পাতা:গল্পগুচ্ছ (প্রথম খণ্ড).djvu/২৫৫: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
Mohaguru (আলোচনা | অবদান)
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{কেন্দ্র|{{xx-larger|'''অসম্ভব কথা'''}}}}
অসম্ভব কথা

এক যে ছিল রাজা । তখন ইহার বেশি কিছু জানিবার আবশ্বক ছিল না। কোথাকার রাজা, রাজার নাম কী, এ সকল প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিয়া গল্পের প্রবাহ রোধ করিতাম না । রাজার নাম শিলাদিত্য কি শালিবাহন, কাশী কাঞ্চি কনৌজ কোশল অঙ্গ বঙ্গ কলিঙ্গের মধ্যে ঠিক কোনখানটিতে তাহার রাজত্ব, এ-সকল ইতিহাসভূগোলের তর্ক আমাদের কাছে নিতান্তই তুচ্ছ ছিল ; আসল যে কথাটি শুনিলে আস্তর পুলকিত হইয়া উঠিত এবং সমস্ত হৃদয় এক মুহূর্তের মধ্যে বিদ্যুবেগে চুম্বকের মতো আকৃষ্ট হইত সেটি হইতেছে— এক যে ছিল রাজা ।
{{gap}}এক যে ছিল রাজা।
এখনকার পাঠক যেন একেবারে কোমর বাধিয়া বসে। গোড়াতেই ধরিয়া লয়, লেখক মিথ্যা কথা বলিতেছে। সেইজন্ত অত্যস্ত সেয়ানার মতো মুখ করিয়া জিজ্ঞাসা করে, “লেখকমহাশয়, তুমি যে বলিতেছ এক ধে ছিল রাজা, আচ্ছ বলে দেখি কে ছিল সেই রাজা ।”

লেখকেরা ৪ সেয়ানা হইয়া উঠিয়াছে ; তাহারা প্রকাও প্রত্নতত্ত্ব-পণ্ডিতের মতো মুখমণ্ডল চতুগুণ মণ্ডলাকার করিয়া বলে, “এক যে ছিল রাজা তাহার নাম ছিল অজাতশত্রু ।”
{{gap}}তখন ইহার বেশি কিছু জানিবার আবশ্যক ছিল না। কোথাকার রাজা, রাজার নাম কী, এ সকল প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিয়া গল্পের প্রবাহ বােধ করিতাম না। রাজার নাম শিলাদিত্য কি শালিবাহন, কাশী কাঞ্চি কনােজ কোশল অঙ্গ বঙ্গ কলিঙ্গের মধ্যে ঠিক কোনটিতে তাহার রাজত্ব, এ-সকল ইতিহাস-ভূগােলের তর্ক আমাদের কাছে নিতান্তই তুচ্ছ ছিল; আসল যে কথাটি শুনিলে অন্তর পুলকিত হইয়া উঠিত এবং সমস্ত হৃদয় এক মুহূর্তের মধ্যে বিদ্যুদ্‌বেগে চুম্বকের মতাে আকৃষ্ট হইত সেটি হইতেছে- এক যে ছিল রাজা।
পাঠক চোখ টিপিয়া জিজ্ঞাসা করে, “অজাতশত্রু ! ভালো, কোন অজাতশত্রু বলে দেখি

লেখক অবিচলিত মুখভাব ধারণ করিয়া বলিয়া যায়, “অজাতশত্রু ছিল তিনজন। একজন খৃস্টজন্মের তিন সহস্ৰ বৎসর পূর্বে জন্মগ্রহণ করিয়া দুই বৎসর আট মাস বয়ঃক্রমকালে মৃত্যুমুখে পতিত হন। দুঃখের বিষয়, তাহার জীবনের বিস্তারিত বিবরণ কোনো গ্রস্থেই পাওয়া যায় না ।” অবশেষে দ্বিতীয় অজাতশত্রু সম্বন্ধে দশজন ঐতিহাসিকের দশ বিভিন্ন মত সমালোচনা শেষ করিয়া ধখন গ্রন্থের নায়ক তৃতীয় অজাতশত্রু পর্যস্ত আসিয়া পৌছায় তখন পাঠক বলিয়া উঠে, "ওরে বাস রে, কী পাণ্ডিত্য। এক গল্প শুনিতে আসিয়া কত শিক্ষাই হইল। এই লোকটাকে আর অবিশ্বাস করা যাইতে পারে না।
{{gap}}এখনকার পাঠক যেন একেবারে কোমর বাঁধিয়া বসে। গােড়াতেই ধরিয়া লয়, লেখক মিথ্যা কথা বলিতেছে। সেইজন্য অত্যন্ত সেয়ানার মতো মুখ করিয়া জিজ্ঞাসা করে, “লেখকমহাশয়, তুমি যে বলিতেছ এক যে ছিল রাজা, আচ্ছা বলাে দেখি কে ছিল সেই রাজা।”
ר ל

{{gap}}লেখকেরাও সেয়ানা হইয়া উঠিয়াছে ; তাহারা প্রকাণ্ড প্রত্নতত্ত্ব-পণ্ডিতের মতো মুখমণ্ডল চতুগুণ মণ্ডলাকার করিয়া বলে, “এক যে ছিল রাজা তাহার নাম ছিল অজাতশত্রু।”

{{gap}}পাঠক চোখ টিপিয়া জিজ্ঞাসা করে, অজাতশত্রু! ভালাে, কোন অজাত-শত্রু বলো দেখি।”

{{gap}}লেখক অবিচলিত মুখভাব ধারণ করিয়া বলিয়া যায়, “অজাতশত্রু ছিল তিনজন। একজন খৃস্টজন্মের তিন সহস্র বৎসর পূর্বে জন্মগ্রহণ করিয়া দুই বৎসর আট মাস বয়ঃক্রমকালে মৃত্যুমুখে পতিত হন। দুঃখের বিষয়, তাঁহার জীবনের বিস্তারিত বিবরণ কোনাে গ্রন্থেই পাওয়া যায় না। অবশেষে দ্বিতীয় অজাতশত্রু সম্বন্ধে দশজন ঐতিহাসিকের দশ বিভিন্ন মত সমালােচনা শেষ করিয়া যখন গ্রন্থের নায়ক তৃতীয় অজাতশত্রু পর্যন্ত আসিয়া পৌঁছায় তখন পাঠক বলিয়া উঠে, “ওরে বাস রে, কী পাণ্ডিত্য। এক গল্প শুনিতে আসিয়া কত শিক্ষাই হইল। এই লােকটাকে আর অবিশ্বাস করা যাইতে পারে না।

{{nop}}