল কোথায় ঘুরিয়া বেড়াইতেছে, একবার তাহাকে খুঁজিতে যাও।”
ক্লমে রাত্রি বাড়িতে লাগিল। কাঁদিয়া কাঁদিয়া দলবল বিধবা ক্লান্ত হইয়া গিয়াছেন, নিজীবিভাবে শয্যায় পড়িয়া আছেন, এমন সময়ে বাহিরে পদশব্দ শনা গেল। বিধবা চকিত নেত্রে ,রের দিকে চাহিয়া ক্ষীণস্বরে কহিলেন, “কমল, মা,

उप्राईव्न ?"
তাহারা বলিল, “এই তুষারে, অন্ধকারে, আমরা ঘরের বাহিরে যাইতে পারি না।”

বিধবা কাঁদিয়া কহিলেন, “একবার যাও— আমি অনাথ, দরিদ্র, অর্থ নাই, তোমাদের কী দিব বলো। ক্ষুদ্র বালিকা, সে পথ চিনে না, সে আজ সমস্ত দিন কিছু খায় নাই— তাহাকে মাতার ক্রোড়ে আনিয়া দেও— ঈশ্বর তোমাদের মঙ্গল করিবেন।”

কেহ শুনিল না। সে বৃষ্টিবজ্রে কে বাহির হইবে। সকলেই নিজ নিজ গৃহে ফিরিয়া গেল।

ক্রমে রাত্রি বাড়িতে লাগিল। কাঁদিয়া কাঁদিয়া দুর্বল বিধবা ক্লান্ত হইয়া গিয়াছেন, নির্জীবভাবে শয্যায় পড়িয়া আছেন, এমন সময়ে বাহিরে পদশব্দ শুনা গেল। বিধবা চকিত নেত্রে দ্বারের দিকে চাহিয়া ক্ষীণস্বরে কহিলেন, “কমল, মা, আইলি? ”