পাতা:গল্পগুচ্ছ (তৃতীয় খণ্ড).djvu/৮৫: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
Ahad.a007 (আলোচনা | অবদান)
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh||রাসমণির ছেলে|৫৯৫}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{gap}}পৃথিবীতে মূল্য না দিয়া যে কিছুই পাওয়া যায় না এবং সে মূল্য যে দুঃখের
রাসমণির ছেলে (పిd;
পথিবীতে মল্য না দিয়া যে কিছুই পাওয়া যায় না এবং সে মাল্য যে দুঃখের মল্য, মাতার অন্তরঙ্গ হইয়া সে কথা কালীপদ প্রতিদিন যতই বঝিতে পারিল ততই দেখিতে দেখিতে সে যেন ভিতরের দিক হইতে বড়ো হইয়া উঠিতে লাগিল। সকল কাজেই এখন সে তার মাতার দক্ষিণপাশেব" আসিয়া দাঁড়াইল । সংসারের ভার বহিতে হইবে, সংসারের ভার বাড়াইতে হইবে না, এ কথা বিনা উপদেশবাক্যেই তাহার রক্তের সঙ্গেই মিশিয়া গেল।
মূল্য, মাতার অন্তরঙ্গ হইয়া সে কথা কালীপদ প্রতিদিন যতই বুঝিতে পারিল
ততই দেখিতে দেখিতে সে যেন ভিতরের দিক হইতে বড়ো হইয়া উঠিতে লাগিল।
সকল কাজেই এখন সে তার মাতার দক্ষিণপার্শ্বে আসিয়া দাঁড়াইল। সংসারের ভার
বহিতে হইবে, সংসারের ভার বাড়াইতে হইবে না, এ কথা বিনা উপদেশবাক্যেই তাহার
রক্তের সঙ্গেই মিশিয়া গেল।
<br>
জীবনের দায়িত্ব গ্রহণ করিবার জন্য তাহাকে প্রস্তুত হইতে হইবে, এই কথা স্মরণ রাখিয়া কালীপদ প্রাণপণে পড়িতে লাগিল। ছাত্রবত্তি পরীক্ষার উত্তীণ হইয়া যখন সে ছাত্রবত্তি পাইল তখন ভবানীচরণ মনে করিলেন, আর বেশি পড়াশনার দরকার নাই, এখন কালীপদ তাঁহাদের বিষয়কম দেখায় প্রবত্ত হউক।
{{gap}}জীবনের দায়িত্ব গ্রহণ করিবার জন্য তাহাকে প্রস্তুত হইতে হইবে, এই কথা
কালীপদ মাকে আসিয়া কহিল, “কলিকাতায় গিয়া পড়াশনা না করিতে পারিলে আমি তো মানুষ হইতে পারিব না।”
স্মরণ রাখিয়া কালীপদ প্রাণপণে পড়িতে লাগিল। ছাত্রবৃত্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া
মা বলিলেন, “সে তো ঠিক কথা, বাবা। কলিকাতায় তো যাইতেই হইবে।” কালীপদ কহিল, “আমার জন্য কোনো খরচ করিতে হইবে না। এই বত্তি হইতেই চালাইয়া দিব—এবং কিছু কাজকমেরও জোগাড় করিয়া লইব ।”
যখন সে ছাত্রবৃত্তি পাইল তখন ভবানীচরণ মনে করিলেন, আর বেশি পড়াশুনার
ভবানীচরণকে রাজি করাইতে অনেক কষ্ট পাইতে হইল। দেখিবার মতো বিষয়সম্পত্তি যে কিছুই নাই, সে কথা বলিলে ভবানীচরণ অত্যন্ত দুঃখবোধ করেন, তাই রাসমণিকে সে যুক্তিটা চাপিয়া যাইতে হইল। তিনি বলিলেন, “কালীপদকে তো মানুষ হইতে হইবে।” কিন্তু, পরষানক্রমে কোনোদিন শানিয়াড়ির বাহিরে না গিয়াই তো চৌধুরীরা এতকাল মানুষ হইয়াছে। বিদেশকে তাঁহারা যমপরীর মতো ভয় করেন। কালীপদর মতো বালককে একলা কলিকাতায় পাঠাইবার প্রস্তাবমাত্র কী করিয়া কাহারও মাথায় আসিতে পারে, তিনি ভাবিয়া পাইলেন না। অবশেষে গ্রামের সব প্রধান বন্ধিমান ব্যক্তি বগলাচরণ পর্যন্ত রাসমণির মতে মত দিল। সে বলিল, "কালীপদ একদিন উকিল হইয়া সেই উইল-চুরি ফাঁকির শোধ দিবে, নিশ্চয়ই এ তাহার ভাগ্যের লিখন—অতএব কলিকাতায় যাওয়া হইতে কেহই তাহাকে নিবারণ করিতে পারবে না।”
দরকার নাই, এখন কালীপদ তাঁহাদের বিষয়কর্ম দেখায় প্রবৃত্ত হউক।
এ কথা শুনিয়া ভবানীচরণ অনেকটা সাত্বনা পাইলেন। গামছায় বাঁধা পরানো সমস্ত নথি বাহির করিয়া উইল-চুরি লইয়া কালীপদর সঙ্গে বারবার আলোচনা করতে লাগিলেন। সম্প্রতি মাতার মন্ত্রীর কাজটা কালীপদ বেশ বিচক্ষণতার সঙ্গেই চালাইতেছিল, কিন্তু পিতার মন্ত্রণাসভায় সে জোর পাইল না। কেননা, তাহাদের পরিবারের এই প্রাচীন অন্যায়টা সম্বন্ধে তাহার মনে যথেষ্ট উত্তেজনা ছিল না। তব, সে পিতার কথায় সীয় দিয়া গেল। সীতাকে উদ্ধার করিবার জন্য বীরশ্রেষ্ঠ রাম যেমন লঙ্কায় যাত্রা করিয়াছিলেন, কালীপদর কলিকাতায় যারাকেও ভবানীচরণ তেমনি খবে বড়ো করিয়া দেখিলেন-সে কেবল সামান্য পাস করার ব্যাপার নয়— ঘরের ठाक्रीटक घट्द्र शिश्नाइँझा आमिदाख्न ठाटझाछन ।
<br>
কলিকাতায় যাইবার আগের দিন রাসমণি কালীপদর গলার একটি রক্ষাকবচ ঝালাইয়া দিলেন; এবং তাহার হাতে একটি পঞ্চাশ টাকার নোট দিয়া বলিয়া দিলেন, “এই নোটটি রাখিয়ো, আপদে বিপদে প্রয়োজনের সময় কাজে লাগিবে।” সংসার-খরচ
{{gap}}কালীপদ মাকে আসিয়া কহিল, “কলিকাতায় গিয়া পড়াশুনা না করিতে পারিলে
আমি তাে মানুষ হইতে পারিব না।”
<br>
{{gap}}মা বলিলেন, “সে তাে ঠিক কথা, বাবা। কলিকাতায় তাে যাইতেই হইবে।”
<br>
{{gap}}কালীপদ কহিল, “আমার জন্য কোনাে খরচ করিতে হইবে না। এই বৃত্তি হইতেই
চালাইয়া দিব— এবং কিছু কাজকর্মেরও জোগাড় করিয়া লইব।”
<br>
{{gap}}ভবানীচরণকে রাজি করাইতে অনেক কষ্ট পাইতে হইল। দেখিবার মতাে বিষয়-সম্পত্তি যে কিছুই নাই, সে কথা বলিলে ভবানীচরণ অত্যন্ত দুঃখবােধ করেন, তাই
রাসমণিকে সে যুক্তিটা চাপিয়া যাইতে হইল। তিনি বলিলেন, “কালীপদকে তাে
মানুষ হইতে হইবে।” কিন্তু, পুরুষানুক্রমে কোনােদিন শানিয়াড়ির বাহিরে না গিয়াই
তো চৌধুরীরা এতকাল মানুষ হইয়াছে। বিদেশকে তাঁহারা যমপুরীর মতাে ভয়
করেন। কালীপদর মতাে বালককে একলা কলিকাতায় পাঠাইবার প্রস্তাবমাত্র কী
করিয়া কাহারও মাথায় আসিতে পারে, তিনি ভাবিয়া পাইলেন না। অবশেষে গ্রামের
সর্বপ্রধান বুদ্ধিমান ব্যক্তি বগলাচরণ পর্যন্ত রাসমণির মতে মত দিল। সে বলিল,
“কালীপদ একদিন উকিল হইয়া সেই উইল-চুরি ফাঁকির শােধ দিবে, নিশ্চয়ই এ
তাহার ভাগ্যের লিখন— অতএব কলিকাতায় যাওয়া হইতে কেহই তাহাকে নিবারণ
করিতে পারিবে না।”
<br>
{{gap}}এ কথা শুনিয়া ভবানীচরণ অনেকটা সান্ত্বনা পাইলেন। গামছায় বাঁধা পুরানো
সমস্ত নথি বাহির করিয়া উইল-চুরি লইয়া কালীপদর সঙ্গে বারবার আলােচনা
করিতে লাগিলেন। সম্প্রতি মাতার মন্ত্রীর কাজটা কালীপদ বেশ বিচক্ষণতার সঙ্গেই
চালাইতেছিল, কিন্তু পিতার মন্ত্রণাসভায় সে জোর পাইল না। কেননা, তাহাদের
পরিবারের এই প্রাচীন অন্যায়টা সম্বন্ধে তাহার মনে যথেষ্ট উত্তেজনা ছিল না। তবু
সে পিতার কথায় সাঁয় দিয়া গেল। সীতাকে উদ্ধার করিবার জন্য বীরশ্রেষ্ঠ রাম যেমন
লঙ্কায় যাত্রা করিয়াছিলেন, কালীপদর কলিকাতায় যাত্রাকেও ভবানীচরণ তেমনি
খুব বড়াে করিয়া দেখিলেন— সে কেবল সামান্য পাস করার ব্যাপার নয়— ঘরের
লক্ষ্মীকে ঘরে ফিরাইয়া আনিবার আয়ােজন।
<br>
{{gap}}কলিকাতায় যাইবার আগের দিন রাসমণি কালীপদর গলায় একটি রক্ষাকবচ
ঝুলাইয়া দিলেন; এবং তাহার হাতে একটি পঞ্চাশ টাকার নোট দিয়া বলিয়া দিলেন,
“এই নোটটি রাখিয়াে, আপদে বিপদে প্রয়ােজনের সময় কাজে লাগিবে।” সংসার-খরচ