পাতা:গল্পগুচ্ছ (প্রথম খণ্ড).djvu/২৪৬: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
Mohaguru (আলোচনা | অবদান)
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh|২৪২|গল্পগুচ্ছ|}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:

8& গল্পগুচ্ছ
< Ab .//t. তৃতীয় পরিচ্ছেদ
{{কেন্দ্র|'''তৃতীয় পরিচ্ছেদ'''}}

হায়, আজ কোথায় সে বল যে বলে হরমুন্দরী মনে করিয়াছিল স্বামীর জন্ত চিরজীবনকাল সে আপনার প্রেমের দাবির অর্ধেক অংশ অকাতরে ছাড়িয়া দিতে পারিবে । হঠাৎ একদিন পূর্ণিমার রাত্রে জীবনে যখন জোয়ার আসে, তখন দুই কুল প্লাবিত করিয়া মানুষ মনে করে, “আমার কোথাও সীমা নাই ।” তখন যে একটা বৃহৎ প্রতিজ্ঞা করিয়া বসে জীবনের সুদীর্ঘ ভাটার সময় সে প্রতিজ্ঞা রক্ষা করিতে তাহার সমস্ত প্রাণে টান পড়ে। হঠাৎ ঐশ্বর্ষের দিনে লেখনীর এক আঁচড়ে ষে দানপত্র লিখিয়া দেয় চিরদারিত্র্যের দিনে পলে পলে তিল তিল করিয়া তাহা শোধ করিতে হয়। তখন বুঝা যায়, মানুষ বড়ো দীন, হৃদয় বড়ো দুর্বল, তাহার ক্ষমতা অতি যৎসামান্ত ।

দীর্ঘ রোগাবসানে ক্ষীণ রক্তহীন পাণ্ডু কলেবরে হরমুন্দরী সে দিন শুক্ল দ্বিতীয়ার চাদের মতো একটি শীর্ণ রেখামাত্র ছিল ; সংসারে নিতান্ত লঘু হইয়া ভাসিতেছিল । মনে হইয়াছিল, "আমার যেন কিছুই না হইলেও চলে। ক্রমে শরীর বলী হইয়া উঠিল, রক্তের তেজ বাড়িতে লাগিল, তখন হরসুন্দরীর মনে কোথা হইতে একদল শরিক আসিয়া উপস্থিত হইল, তাহারা উচ্চৈঃস্বরে কহিল, ‘তুমি তো ত্যাগপত্র লিথিয়া বসিয়া আছ, কিন্তু আমাদের দাবি আমরা ছাড়িব না।’
{{gap}}হায়, আজ কোথায় সে বল যে বলে হরসুন্দরী মনে করিয়াছিল স্বামীর জন্য চিরজীবনকাল সে আপনার প্রেমের দাবির অর্ধেক অংশ অকাতরে ছাড়িয়া দিতে পারিবে। হঠাৎ একদিন পূর্ণিমার রাত্রে জীবনে যখন জোয়ার আসে, তখন দুই কুল প্লাবিত করিয়া মানুষ মনে করে, ‘আমার কোথাও সীমা নাই।’ তখন যে একটা বৃহৎ প্রতিজ্ঞা করিয়া বসে জীবনের সুদীর্ঘ ভাঁটার সময় সে প্রতিজ্ঞা রক্ষা করিতে তাহার সমস্ত প্রাণে টান পড়ে। হঠাৎ ঐশ্বর্যের দিনে লেখনীর এক আঁচড়ে যে দানপত্র লিখিয়া দেয় চিরদারিদ্রের দিনে পলে পলে তিল তিল করিয়া তাহা শোধ করিতে হয়। তখন বুঝা যায়, মানুষ বড়াে দীন, হৃদয় বড়াে দুর্বল, তাহার ক্ষমতা অতি যৎসামান্য।
হরমুন্দরী যে দিন প্রথম পরিষ্কাররূপে আপন অবস্থা বুঝিতে পারিল সে দিন নিবারণ ও শৈলবালাকে আপন শয়নগৃহ ছাড়িয়া দিয়া ভিন্ন গৃহে একাকিনী গিয়া শয়ন করিল।

আট বৎসর বয়সে বাসররাত্রে যে শয্যায় প্রথম শয়ন করিয়াছিল, আজ সাতাশ বৎসর পরে, সেই শয্যা ত্যাগ করিল। প্রদীপ নিভাইয়া দিয়া এই সধবা রমণী যখন অসহ্য হৃদয়ভার লইয়া তাহার নূতন বৈধব্যশয্যার উপরে আসিয়া পডিল তখন গলির অপর প্রান্তে একজন শৌখিন যুব বেহাগ রাগিণীতে মালিনীর গান গাহিতেছিল ; আর-একজন বায়া-তবলায় সংগত করিতেছিল এবং শ্রোতৃবন্ধুগণ সমের কাছে হা-হা করিয়া চীৎকার করিয়া উঠিতেছিল।
{{gap}}দীর্ঘ রােগাবসানে ক্ষীণ রক্তহীন পাণ্ডু কলেবরে হরসুন্দরী সে দিন শুক্ল দ্বিতীয়ার চাঁদের মতাে একটি শীর্ণ রেখামাত্র ছিল; সংসারে নিতান্ত লঘু হইয়া ভাসিতেছিল। মনে হইয়াছিল, ‘আমার যেন কিছুই না হইলেও চলে।’ ক্রমে শরীর বলী হইয়া উঠিল, রক্তের তেজ বাড়িতে লাগিল, তখন হরসুন্দরীর মনে কোথা হইতে একদল শরিক আসিয়া উপস্থিত হইল, তাহারা উচ্চৈঃস্বরে কহিল, “তুমি তাে ত্যাগপত্র লিখিয়া বসিয়া আছ, কিন্তু আমাদের দাবি আমরা ছাড়িব না।”

{{gap}}হরসুন্দরী যে দিন প্রথম পরিষ্কাররূপে আপন অবস্থা বুঝিতে পারিল সে দিন নিবারণ ও শৈলবালাকে আপন শয়নগৃহ ছাড়িয়া দিয়া ভিন্ন গৃহে একাকিনী গিয়া শয়ন করিল।

{{gap}}আট বৎসর বয়সে বাসররাত্রে যে শয্যায় প্রথম শয়ন করিয়াছিল, আজ সাতাশ বৎসর পরে, সেই শয্যা ত্যাগ করিল। প্রদীপ নিভাইয়া দিয়া এই সধবা রমণী যখন অসহ্য হৃদয়ভার লইয়া তাহার নূতন বৈধব্যশয্যার উপরে আসিয়া পডিল তখন গলির অপর প্রান্তে একজন শৌখিন যুবা বেহাগ রাগিণীতে মালিনীর গান গাহিতেছিল; আর-একজন বাঁয়া-তবলায় সংগত করিতেছিল এবং শ্রোতৃবন্ধুগণ সমের কাছে হা-হাঃ করিয়া চীৎকার করিয়া উঠিতেছিল।

{{nop}}