পাতা:জাপানে-পারস্যে-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০৮: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

Mouryan (আলোচনা | অবদান)
Shahriar Kabir Pavel (আলোচনা | অবদান)
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
+
বৈধকরণ
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{gap}}মিলনের সিংহদ্বার উদঘাটনের ভার বাঙালির উপরেই পড়েছে। এইজন্যেই বাংলার নবযুগের প্রথম পথ প্রবর্তক রামমােহন রায়। পশ্চিমকে সম্পূর্ণ গ্রহণ করতে তিনি ভীরুতা করেন নি, কেননা পূর্বের প্রতি তার শ্রদ্ধা অটল ছিল। তিনি যে-পশ্চিমকে দেখতে পেয়েছিলেন, সে তাে শস্ত্রধারী পশ্চিম নয়, বাণিজ্যজীবী পশ্চিম নয়—সে হচ্ছে জ্ঞানে প্রাণে উদ্ভাসিত পশ্চিম।
{{gap}}মিলনের সিংহদ্বার উদঘাটনের ভার বাঙালির উপরেই পড়েছে। এই-
জন্যেই বাংলার নবযুগের প্রথম পথ প্রবর্তক রামমােহন রায়। পশ্চিমকে
সম্পূর্ণ গ্রহণ করতে তিনি ভীরুতা করেন নি, কেননা পূর্বের প্রতি তার
শ্রদ্ধা অটল ছিল। তিনি যে-পশ্চিমকে দেখতে পেয়েছিলেন, সে তাে
শস্ত্রধারী পশ্চিম নয়, বাণিজ্যজীবী পশ্চিম নয়—সে হচ্ছে জ্ঞানে প্রাণে
উদ্ভাসিত পশ্চিম।


{{gap}}জাপান য়ুরােপের কাছ থেকে কর্মের দীক্ষা আর অস্ত্রের দীক্ষা গ্রহণ করেছে। তার কাছ থেকে বিজ্ঞানের শিক্ষাও সে লাভ করতে বসেছে। কিন্তু আমি যতটা দেখেছি, তাতে আমার মনে হয় য়ুরােপের সঙ্গে জাপানের একটা অন্তরতর জায়গায় অনৈক্য আছে। যে গৃঢ় ভিত্তির উপরে য়ুরােপের মহত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত, সেটা আধ্যাত্মিক। সেটা কেবলমাত্র কর্ম-নৈপুণ্য নয়, সেটা তার নৈতিক আদর্শ। এইখানে জাপানের সঙ্গে য়ুরােপের মূলগত প্রভেদ। মনুষ্যত্বের যে-সাধনা অমৃত লােককে মানে এবং সেই অভিমুখে চলতে থাকে, যে-সাধনা কেবলমাত্র সামাজিক ব্যবস্থার অঙ্গ নয়, যে-সাধনা সাংসারিক প্রয়ােজন বা স্বজাতিগত স্বার্থকেও অতিক্রম করে আপনার লক্ষ্য স্থাপন করেছে,—সেই সাধনার ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে য়ুরােপের মিল যত সহজ, জাপানের সঙ্গে তার মিল তত সহজ নয়। জাপানির সভ্যতার সৌধ একমহলা—সেই হচ্ছে তার সমস্ত শক্তি ও দক্ষতার নিকেতন। সেখানকার ভাণ্ডারের সব-চেয়ে বড়ো জিনিস যা সঞ্চিত হয়, সে হচ্ছে কৃতকর্মতা,—সেখানকার মন্দিরে সব-চেয়ে বড়ো দেবতা স্বাদেশিক স্বার্থ। জাপান তাই সমস্ত য়ুরােপের মধ্যে সহজেই আধুনিক জর্মনির শক্তি-উপাসক নবীন দার্শনিকদের কাছ থেকে মন্ত্র গ্রহণ করতে পেরেছে; নীট্ঝের গ্রন্থ তাদের কাছে সব-চেয়ে সমাদৃত। তাই আজ পর্যন্ত জাপান ভালাে করে স্থির করতেই পারলে
{{gap}}জাপান য়ুরােপের কাছ থেকে কর্মের দীক্ষা আর অস্ত্রের দীক্ষা গ্রহণ
করেছে। তার কাছ থেকে বিজ্ঞানের শিক্ষাও সে লাভ করতে বসেছে।
কিন্তু আমি যতটা দেখেছি, তাতে আমার মনে হয় য়ুরােপের সঙ্গে
জাপানের একটা অন্তরতর জায়গায় অনৈক্য আছে। যে গৃঢ় ভিত্তির
উপরে য়ুরােপের মহত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত, সেটা আধ্যাত্মিক। সেটা কেবলমাত্র
কর্ম-নৈপুণ্য নয়, সেটা তার নৈতিক আদর্শ। এইখানে জাপানের সঙ্গে
য়ুরােপের মূলগত প্রভেদ। মনুষ্যত্বের যে-সাধনা অমৃত লােককে মানে
এবং সেই অভিমুখে চলতে থাকে, যে-সাধনা কেবলমাত্র সামাজিক ব্যবস্থার
অঙ্গ নয়, যে-সাধনা সাংসারিক প্রয়ােজন বা স্বজাতিগত স্বার্থকেও
অতিক্রম করে আপনার লক্ষ্য স্থাপন করেছে, সেই সাধনার ক্ষেত্রে
ভারতের সঙ্গে য়ুরােপের মিল যত সহজ, জাপানের সঙ্গে তার মিল তত
সহজ নয়। জাপানির সভ্যতার সৌধ একমহলা—সেই হচ্ছে তার
সমস্ত শক্তি ও দক্ষতার নিকেতন। সেখানকার ভাণ্ডারের সব-চেয়ে
বড়ো জিনিস যা সঞ্চিত হয়, সে হচ্ছে কৃতকর্মতা,—সেখানকার মন্দিরে
সব-চেয়ে বড়ো দেবতা স্বাদেশিক স্বার্থ। জাপান তাই সমস্ত য়ুরােপের
মধ্যে সহজেই আধুনিক জর্মনির শক্তি-উপাসক নবীন দার্শনিকদের কাছ
থেকে মন্ত্র গ্রহণ করতে পেরেছে ; নীট্ঝের গ্রন্থ তাদের কাছে সব-চেয়ে
সমাদৃত। তাই আজ পর্যন্ত জাপান ভালাে করে স্থির করতেই পারলে