পাতা:গল্পগুচ্ছ (প্রথম খণ্ড).djvu/২৪৫: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
Mohaguru (আলোচনা | অবদান)
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh||মধ্যবর্তিনী|২৪১}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
একশিশি এসেন্স, কখনাে বা কিছু মিষ্টদ্রব্য কিনিয়া আনিয়া শৈলবালাকে গােপনে দিয়া যাইত। এমনি করিয়া একটুখানি ঘনিষ্ঠতার সূত্রপাত হয়। অবশেষে কখন একদিন হরসুন্দরী গৃহকার্যের অবকাশে আসিয়া দ্বারের ছিদ্র দিয়া দেখিল, নিবারণ এবং শৈলবালা বসিয়া কড়ি লইয়া দশ-পঁচিশ খেলিতেছে।
মধ্যবর্তিনী २8x

একশিশি এসেন্স, কখনো বা কিছু মিষ্টদ্রব্য কিনিয়া আনিয়া শৈলবালাকে গোপনে দিয়া যাইত। এমনি করিয়া একটুখানি ঘনিষ্ঠতার স্বত্রপাত হয় । অবশেষে কখন একদিন হরমুনারী গৃহকার্যের অবকাশে আসিয়া দ্বারের ছিদ্ৰ দিয়া দেখিল, নিবারণ এবং শৈলবালা বসিয়া কড়ি লইয়া দশ-পচিশ থেলিতেছে
বুড়া বয়সের এই খেলা বটে ! নিবারণ সকালে আহারাদি করিয়া যেন আপিসে বাহির হইল, কিন্তু আপিসে না গিয়া অন্তঃপুরে প্রবেশ করিয়াছে। এ প্রবঞ্চনার কী আবখ্যক ছিল । হঠাৎ একটা জলন্ত বজশলাকা দিয়া কে যেন হরমুন্দরীর চোখ খুলিয়া দিল, সেই তীব্রতাপে চোখের জল বাষ্প হইয়া শুকাইয়া গেল ।
{{gap}}বুড়া বয়সের এই খেলা বটে ! নিবারণ সকালে আহারাদি করিয়া যেন আপিসে বাহির হইল, কিন্তু আপিসে না গিয়া অন্তঃপুরে প্রবেশ করিয়াছে। এ প্রবঞ্চনার কী আবশ্যক ছিল। হঠাৎ একটা জ্বলন্ত বজ্রশলাকা দিয়া কে যেন হরসুন্দরীর চোখ খুলিয়া দিল, সেই তীব্রতাপে চোখের জল বাষ্প হইয়া শুকাইয়া গেল।

হরমুন্দরী মনে-মনে কহিল, ‘আমিই তো উহাকে ঘরে আনিলাম, আমিই তো মিলন করাইয়া দিলাম, তবে আমার সঙ্গে এমন ব্যবহার কেন— যেন আমি উহাদের সুথের কাটা ।”
{{gap}}হরসুন্দরী মনে-মনে কহিল, “আমিই তাে উহাকে ঘরে আনিলাম, আমিই তো মিলন করাইয়া দিলাম, তবে আমার সঙ্গে এমন ব্যবহার কেন— যেন আমি উহাদের সুখের কাটা।
হরম্বন্দরী শৈলবালাকে গৃহকার্য শিথাইত। একদিন নিবারণ মুখ ফুটিয়া বলিল, “ছেলেমানুষ, উহাকে তুমি বড়ো বেশি পরিশ্রম করাইতেছ, উহার শরীর তেমন সবল নহে ।”

বড়ো একটা তীব্র উত্তর হরমুন্দরীর মুখের কাছে আসিয়াছিল ; কিন্তু কিছু বলিল না, চুপ করিয়া গেল।
{{gap}}হরসুন্দরী শৈলবালাকে গৃহকার্য শিখাইত। একদিন নিবারণ মুখ ফুটিয়া বলিল, “ছেলেমানুষ, উহাকে তুমি বড় বেশি পরিশ্রম করাইতেছ, উহার শরীর তেমন সবল নহে।”
সেই অবধি বউকে কোনো গৃহকার্ধে হাত দিতে দিত না ; রাধাবাড়া দেখাশুনা সমস্ত কাজ নিজে করিত । এমন হইল, শৈলবালা অার নড়িয়া বসিতে পারে না, হরমুন্দরী দাসীর মতো তাহার সেবা করে এবং স্বামী বিদূষকের মতো তাহার মনোরঞ্জন করে। সংসারের কাজ করা, পরের দিকে তাকানো যে জীবনের কর্তব্য এ শিক্ষাই তাহার হইল না।

হরমুন্দরী যে নীরবে দাসীর মতো কাজ করিতে লাগিল তাহার মধ্যে ভারি একটা গর্ব আছে । তাহার মধ্যে নূ্যনতা এবং দীনতা নাই। সে কহিল, "তোমরা দুই শিশুতে মিলিয়া খেলা করো, সংসারের সমস্ত ভার আমি লইলাম ।’
{{gap}}বড় একটা তীব্র উত্তর হরসুন্দরীর মুখের কাছে আসিয়াছিল; কিন্তু কিছু বলিল না, চুপ করিয়া গেল।

{{gap}}সেই অবধি বউকে কোনাে গৃহকার্যে হাত দিতে দিত না; রাঁধাবাড়া দেখাশুনা সমস্ত কাজ নিজে করিত। এমন হইল, শৈলবালা আর নড়িয়া বসিতে পারে না, হরসুন্দরী দাসীর মতো তাহার সেবা করে এবং স্বামী বিদূষকের মতাে তাহার মনােরঞ্জন করে। সংসারের কাজ করা, পরের দিকে তাকানাে যে জীবনের কর্তব্য এ শিক্ষাই তাহার হইল না।

{{gap}}হরসুন্দরী যে নীরবে দাসীর মতাে কাজ করিতে লাগিল তাহার মধ্যে ভারি একটা গর্ব আছে। তাহার মধ্যে ন্যূনতা এবং দীনতা নাই। সে কহিল, “তােমরা দুই শিশুতে মিলিয়া খেলা করো, সংসারের সমস্ত ভার আমি লইলাম।”

{{nop}}