পাতা:গল্পগুচ্ছ (প্রথম খণ্ড).djvu/১২১: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা |
|||
পাতার অবস্থা | পাতার অবস্থা | ||
- | + | মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে | |
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না): | শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না): | ||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
{{rh||ত্যাগ|১১৭}} |
|||
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে): | পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে): | ||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
ত্যাগ ১১৭ |
|||
“তুমি যখন কলেজে পড়িতে তোমার বাসার পাশেই বিপ্রদাস চাটুজ্জের বাড়ি ছিল । বেচারা এখন মারা গিয়াছে । চাটুজ্জে-মহাশয়ের বাড়িতে কুসুম নামে একটি শৈশববিধবা অনাথ কায়স্থকন্যা আশ্রিতভাবে |
{{ফাঁক}} “তুমি যখন কলেজে পড়িতে তোমার বাসার পাশেই বিপ্রদাস চাটুজ্জের বাড়ি ছিল । বেচারা এখন মারা গিয়াছে । চাটুজ্জে-মহাশয়ের বাড়িতে কুসুম নামে একটি শৈশববিধবা অনাথ কায়স্থকন্যা আশ্রিতভাবে থাকিত। মেয়েটি বড়ো সুন্দরী— বুড়ো ব্রাহ্মণ কলেজের ছেলেদের দৃষ্টিপথ হইতে তাহাকে সম্বরণ করিয়া রাখিবার জন্য কিছু দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হইয়া পড়িয়াছিল। কিন্তু, বুড়োমানুষকে ফাঁকি দেওয়া একটি মেয়ের পক্ষে কিছুই শক্ত নহে। মেয়েটি প্রায়ই কাপড় শুকাইতে দিতে ছাতে উঠিত এবং তোমারও বোধ করি ছাতে না উঠিলে পড়া মুখস্থ হইত না । পরস্পরের ছাত হইতে তোমাদের কোনোরূপ কথাবার্তা হইত কিনা সে তোমরাই জান, কিন্তু মেয়েটির ভাবগতিক দেখিয়া বুড়ার মনেও সন্দেহ হইল। কারণ, কাজকর্মে তাহার ক্রমিক ভুল হইতে দেখা গেল এবং তপস্বিনী গৌরীর মতো দিন দিন সে আহারনিদ্রা ত্যাগ করিতে লাগিল । এক-একদিন সন্ধ্যাবেলায় সে বুড়ার সম্মুখেই অকারণে অশ্র সম্বরণ করিতে পারিত না । |
||
“অবশেষে বুড়া আবিষ্কার করিল, ছাতে তোমাদের মধ্যে সময়ে অসময়ে নীরব দেখাসাক্ষাৎ চলিয়া থাকে – এমন-কি কালেজ কামাই করিয়াও মধ্যাহ্নে চিলের ঘরের ছায়ায় ছাতের কোণে তুমি বই হাতে করিয়া বসিয়া থাকিতে ; নির্জন অধ্যয়নে সহসা তোমার এত উৎসাহ জন্মিয়াছিল। বিপ্রদাস যখন আমার কাছে পরামর্শ জানিতে আসিল আমি কহিলাম, খুড়ে, তুমি তো অনেক দিন হইতে কাশী যাইবার মানস করিয়াছ— মেয়েটিকে আমার কাছে রাখিয়া তীর্থবাস করিতে যাও, আমি তাহার ভার লইতেছি ।” |
{{ফাঁক}}“অবশেষে বুড়া আবিষ্কার করিল, ছাতে তোমাদের মধ্যে সময়ে অসময়ে নীরব দেখাসাক্ষাৎ চলিয়া থাকে – এমন-কি কালেজ কামাই করিয়াও মধ্যাহ্নে চিলের ঘরের ছায়ায় ছাতের কোণে তুমি বই হাতে করিয়া বসিয়া থাকিতে ; নির্জন অধ্যয়নে সহসা তোমার এত উৎসাহ জন্মিয়াছিল। বিপ্রদাস যখন আমার কাছে পরামর্শ জানিতে আসিল আমি কহিলাম, খুড়ে, তুমি তো অনেক দিন হইতে কাশী যাইবার মানস করিয়াছ— মেয়েটিকে আমার কাছে রাখিয়া তীর্থবাস করিতে যাও, আমি তাহার ভার লইতেছি ।” |
||
⚫ | “বিপ্রদাস তীর্থে গেল। আমি মেয়েটিকে শ্ৰীপতি চাটুজ্জের বাসায় রাখিয়া তাহাকেই মেয়ের বাপ বলিয়া চালাইলাম । তাহার পর যাহা হইল তোমার জানা আছে । তোমার কাছে আগাগোড়া সব কথা খোলসা করিয়া বলিয়া বড়ো আনন্দ লাভ করিলাম। এ যেন একটি গল্পের মতো । ইচ্ছা আছে, সমস্ত লিখিয়া একটি বই করিয়া ছাপাইব । আমার লেখা আসে না । আমার ভাইপোটা শুনিতেছি একটু-আধটু লেখে— তাহাকে দিয়া লেখাইবার মানস আছে । কিন্তু, তোমাতে তাহাতে মিলিয়া লিখিলে সব চেয়ে ভালো হয়, কারণ, গল্পের উপসংহারটি আমার ভালো করিয়া জানা নাই ।” |
||
⚫ | {{ফাঁক}}“বিপ্রদাস তীর্থে গেল। আমি মেয়েটিকে শ্ৰীপতি চাটুজ্জের বাসায় রাখিয়া তাহাকেই মেয়ের বাপ বলিয়া চালাইলাম । তাহার পর যাহা হইল তোমার জানা আছে । তোমার কাছে আগাগোড়া সব কথা খোলসা করিয়া বলিয়া বড়ো আনন্দ লাভ করিলাম। এ যেন একটি গল্পের মতো । ইচ্ছা আছে, সমস্ত লিখিয়া একটি বই করিয়া ছাপাইব । আমার লেখা আসে না । আমার ভাইপোটা শুনিতেছি একটু-আধটু লেখে— তাহাকে দিয়া লেখাইবার মানস আছে । কিন্তু, তোমাতে তাহাতে মিলিয়া লিখিলে সব চেয়ে ভালো হয়, কারণ, গল্পের উপসংহারটি আমার ভালো করিয়া জানা নাই ।” |