পাতা:গল্পগুচ্ছ (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৩: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
Mohaguru (আলোচনা | অবদান)
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh|২২৪|গল্পগুচ্ছ|}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{gap}}জয়কালী অবিচলিত মুখে কহিলেন, “না।” মােক্ষদা ফিরিয়া গেল। অদূরবতী কুটিরের কক্ষ হইতে নলিনের করুণ ক্রন্দন ক্রমে ক্রোধের গর্জনে পরিণত হইয়া উঠিল— অবশেষে অনেক ক্ষণ পরে তাহার কাতরতার শ্রান্ত উচ্ছ্বাস থাকিয়া থাকিয়া জপনিরতা পিসিমার কানে আসিয়া ধনিত হইতে লাগিল।
२२8 গল্পগুচ্ছ

জয়কালী অবিচলিত মাখে কহিলেন, “না।” মোক্ষদা ফিরিয়া গেল। আদরেবতী” কুটিরের কক্ষ হইতে নলিনের করণ কুন্দন কমে ক্ৰোধের গজানে পরিণত হইয়া উঠিল— অবশেষে অনেক ক্ষণ পরে তাহার কাতরতার শ্রান্ত উচ্ছাস থাকিয়া থাকিয়া জপানরতা পিসিমার কানে আসিয়া ধৰনিত হইতে লাগিল।
নলিনের আতকণ্ঠ যখন পরিশ্রাত ও মৌনপ্রায় হইয়া আসিয়াছে এমন সময় আর-একটি জীবের ভীত কাতরধনি নিকটে ধবনিত হইতে লাগিল এবং সেই সঙ্গে ধাবমান মনষ্যের দরবতী চীৎকারশব্দ মিশ্রিত হইয়া মন্দিরের সম্মুখপথ পথে একটি তুমলে কলরব উথিত হইল।
{{gap}}নলিনের আর্তকণ্ঠ যখন পরিশ্রান্ত ও মৌনপ্রায় হইয়া আসিয়াছে এমন সময় আর-একটি জীবের ভীত কাতরধ্বনি নিকটে ধ্বনিত হইতে লাগিল এবং সেই সঙ্গে ধাবমান মনুষ্যের দূরবর্তী চীৎকারশব্দ মিশ্রিত হইয়া মন্দিরের সম্মুখস্থ পথে একটি তুমুল কলরব উত্থিত হইল।

সহসা প্রাঙ্গণের মধ্যে একটা পদশব্দ শোনা গেল। জয়কালী পশ্চাতে ফিরিয়া দেখিলেন, ভূপৰ্যন্ত মাধবীলতা আন্দোলিত হইতেছে।
{{gap}}সহসা প্রাঙ্গণের মধ্যে একটা পদশব্দ শােনা গেল। জয়কালী পশ্চাতে ফিরিয়া দেখিলেন, ভূপর্যন্ত মাধবীলতা আন্দোলিত হইতেছে।
সরোষকণ্ঠে ডাকিলেন, “নলিন!” কেহ উত্তর দিল না। বঝিলেন, অবাধ্য নলিন বন্দীশালা হইতে কোনোক্ৰমে পলায়ন করিয়া পনরায় তাঁহাকে রাগাইতে আসিয়াছে।

তখন অত্যন্ত কঠিনভাবে অধরের উপরে ওঠে চাপিয়া বিধবা প্রাঙ্গণে নামিয়া আসিলেন।
{{gap}}সরােষকণ্ঠে ডাকিলেন, “নলিন!”
লতাকুঞ্জের নিকট পনরায় ডাকিলেন, "নলিন " উত্তর পাইলেন না। শাখা তুলিয়া দেখিলেন, একটা অত্যন্ত মলিন শকের প্রাণভয়ে ঘন পল্লবের মধ্যে আশ্রয় লইয়াছে।

ষে লতাবিতান এই ইন্টকপ্রাচীরের মধ্যে বন্দাবিপিনের সংক্ষিপ্ত প্রতিরপ, যাহার বিকসিত কুসমমঞ্জরীর সৌরভ গোপীবদের সগন্ধি নিশ্বাস স্মরণ করাইয়া দেয় এবং কালিন্দীতীরবতী সখেবিহারের সৌন্দৰ্যবান জাগ্রত করিয়া তোলে—বিধবার সেই প্রাণাধিক যত্নের সাপবিত্র নন্দনভূমিতে অকমাৎ এই বীভৎস ব্যাপার ঘটিল!
{{gap}}কেহ উত্তর দিল না। বুঝিলেন, অবাধ্য নলিন বন্দীশালা হইতে কোনােক্ৰমে পলায়ন করিয়া পুনরায় তাঁহাকে রাগাইতে আসিয়াছে।
পজারি ব্রাহয়ণ লাঠি হতে তাড়া করিয়া আসিল। জয়কালী তৎক্ষণাৎ অগ্রসর হইয়া তাহাকে নিষেধ করিলেন এবং দ্রুতবেগে ভিতর হইতে মন্দিরের বার রাধ করিয়া দিলেন।

অনতিকাল পরেই সরোপানে-উন্মত্ত ডোমের দল মন্দিরের বারে উপস্থিত হইয়া তাহাদের বলির পশর জন্য চীৎকার করিতে লাগিল।
{{gap}}তখন অত্যন্ত কঠিনভাবে অধরের উপরে ওষ্ঠ চাপিয়া বিধবা প্রাঙ্গণে নামিয়া আসিলেন।
জয়কালী রন্ধ বারের পশ্চাতে দাঁড়াইয়া কহিলেন, “যা বেটারা, ফিরে যা! আমার মন্দির অপবিত্র করিস নে।”

ডোমের দল ফিরিয়া গেল। জয়কালী ঠাকুরানী যে তাঁহার রাধানাথ জীউর মন্দিরের মধ্যে অশুচি জন্তুকে আশ্রয় দিবেন, ইহা তাহারা প্রায় প্রত্যক্ষ দেখিয়াও বিশ্বাস করিতে পারিল না।
{{gap}}লতাকুঞ্জের নিকট পুনরায় ডাকিলেন, “নলিন!”
এই সামান্য ঘটনায় নিখিল জগতের সব জীবের মহাদেবতা পরম প্রসন্ন হইলেন কিন্তু ক্ষুদ্র পল্লীর সমাজনামধারী অতিক্ষদ্র দেবতাটি নিরতিশয় সংক্ষব্ধ হইয়া छैठेळ !

শ্রাবণ ১৩০১
{{gap}}উত্তর পাইলেন না। শাখা তুলিয়া দেখিলেন, একটা অত্যন্ত মলিন শুকর প্রাণভয়ে ঘন পল্লবের মধ্যে আশ্রয় লইয়াছে।

{{gap}}যে লতাবিতান এই ইষ্টকপ্রাচীরের মধ্যে বৃন্দাবিপিনের সংক্ষিপ্ত প্রতিরূপ, যাহার বিকসিত কুসমমঞ্জরীর সৌরভ গােপীবৃন্দের সুগন্ধি নিশ্বাস স্মরণ করাইয়া দেয় এবং কালিন্দীতীরবর্তী সুখবিহারের সৌন্দর্য্যস্বপ্ন জাগ্রত করিয়া তােলে—বিধবার সেই প্রাণাধিক যত্নের সুপবিত্র নন্দনভূমিতে অকস্মাৎ এই বীভৎস ব্যাপার ঘটিল!

{{gap}}পুজারি ব্ৰাহ্মণ লাঠি হস্তে তাড়া করিয়া আসিল।

{{gap}}জয়কালী তৎক্ষণাৎ অগ্রসর হইয়া তাহাকে নিষেধ করিলেন এবং দ্রুতবেগে ভিতর হইতে মন্দিরের দ্বার বন্ধ করিয়া দিলেন।

{{gap}}অনতিকাল পরেই সুরাপানে-উন্মত্ত ডােমের দল মন্দিরের দ্বারে উপস্থিত হইয়া। তাহাদের বলির পশুর জন্য চীৎকার করিতে লাগিল।

{{gap}}জয়কালী রুদ্ধ দ্বারের পশ্চাতে দাঁড়াইয়া কহিলেন, “যা বেটারা, ফিরে যা! আমার মন্দির অপবিত্র করিস নে।”

{{gap}}ডােমের দল ফিরিয়া গেল। জয়কালী ঠাকুরানী যে তাঁহার রাধানাথ জীউর মন্দিরের মধ্যে অশুচি জন্তুকে আশ্রয় দিবেন, ইহা তাহারা প্রায় প্রত্যক্ষ দেখিয়াও বিশ্বাস করিতে পারিল না।

{{gap}}এই সামান্য ঘটনায় নিখিল জগতের সবজীবের মহাদেবতা পরম প্রসন্ন হইলেন কিন্তু ক্ষুদ্র পল্লীর সমাজনামধারী অতিক্ষুদ্র দেবতাটি নিরতিশয় সংক্ষুদ্ধ হইয়া উঠিল।


{{gap}}শ্রাবণ ১৩০১

{{nop}}