পাতা:গল্পগুচ্ছ (প্রথম খণ্ড).djvu/২৫৩: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
Mohaguru (আলোচনা | অবদান)
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh||মধ্যবর্তিনী|২৪৯}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{gap}}অবশেষে শৈলবালার শারীরিক সংকটের অবস্থায় গুরুতর পীড়া হইল, এমন কি গর্ভপাত হইবার উপক্রম হইল।
মধ্যবর্তিনী ૨83ગ

অবশেষে শৈলবালার শারীরিক সংকটের অবস্থায় গুরুতর পীড়া হইল, এমন কি গর্ভপাত হইবার উপক্রম হইল ।
নিবারণ হরসুন্দরীর দুই হাত ধরিয়া বলিল, “তুমি শৈলকে বাচাও।” হর সুন্দরী দিন নাই, রাত্রি নাই, শৈলবালার সেবা করিতে লাগিল । তিলমাত্র ক্রটি হইলে শৈল তাহাকে দুর্বাক্য বলিত, সে একটি উত্তরমাত্র করিত
{{gap}}নিবারণ হরসুন্দরীর দুই হাত ধরিয়া বলিল, “তুমি শৈলকে বাঁচাও।”
হরসুন্দরী দিন নাই, রাত্রি নাই, শৈলবালার সেবা করিতে লাগিল। তিলমাত্র ত্রুটি হইলে শৈল তাহাকে দুর্বাক্য বলিত, সে একটি উত্তরমাত্র করিত না।

না !
শৈল কিছুতেই সাগু থাইতে চাহিত না, বাটিমৃদ্ধ ছুড়িয়া ফেলিত, জরের সময় কাচা আমের অম্বল দিয়া ভাত থাইতে চাহিত । না পাইলে রাগিয়া, কাদিয়া, অনৰ্থপাত করিত। হরমুন্দরী তাহাকে 'লক্ষ্মী আমার' 'বোন আমার’ ‘দিদি আমার বলিয়া শিশুর মতো ভুলাইতে চেষ্টা করিত।
{{gap}}শৈল কিছুতেই সাগু খাইতে চাহিত না, বাটিসুদ্ধ ছুঁড়িয়া ফেলিত, জ্বরের সময় কাঁচা আমের অম্বল দিয়া ভাত খাইতে চাহিত। না পাইলে রাগিয়া, কাঁদিয়া, অনর্থপাত করিত। হরসুন্দরী তাহাকে ‘লক্ষ্মী আমার’ ‘বােন আমার’ ‘দিদি আমার’ বলিয়া শিশুর মতো ভুলাইতে চেষ্টা করিত।

কিন্তু শৈলবালা বঁচিল না । সংসারের সমস্ত সোহাগ আদর লইয়া পরম অমুখ ও অসন্তোষে বালিকার ক্ষুদ্র অসম্পূর্ণ ব্যর্থ জীবন নষ্ট হইয়া গেল ।
{{gap}}কিন্তু শৈলবালা বাঁচিল না। সংসারের সমস্ত সােহাগ আদর লইয়া পরম অসুখ ও অসন্তোষে বালিকার ক্ষুদ্র অসম্পূর্ণ ব্যর্থ জীবন নষ্ট হইয়া গেল।
সপ্তম পরিচ্ছেদ

নিবারণের প্রথমে খুব একটা আঘাত লাগিল ; পরক্ষণেই দেখিল তাহার একটা মস্ত বাধন ছিড়িয়া গিয়াছে । শোকের মধ্যেও হঠাৎ তাহার একটা মুক্তির আনন্দ বোধ হইল । হঠাৎ মনে হইল এতদিন তাহার বুকের উপর একটা দুঃস্বপ্ন চাপিয়া ছিল । চৈতন্য হইয়া মুহূর্তের মধ্যে জীবন নিরতিশয় লঘু হইয়া গেল। মাধবীলতাটির মতো এই-যে কোমল জীবনপাশ ছিড়িয়া গেল এই কি তাহার আদরের শৈলবালা । হঠাৎ নিশ্বাস টানিয়া দেখিল, না, সে তাহার উদবন্ধনরজ্জ্ব ।

আর, তাহার চিরজীবনের সঙ্গিনী হরসুন্দরী ? দেখিল;সেই তো তাহার সমস্ত সংসার একাকিনী অধিকার করিয়া তাহার জীবনের সমস্ত সুখদুঃখের স্মৃতিমন্দিরের মাঝখানে বসিয়া আছে- কিন্তু তবু মধ্যে একটা বিচ্ছেদ । ঠিক যেন একটি ক্ষুদ্র উজ্জ্বল সুন্দর নিষ্ঠুর ছুরি অসিয়া একটি হৃৎপিণ্ডের দক্ষিণ এবং বাম অংশের মাঝখানে বেদনাপূর্ণ বিদারণরেখা টানিয়া দিয়া
{{কেন্দ্র|'''সপ্তম পরিচ্ছেদ'''}}
গেছে ।

{{gap}}নিবারণের প্রথমে খুব একটা আঘাত লাগিল; পরক্ষণেই দেখিল তাহার একটা মস্ত বাঁধন ছিড়িয়া গিয়াছে। শােকের মধ্যেও হঠাং তাহার একটা মুক্তির আনন্দ বােধ হইল। হঠাৎ মনে হইল এতদিন তাহার বুকের উপর একটা দুঃস্বপ্ন চাপিয়া ছিল। চৈতন্য হইয়া মুহূর্তের মধ্যে জীবন নিরতিশয় লঘু হইয়া গেল। মাধবীলতাটির মতাে এই-যে কোমল জীবনপাশ ছিঁড়িয়া গেল এই কি তাহার আদরের শৈলবাল। হঠাৎ নিশ্বাস টানিয়া দেখিল, না, সে তাহার উদ্‌বন্ধনরজ্জু।

{{gap}}আর, তাহার চিরজীবনের সঙ্গিনী হরসুন্দরী ? দেখিল সেই তো তাহার সমস্ত সংসার একাকিনী অধিকার করিয়া তাহার জীবনের সমস্ত সুখদুঃখের স্মৃতিমন্দিরের মাঝখানে বসিয়া আছে— কিন্তু তবু মধ্যে একটা বিচ্ছেদ। ঠিক যেন একটি ক্ষুদ্র উজ্জ্বল সুন্দর নিষ্ঠুর ছুরি আসিয়া একটি হৃৎপিণ্ডের দক্ষিণ এবং বাম অংশের মাঝখানে বেদনাপূর্ণ বিদারণরেখা টানিয়া দিয়া গেছে।

{{nop}}