পাতা:গল্পগুচ্ছ (তৃতীয় খণ্ড).djvu/৯৩: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
Ahad.a007 (আলোচনা | অবদান)
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh||রাসমণির ছেলে|৬০৩}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
তাহার এই নােট লইয়া গিয়াছে। চোরে চুরি করিলেও তাহার মনে এত বাজিত না।
রাসমণির ছেলে も○○
তাহার মনে হইতে লাগিল, যেন ধনমদগর্বিত যুবকেরা তাহার মায়ের গায়ে হাত
তাহার এই নোট লইয়া গিয়াছে। চোরে চুরি করিলেও তাহার মনে এত বাজিত না। তাহার মনে হইতে লাগিল, যেন ধনমদগবিত যুবকেরা তাহার মায়ের গায়ে হাত তুলিয়াছে। এতদিন কালীপদ এই মেসে আছে, এই সিড়িটাকু বাহিয়া একদিনও সে উপরের তলায় পদাপণও করে নাই। আজ— তাহার গায়ে সেই ছোড়া গেঞ্জি, পায়ে জতা নাই, মনের আবেগে এবং মাথা ধরার উত্তেজনায় তাহার মুখ লাল হইয়া উঠিয়াছে—সবেগে সে উপরে উঠিয়া পড়িল ।
তুলিয়াছে। এতদিন কালীপদ এই মেসে আছে, এই সিঁড়িটুকু বাহিয়া একদিনও
আজ রবিবার-কলেজে যাইবার উপসগ" ছিল না, কাঠের ছাদ-ওয়ালা বারান্দায় বন্ধগণ কেহ বা চৌকিতে, কেহ বা বেতের মোড়ায় বসিয়া, হাস্যালাপ করিতেছিল। কালীপদ তাহাদের মাঝখানে ছটিয়া পড়িয়া ক্লোধগদগদম্বরে বলিয়া উঠিল, “দিন, আমার নোট দিন।”
সে উপরের তলায় পদার্পণও করে নাই। আজ—তাহার গায়ে সেই ছেঁড়া গেঞ্জি, পায়ে
যদি সে মিনতির সরে বলিত তবে ফল পাইত সন্দেহ নাই। কিন্তু, উন্মত্তবৎ ক্লান্ধমতি দেখিয়া শৈলেন অত্যন্ত খাপা হইয়া উঠিল। যদি তাহার বাড়ির দারোয়ান থাকিত তবে তাহাকে দিয়া এই অসভ্যকে কান ধরিয়া দরে করিয়া দিত, সন্দেহ নাই। সকলেই দাঁড়াইয়া উঠিয়া একত্রে গজন করিয়া উঠিল, “কী বলেন, মশায়! কিসের নোট!"
জুতা নাই, মনের আবেগে এবং মাথা ধরার উত্তেজনায় তাহার মুখ লাল হইয়া
কালীপদ কহিল, “আমার বাক্স থেকে আপনারা নোট নিয়ে এসেছেন।” "এত বড়ো কথা! আমাদের চোর বলতে চান!” কালীপদর হাতে যদি কিছু থাকিত তবে সেই মহেতেই সে খনোখনি করিয়া ফেলিত। তাহার রকম দেখিয়া চার-পাঁচ জনে মিলিয়া তাহার হাত চাপিয়া ধরিল । সে জালবন্ধ বাঘের মতো গমেরাইতে লাগিল ।
উঠিয়াছ—সবেগে সে উপরে উঠিয়া পড়িল।
এই অন্যায়ের প্রতিকার করিবার তাহার কোনো শক্তি নাই, কোনো প্রমাণ নাই— সকলেই তাহার সন্দেহকে উন্মত্ততা বলিয়া উড়াইয়া দিবে। যাহারা তাহাকে মৃত্যুবাণ মারিয়াছে তাহারা তাহার ঔদ্ধতাকে অসহ্য বলিয়া বিষম আসফালন করিতে লাগিল । সে রাত্তি যে কালীপদর কেমন করিয়া কাটিল তাহা কেহ জানিতে পারিল না। শৈলেন একখানা এক-শো টাকার নোট বাহির করিয়া বলিল, “দাও, বাঙালটাকে দিয়ে এসো গে যাও 1"
<br>
সহচররা কহিল, “পাগল হয়েছ! তেজটুকু আগে মরকে—আমাদের সকলের কাছে একটা রিটন অ্যাপলজি আগে দিক, তার পরে বিবেচনা করে দেখা যাবে।”
{{gap}}আজ রবিবার–কলেজে যাইবার উপসর্গ ছিল না, কাঠের ছাদ-ওয়ালা বারান্দায়
যথাসময়ে সকলে শুইতে গেল এবং ঘামাইয়া পড়িতেও কাহারও বিলম্ব হইল না। সকালে কালীপদর কথা প্রায় সকলে ভুলিয়াই গিয়াছিল। সকালে কেহ কেহ সিড়ি দিয়া নীচে নামিবার সময় তাহার ঘর হইতে কথা শুনিতে পাইল। ভাবিল, হয়তো উকিল ডাকিয়া পরামর্শ করিতেছে। দরজা ভিতর হইতে খিল-লাগানো । বাহিরে কান পাতিয়া যাহা শুনিল তাহার মধ্যে আইনের কোনো সংস্রব নাই, সমস্ত অসম্প্রথ প্ৰলাপ।
বন্ধুগণ কেহ বা চৌকিতে, কেহ বা বেতের মােড়ায় বসিয়া, হাস্যালাপ করিতেছিল।
উপরে গিয়া শৈলেনকে খবর দিল । শৈলেন নামিয়া আসিয়া দরজার বাহিরে আসিয়া দাঁড়াইল। কালীপদ কী-যে বকিতেছে ভালো বোঝা যাইতেছে না, কেবল ক্ষণে ক্ষণে বাবা’ বাবা’ করিয়া চীৎকার করিয়া উঠিতেছে।
কালীপদ তাহাদের মাঝখানে ছুটিয়া পড়িয়া ক্রোধগদগদস্বরে বলিয়া উঠিল, “দিন,
ভয় হইল, হয়তো সে নোটের শোকে পাগল হইয়া গিয়াছে। বাহির হইতে দই
আমার নােট দিন।”
<br>
{{gap}}যদি সে মিনতির সুরে বলিত তবে ফল পাইত সন্দেহ নাই। কিন্তু, উন্মত্তবৎ
ক্রুদ্ধমূূর্তি দেখিয়া শৈলেন অত্যন্ত খাপা হইয়া উঠিল। যদি তাহার বাড়ির দারােয়ান
থাকিত তবে তাহাকে দিয়া এই অসভ্যকে কান ধরিয়া দূর করিয়া দিত, সন্দেহ নাই।
সকলেই দাঁড়াইয়া উঠিয়া একত্রে গর্জন করিয়া উঠিল, “কী বলেন, মশায়! কিসের
নােট!”
<br>
{{gap}}কালীপদ কহিল, “আমার বাক্স থেকে আপনারা নােট নিয়ে এসেছেন।”
<br>
{{gap}}“এত বড়াে কথা! আমাদের চোর বলতে চান!”
<br>
{{gap}}কালীপদর হাতে যদি কিছু থাকিত তবে সেই মুহূর্তেই সে খুনােখুনি করিয়া
ফেলিত। তাহার রকম দেখিয়া চার-পাঁচ জনে মিলিয়া তাহার হাত চাপিয়া ধরিল।
সে জালবদ্ধ বাঘের মতাে গুমরাইতে লাগিল।
<br>
{{gap}}এই অন্যায়ের প্রতিকার করিবার তাহার কোনাে শক্তি নাই, কোনাে প্রমাণ নাই—সকলেই তাহার সন্দেহকে উন্মত্ততা বলিয়া উড়াইয়া দিবে। যাহারা তাহাকে মৃত্যুবাণ
মারিয়াছে তাহারা তাহার ঔদ্ধত্যকে অসহ্য বলিয়া বিষম আস্ফালন করিতে লাগিল।
<br>
{{gap}}সে রাত্রি যে কালীপদর কেমন করিয়া কাটিল তাহা কেহ জানিতে পারিল না।
শৈলেন একখানা এক-শাে টাকার নােট বাহির করিয়া বলিল, “দাও, বাঙালটাকে দিয়ে
এসাে গে যাও।”
<br>
{{gap}}সহচররা কহিল, “পাগল হয়েছ! তেজটুকু আগে মরুক—আমাদের সকলের
কাছে একটা রিটন্ অ্যাপলজি আগে দিক, তার পরে বিবেচনা করে দেখা যাবে।”
<br>
{{gap}}যথাসময়ে সকলে শুইতে গেল এবং ঘুমাইয়া পড়িতেও কাহারও বিলম্ব হইল না।
সকালে কালীপদর কথা প্রায় সকলে ভুলিয়াই গিয়াছিল। সকালে কেহ কেহ সিঁড়ি
দিয়া নীচে নামিবার সময় তাহার ঘর হইতে কথা শুনিতে পাইল। ভাবিল, হয়তাে
উকিল ডাকিয়া পরামর্শ করিতেছে। দরজা ভিতর হইতে খিল-লাগানাে। বাহিরে
কান পাতিয়া যাহা শুনিল তাহার মধ্যে আইনের কোনাে সংস্রব নাই, সমস্ত অসম্বন্ধ
প্রলাপ।
<br>
{{gap}}উপরে গিয়া শৈলেনকে খবর দিল। শৈলেন নামিয়া আসিয়া দরজার বাহিরে
আসিয়া দাঁড়াইল। কালীপদ কী-যে বকিতেছে ভালাে বােঝা যাইতেছে না, কেবল
ক্ষণে ক্ষণে ‘বাবা’ ‘বাবা’ করিয়া চীৎকার করিয়া উঠিতেছে।
<br>
{{gap}}ভয় হইল, হয়তাে সে নােটের শোকে পাগল হইয়া গিয়াছে। বাহির হইতে দুই-