পাতা:গল্পগুচ্ছ (প্রথম খণ্ড).djvu/১৭৪: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
Mohaguru (আলোচনা | অবদান)
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
হইয়া গেছে। কিন্তু, ছি ছি, সেনাপতি, তাই বলিয়া কি সন্ধ্যার অন্ধকারে চোরের মতো রাজান্তঃপুরের উদ্যানপ্রাচীর লঙ্ঘন করিতে হয়। তুমিই না ভুবনবিজয়ী বীরপুরুষ!
ኃ ዓ• গল্পগুচ্ছ

হইয়া গেছে। কিন্তু, ছি ছি, সেনাপতি, তাই বলিয়া কি সন্ধ্যার অন্ধকারে চোরের মতো রাজাস্তঃপুরের উদ্যানপ্রাচীর লঙ্ঘন করিতে হয় । তুমিই না ভুবনবিজয়ী বীরপুরুষ !
কিন্তু, যে উপন্যাস লেখে তাহার কোথাও বাধা নাই ; দ্বারীরা দ্বাররোধ করে না, অসুর্যম্পশুরূপা রমণীরাও আপত্তি প্রকাশ করে না, অতএব এই সুরম্য বসস্তসন্ধ্যায় দক্ষিণবায়ুীজিত রাজাস্তঃপুরের নিভৃত উদ্যানে একবার প্রবেশ করা যাক। হে পাঠিকা, তোমরাও আইস, এবং পাঠকগণ, ইচ্ছা করিলে তোমরাও অনুবতী হইতে পার— আমি অভয়দান করিতেছি ।
{{gap}}কিন্তু, যে উপন্যাস লেখে তাহার কোথাও বাধা নাই; দ্বারীরা দ্বাররােধ করে না, অসূর্যম্পশ্যরূপা রমণীরাও আপত্তি প্রকাশ করে না, অতএব এই সুরম্য বসন্তসন্ধ্যায় দক্ষিণবায়ুবীজিত রাজান্তঃপুরের নিভৃত উদ্যানে একবার প্রবেশ করা যাক। হে পাঠিকা, তােমরাও আইস, এবং পাঠকগণ, ইচ্ছা করিলে তােমরাও অনুবর্তী হইতে পার আমি অভয়দান করিতেছি।

একবার চাহিয়া দেখো, বকুলতলের তৃণশয্যায় সন্ধ্যাতারার প্রতিমার মতো ওই রমণী কে। হে পাঠক, হে পাঠিকা, তোমরা উহাকে জান কি। আমন রূপ কোথাও দেখিয়াছ ? রূপের কি কখনো বর্ণনা করা যায়। ভাষা কি কখনো কোনো মতবলে এমন জীবন যৌবন এবং লাবণ্যে ভরিয়া উঠিতে পারে। হে পাঠক, তোমার যদি দ্বিতীয় পক্ষের বিবাহ হয় তবে স্ত্রীর মুখ স্মরণ করে। হে রূপসী পাঠিক, যে যুবতীকে দেখিয়া তুমি সঙ্গিনীকে বলিয়াছ 'ইহাকে কী এমন ভালো দেখিতে, ভাই। হউক সুন্দরী, কিন্তু ভাই, তেমন শ্ৰী নাই – তাহার মুখ মনে করে, ওই তরুতলবতিনী রাজকুমারীর সহিত তাহার কিঞ্চিং সাদৃশু উপলব্ধি করিবে। পাঠক এবং পাঠিকা, এবার চিনিলে কি । উনিই রাজকন্ত বিদ্যুন্মালা
{{gap}}একবার চাহিয়া দেখে, বকুলতলের তৃণশয্যায় সন্ধ্যাতারার প্রতিমার মতাে ওই রমণী কে। হে পাঠক, হে পাঠিকা, তােমরা উহাকে জান কি। অমন রূপ কোথাও দেখিয়াছ? রূপের কি কখনাে বর্ণনা করা যায়। ভাষা কি কখনাে কোনাে মন্ত্রবলে এমন জীবন যৌবন এবং লাবণ্যে ভরিয়া উঠিতে পারে। হে পাঠক, তােমার যদি দ্বিতীয় পক্ষের বিবাহ হয় তবে স্ত্রীর মুখ। স্মরণ করাে। হে রূপসী পাঠিকা, যে যুবতীকে দেখিয়া তুমি সঙ্গিনীকে বলিয়াছ ইহাকে কী এমন ভালাে দেখিতে, ভাই। হউক সুন্দরী, কিন্তু ভাই, তেমন শ্ৰী নাই’- তাহার মুখ মনে করে, ওই তরুতলবর্তিনী রাজকুমারীর সহিত তাহার কিঞ্চিৎ সাদৃশ্য উপলব্ধি করিবে। পাঠক এবং পাঠিকা, এবার চিনিলে কি। উনিই রাজকন্যা বিদ্যুন্মাল।
রাজকুমারী কোলের উপর ফুল রাখিয়া নতমুখে মালা গাঁথিতেছেন, সহচরী কেহই নাই। গথিতে গাঁথিতে এক-একবার অঙ্গুলি আপনার সুকুমার কার্যে শৈথিল করিতেছে ; উদাসীন দৃষ্টি কোন এক অতিদুরবর্তী চিস্তারাজ্যে ভ্রমণ করিয়া বেড়াইতেছে। রাজকুমারী কী ভাবিতেছেন ।

কিন্তু, হে পাঠক, সে প্রশ্নের উত্তর আমি দিব না। কুমারীর নিভৃত হৃদয়মন্দিরের মধ্যে আজি এই নিস্তব্ধ সন্ধ্যায় কোন মর্তদেবতার আরতি হইতেছে, অপবিত্র কৌতুহল লইয়া সেখানে প্রবেশ করিতে পারিব না। ওই দেখো, একটি দীর্ঘনিশ্বাস পূজার স্বগন্ধি ধূপধুমের ন্যায় সন্ধ্যার বাতাসে মিশাইয়া গেল এবং দুইফোটা অশ্রুঞ্জল দুটি স্বকোমল কুমুমকোরকের মতো অজ্ঞাত দেবতার চরণের উদ্দেশে খসিয়া পড়িল ।
{{gap}}রাজকুমারী কোলের উপর ফুল রাখিয়া নতমুখে মালা গাঁথিতেছেন, সহচরী কেহই নাই। গাঁথিতে গাঁথিতে এক-একবার অঙ্গুলি আপনার সুকুমার কার্যে শৈথিল্য করিতেছে ; উদাসীন দৃষ্টি কোন-এক অতিদূরবর্তী চিন্তারাজ্যে ভ্রমণ করিয়া বেড়াইতেছে। রাজকুমারী কী ভাবিতেছেন।

{{gap}}কিন্তু, হে পাঠক, সে প্রশ্নের উত্তর আমি দিব না। কুমারীর নিভৃত হৃদয়মন্দিরের মধ্যে আজি এই নিস্তব্ধ সন্ধ্যায় কোন্ মর্তদেবতার আরতি হইতেছে, অপবিত্র কৌতুহল লইয়া সেখানে প্রবেশ করিতে পারিব না। ওই দেখাে, একটি দীর্ঘনিশ্বাস পূজার সুগন্ধি ধূপধুমের ন্যায় সন্ধ্যার বাতাসে মিশাইয়া গেল এবং দুইফোটা অশ্রুজল দুটি সুকোমল কুসুমকোরকের মতাে অজ্ঞাত দেবতার চরণের উদ্দেশে খসিয়া পড়িল।

{{nop}}