পাতা:গল্পগুচ্ছ (তৃতীয় খণ্ড).djvu/১০৬: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা |
|||
পাতার অবস্থা | পাতার অবস্থা | ||
- | + | মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে | |
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না): | শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না): | ||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
{{rh|৬১৬|গল্পগুচ্ছ|}} |
|||
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে): | পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে): | ||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
জ্বালা হইয়াছে। বরসজ্জা করিয়া রসিকের বিবাহ হইতেছে, এই আনন্দের ছবি বংশীর |
|||
· ቆቁፅ গল্পগুচ্ছ |
|||
মনে তৃষ্ণার্তের সম্মুখে মৃগতৃষ্ণিকার মতাে কেবলই জাগিয়া আছে। |
|||
<br> |
|||
তব যথেষ্ট দ্রুত বেগে টাকা জমিতে চায় না। যত বেশি চেষ্টা করে ততই যেন সফলতাকে আরও বেশি দরবতী বলিয়া মনে হয়। বিশেষত মনের ইচ্ছার সঙ্গে শরীরটা সমান বেগে চলিতে চায় না, বারবার ভাঙিয়া ভাঙিয়া পড়ে। পরিশ্রমের মাত্রা দেহের শক্তিকে ছাড়াইয়া যাইবার জো করিয়াছে। |
|||
{{gap}}তবু যথেষ্ট দ্রুত বেগে টাকা জমিতে চায় না। যত বেশি চেষ্টা করে ততই যেন |
|||
যখন সমস্ত গ্রাম নিষ্প্ৰত, কেবল নিশা-নিশাচরীর চৌকিদারের মতো প্রহরে প্রহরে শগালের দল হাঁক দিয়া যাইতেছে, তখনো মিটমিটে প্রদীপে বংশী কাজ করিতেছে, এমন কত রাত ঘটিয়াছে। বাড়িতে তাহার এমন কেহই ছিল না যে তাহাকে নিষেধ করে। এ দিকে যথেষ্ট পরিমাণে পন্টিকর আহার হইতেও বংশী নিজেকে বঞ্চিত করিয়াছে। গায়ের শীতবসন্ত্রখানা জীণ হইয়া পড়িয়াছে, তাহা নানা ছিদ্রের খিড়কির পথ দিয়া গোপনে শীতকে ডাকিয়া-ডাকিয়াই আনে। গত দুই বৎসর হইতে প্রত্যেক শীতের সময়ই বংশী মনে করে, এইবারটা একরকম করিয়া চালাইয়া দিই, আর-একটা হাতে টাকা জমকে, আসছে বছরে যখন কাবুলিওয়ালা তাহার শীতবস্ত্রের বোঝা লইয়া গ্রামে আসিবে তখন একটা কাপড় ধারে কিনিয়া তাহার পরের বৎসরে শোধ করিব, ততদিনে তহবিল ভরিয়া উঠিবে।" সুবিধামতো বৎসর আসিল না । ইতিমধ্যে তাহার শরীর টেকে না এমন হইয়া আসিল । |
|||
সফলতাকে আরও বেশি দূরবর্তী বলিয়া মনে হয়। বিশেষত মনের ইচ্ছার সঙ্গে |
|||
এতদিন পরে বংশী তাহার ভাইকে বলিল, “তাঁতের কাজ আমি একলা চালাইয়া উঠিতে পারি না, তুমি আমার কাজে যোগ দাও।” রসিক কোনো জবাব না করিয়া মুখ বাঁকাইল। শরীরের অসুখে বংশীর মেজাজ খারাপ ছিল, সে রসিককে ভৎসনা করিল; কহিল, “বাপ-পিতামহের ব্যাবসা পরিত্যাগ করিয়া তুমি যদি দিনরাত হো-হো করিয়া বেড়াইবে তবে তোমার দশা হইবে কী।” |
|||
শরীরটা সমান বেগে চলিতে চায় না, বারবার ভাঙিয়া ভাঙিয়া পড়ে। পরিশ্রমের মাত্রা |
|||
কথাটা অসংগত নহে এবং ইহাকে কটক্তিও বলা যায় না। কিন্তু রসিকের মনে হইল, এত বড়ো অন্যায় তাহার জীবনে সে কোনোদিন সহ্য করে নাই। সেদিন বাড়িতে সে বড়ো একটা কিছু খাইল না; ছিপ হাতে করিয়া চন্দনীদহে মাছ ধরিতে বসিল। শীতের মধ্যাহ্ন নিমন্তব্ধ, ভাঙা উচু পাড়ির উপর শালিক নাচিতেছে, পশ্চাতের আমবাগানে ঘঘে ডাকিতেছে, এবং জলের কিনারায় শৈবালের উপর একটি পতঙ্গ তাহার সবচ্ছ দীঘ দুই পাখা মেলিয়া দিয়া সিথরভাবে রৌদ্র পোহাইতেছে। কথা ছিল, রসিক আজ গোপালকে লাঠিখেলা শিখাইবে— গোপাল তাহার আশর কোনো সম্ভাবনা না দেখিয়া রসিকের ভাঁড়ের মধ্যেকার মাছ ধরিবার কোঁচোগলাকে লইয়া অস্থিরভাবে ঘাঁটাঘাঁটি করিতে লাগিল—রসিক তাহার গালে ঠাস করিয়া এক চড় বসাইয়া দিল। কখন তাহার কাছে রসিক পান চাহিবে বলিয়া সৌরভী যখন ঘাটের পাশে ঘাসের উপর দই পা মেলিয়া অপেক্ষা করিয়া আছে এমন সময়ে রসিক হঠাৎ তাহাকে বলিল, “সৈরি, বড়ো ক্ষধা পাইয়াছে, কিছু খাবার আনিয়া দিতে পারিস ?” সৌরভী খুশি হইয়া তাড়াতাড়ি ছটিয়া গিয়া বাড়ি হইতে অচল ভরিয়া মড়িমড়াক আনিয়া উপস্থিত করিল ; রসিক সেদিন তাহার দাদার কাছেও ঘোষিল না। |
|||
দেহের শক্তিকে ছাড়াইয়া যাইবার জো করিয়াছে। |
|||
⚫ | |||
<br> |
|||
{{gap}}যখন সমস্ত গ্রাম নিষুপ্ত, কেবল নিশা-নিশাচরীর চৌকিদারের মতাে প্রহরে |
|||
প্রহরে শৃগালের দল হাঁক দিয়া যাইতেছে, তখনাে মিটমিটে প্রদীপে বংশী কাজ |
|||
করিতেছে, এমন কত রাত ঘটিয়াছে। বাড়িতে তাহার এমন কেহই ছিল না যে তাহাকে |
|||
নিষেধ করে। এ দিকে যথেষ্ট পরিমাণে পুষ্টিকর আহার হইতেও বংশী নিজেকে |
|||
বঞ্চিত করিয়াছে। গায়ের শীতবস্ত্রখানা জীর্ণ হইয়া পড়িয়াছে, তাহা নানা ছিদ্রের |
|||
খিড়কির পথ দিয়া গােপনে শীতকে ডাকিয়া-ডাকিয়াই আনে। গত দুই বৎসর হইতে |
|||
প্রত্যেক শীতের সময়ই বংশী মনে করে, ‘এইবারটা একরকম করিয়া চালাইয়া দিই, |
|||
আর-একটু হাতে টাকা জমুক, আসছে বছরে যখন কাবুলিওয়ালা তাহার শীতবস্ত্রের |
|||
বােঝা লইয়া গ্রামে আসিবে তখন একটা কাপড় ধারে কিনিয়া তাহার পরের বৎসরে |
|||
শােধ করিব, ততদিনে তহবিল ভরিয়া উঠিবে।’ সুবিধামতাে বৎসর আসিল না। |
|||
ইতিমধ্যে তাহার শরীর টেঁকে না এমন হইয়া আসিল। |
|||
<br> |
|||
{{gap}}এতদিন পরে বংশী তাহার ভাইকে বলিল, “তাঁতের কাজ আমি একলা চালাইয়া |
|||
উঠিতে পারি না, তুমি আমার কাজে যােগ দাও।” রসিক কোনাে জবাব না করিয়া |
|||
মুখ বাঁকাইল। শরীরের অসুখে বংশীর মেজাজ খারাপ ছিল, সে রসিককে ভর্ৎসনা |
|||
করিল; কহিল, “বাপ-পিতামহের ব্যাবসা পরিত্যাগ করিয়া তুমি যদি দিনরাত হাে-হাে |
|||
করিয়া বেড়াইবে তবে তােমার দশা হইবে কী।” |
|||
<br> |
|||
{{gap}}কথাটা অসংগত নহে এবং ইহাকে কটূক্তিও বলা যায় না। কিন্তু রসিকের মনে |
|||
হইল, এত বড়াে অন্যায় তাহার জীবনে সে কোনােদিন সহ্য করে নাই। সেদিন |
|||
বাড়িতে সে বড়াে একটা কিছু খাইল না; ছিপ হাতে করিয়া চন্দনীদহে মাছ ধরিতে |
|||
বসিল। শীতের মধ্যাহ্ন নিস্তব্ধ, ভাঙা উঁচু পাড়ির উপর শালিক নাচিতেছে, |
|||
পশ্চাতের আমবাগানে ঘুঘু ডাকিতেছে, এবং জলের কিনারায় শৈবালের উপর একটি |
|||
পতঙ্গ তাহার স্বচ্ছ দীর্ঘ দুই পাখা মেলিয়া দিয়া স্থিরভাবে রৌদ্র পােহাইতেছে। কথা |
|||
ছিল, রসিক আজ গােপালকে লাঠিখেলা শিখাইবে—গােপাল তাহার আশু কোনাে |
|||
সম্ভাবনা না দেখিয়া রসিকের ভাঁড়ের মধ্যেকার মাছ ধরিবার কেঁচোগুলাকে লইয়া |
|||
অস্থিরভাবে ঘাঁটাঘাঁটি করিতে লাগিল—রসিক তাহার গালে ঠাস্ করিয়া এক চড় |
|||
বসাইয়া দিল। কখন তাহার কাছে রসিক পান চাহিবে বলিয়া সৌরভী যখন ঘাটের |
|||
পাশে ঘাসের উপর দুই পা মেলিয়া অপেক্ষা করিয়া আছে এমন সময়ে রসিক হঠাৎ |
|||
তাহাকে বলিল, “সৈরি, বড়াে ক্ষুধা পাইয়াছে, কিছু খাবার আনিয়া দিতে পারিস?” |
|||
সৌরভী খুশি হইয়া তাড়াতাড়ি ছুটিয়া গিয়া বাড়ি হইতে আঁচল ভরিয়া মুড়িমুড়কি |
|||
আনিয়া উপস্থিত করিল। রসিক সেদিন তাহার দাদার কাছেও ঘেঁষিল না। |
|||
<br> |
|||
{{gap}}বংশীর শরীর মন খারাপ ছিল, রাত্রে সে তাহার বাপকে স্বপ্ন দেখিল। স্বপ্ন |
|||
⚫ |