পাতা:গল্পগুচ্ছ (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২১: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh|২৩২|গল্পগুচ্ছ|}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
মতাে একজন লােক গ্রামে থাকিলে আমাদের সাহস কত থাকে। যাহা হউক আমাকে এই ঘাের অপমান হইতে উদ্ধার করিতে হইবে।”
?

, २०२ গল্পগুচ্ছ
{{rh||চতুর্থ পরিচ্ছেদ|}}
মতো একজন লোক গ্রামে থাকিলে আমাদের সাহস কত থাকে। বাহা হউক আমাকে এই ঘোর অপমান হইতে উদ্ধার করিতে হইবে।”
যে শশিভূষণ চিরকাল লােকচক্ষুর অন্তরালে নিভৃত নির্জনতার মধ্যে আপনাকে রক্ষা করিবার চেষ্টা করিয়া আসিয়াছেন তিনি আজ আদালতে আসিয়া হাজির হইলেন। ম্যাজিস্ট্রেট তাঁহার নালিশ শুনিয়া তাঁহাকে প্রাইভেট কামরার মধ্যে ডাকিয়া লইয়া অত্যন্ত খাতির করিয়া কহিলেন, “শশীবাবু, এ মকদ্দমাটা গােপনে মিটমাট করিয়া ফেলিলে ভালাে হয় না কি।”
চতুর্থ পরিচ্ছেদ

যে শশিভূষণ চিরকাল লোকচক্ষর অন্তরালে নিভৃত নিজানতার মধ্যে আপনাকে রক্ষা করিবার চেষ্টা করিয়া আসিয়াছেন তিনি আজ আদালতে আসিয়া হাজির হইলেন। ম্যাজিস্ট্রেট তাঁহার নালিশ শনিয়া তাঁহাকে প্রাইভেট কামরার মধ্যে ডাকিয়া লইয়া অত্যন্ত খাতির করিয়া কহিলেন, “শশীবাব, এ মকদ্দমাটা গোপনে মিটমাট করিয়া ফেলিলে ভালো হয় না কি।”
শশীবাব টেবিলের উপরিস্থিত একখানি আইন গ্রন্থের মলাটের উপর তাঁহার কুশ্চিতভ্র ক্ষীণ দটি অত্যন্ত নিবিটভাবে রক্ষা করিয়া কহিলেন, “আমার মক্কেলকে আমি এরপে পরামর্শ দিতে পারি না। তিনি প্রকাশ্যভাবে অপমানিত হইয়াছেন, গোপনে ইহার মিটমাট হইবে কী করিয়া।"
{{gap}}শশীবাবু টেবিলের উপরিস্থিত একখানি আইন গ্রন্থের মলাটের উপর তাঁহার কুঞ্চিতভ্রূ, ক্ষীণ দৃষ্টি অত্যন্ত নিবিষ্টভাবে রক্ষা করিয়া কহিলেন, “আমার মক্কেলকে আমি এরূপ পরামর্শ দিতে পারি না। তিনি প্রকাশ্যভাবে অপমানিত হইয়াছেন, গােপনে ইহার মিটমাট হইবে কী করিয়া।”

সাহেব দইচারি কথা কহিয়া বুঝিলেন, এই স্বল্পভাষী সবলপদটি লোকটিকে সহজে বিচলিত করা সম্ভব নহে, কহিলেন, “অলরাইট বাব দেখা যাউক কত দর কী হয়।”
{{gap}}সাহেব দুইচারি কথা কহিয়া বুঝিলেন, এই স্বল্পভাষী স্বল্পদৃষ্টি লােকটিকে সহজে বিচলিত করা সম্ভব নহে, কহিলেন, “অল্‌রাইট বাবু, দেখা যাউক কত দূর কী হয়।”
এই বলিয়া ম্যাজিস্ট্রেট-সাহেব মকদ্দমার দিন ফিরাইয়া দিয়া মফসরলভ্রমণে বাহির হইলেন।

এ দিকে জয়েস্ট-সাহেব জমিদারকে পত্র লিখিলেন, “তোমার নায়েব আমার ভৃত্যদিগকে অপমান করিয়া আমার প্রতি অবজ্ঞা প্রকাশ করে, আশা করি, তুমি ইহার সমচিত প্রতিকার কারবে।”
{{gap}}এই বলিয়া ম্যাজিস্ট্রেট-সাহেব মকদ্দমার দিন ফিরাইয়া দিয়া মফস্বলভ্রমণে বাহির হইলেন।
জমিদার শশব্যস্ত হইয়া তৎক্ষণাৎ হরকুমারকে তলব করিলেন। নায়েব আদ্যোপাত সমস্ত ঘটনা খলিয়া বলিলেন। জমিদার অত্যন্ত বিরক্ত হইয়া কহিলেন, "সাহেবের মেথর যখন চারি সের ঘি চাহিল তুমি বিনা বাক্যব্যয়ে তৎক্ষণাৎ কেন দিলে না। তোমার কি বাপের কড়ি লাগিত।”

হরকুমার অস্বীকার করিতে পারিলেন না যে, ইহাতে তাঁহার পৈতৃক সম্পত্তির কোনোরপে ক্ষতি হইত না। অপরাধ স্বীকার করিয়া কহিলেন, “আমার গ্রহ মন্দ তাই এমন দরবন্ধি ঘটিয়াছিল।”
{{gap}}এ দিকে জয়েন্ট-সাহেব জমিদারকে পত্র লিখিলেন, “তােমার নায়েব আমার ভৃত্য-দিগকে অপমান করিয়া আমার প্রতি অবজ্ঞা প্রকাশ করে, আশা করি, তুমি ইহার সমুচিত প্রতিকার করিবে।”
জমিদার কহিলেন, “তাহার পর আবার সাহেবের নামে নালিশ করিতে তোমাকে ट्कृ ब्लिक्ल !”

হরকুমার কহিলেন, “ধমাবতার, নালিশ করিবার ইচ্ছা আমার ছিল না। ঐ আমাদের গ্রামের শশী, তাহার কোথাও কোনো মকদ্দমা জোটে না, সে ছোঁড়া নিতান্ত জোর করিয়া প্রায় আমার সম্মতি না লইয়াই এই হাঙ্গামা বাধাইয়া বসিয়াছে।"
{{gap}}জমিদার শশব্যস্ত হইয়া তৎক্ষণাৎ হরকুমারকে তলব করিলেন। নায়েব আদ্যোপান্ত সমস্ত ঘটনা খুলিয়া বলিলেন। জমিদার অত্যন্ত বিরক্ত হইয়া কহিলেন, “সাহেবের মেথর যখন চারি সের ঘি চাহিল তুমি বিনা বাক্যব্যয়ে তৎক্ষণাৎ কেন দিলে না। তােমার কি বাপের কড়ি লাগিত।”
শুনিয়া জমিদার শশিভূষণের উপর অত্যন্ত কন্ধ হইয়া উঠিলেন। বুঝিলেন, লোকটা অপদাৰ্থ নব্য উকিল, কোনো ছতায় একটা হজক তুলিয়া সাধারণের সমক্ষে পরিচিত হইবার চেষ্টায় আছে। নায়েবকে হুকুম করিয়া দিলেন, মকদ্দমা তুলিয়া লইয়া যেন অবিলম্বে ছোটো বড়ো ম্যাজিস্টেট বাগলকে ঠাণ্ডা করা হয়।

{{gap}}হরকুমার অস্বীকার করিতে পারিলেন না যে, ইহাতে তাঁহার পৈতৃক সম্পত্তির কোনােরূপ ক্ষতি হইত না। অপরাধ স্বীকার করিয়া কহিলেন, “আমার গ্রহ মন্দ তাই এমন দুর্‌বুদ্ধি ঘটিয়াছিল।”

{{gap}}জমিদার কহিলেন, “তাহার পর আবার সাহেবের নামে নালিশ করিতে তােমাকে কে বলিল।”

{{gap}}হরকুমার কহিলেন, “ধর্মাবতার, নালিশ করিবার ইচ্ছা আমার ছিল না। ঐ আমাদের গ্রামের শশী, তাহার কোথাও কোনাে মকদ্দমা জোটে না, সে ছোঁড়া নিতান্ত জোর করিয়া প্রায় আমার সম্মতি না লইয়াই এই হাঙ্গামা বাধাইয়া বসিয়াছে।”

{{gap}}শুনিয়া জমিদার শশিভূষণের উপর অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হইয়া উঠিলেন। বুঝিলেন, লােকটা অপদার্থ নব্য উকিল, কোনাে ছুতায় একটা হুজুক তুলিয়া সাধারণের সমক্ষে পরিচিত হইবার চেষ্টায় আছে। নায়েবকে হুকুম করিয়া দিলেন, মকদ্দমা তুলিয়া লইয়া যেন অবিলম্বে ছােটো বড়ো ম্যাজিস্ট্রেট যুগলকে ঠাণ্ডা করা হয়।