পাতা:গল্পগুচ্ছ (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৩২: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh||মেঘ ও রৌদ্র|২৪৩}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
না, কিন্তু জেলের বাহিরে যে স্বাধীনতা আছে সে আমাদিগকে প্রতাৱণা করিয়া বিপদে ফেলে। আর, যদি সৎসঙ্গের কথা বল তাে, জেলের মধ্যে মিথ্যাবাদী কৃতঘ্ন কাপুরুষের সংখ্যা অল্প, কারণ স্থান পরিমিত-বাহিরে অনেক বেশি।”
মেঘ ও রৌদ্র R8ළු

না, কিন্তু জেলের বাহিরে যে স্বাধীনতা আছে সে আমাদিগকে প্রতারণা করিয়া বিপদে ফেলে। আর, যদি সৎসঙ্গের কথা বল তো, জেলের মধ্যে মিথ্যাবাদী কৃতঘর কাপরাষের সংখ্যা অলপ, কারণ পথান পরিমিত-বাহিরে অনেক বেশি।”
দশম পরিচ্ছেদ
{{rh||দশম পরিচ্ছেদ|}}
শশিভূষণ জেলে প্রবেশ করিবার অনতিকাল পরেই তাঁহার পিতার মৃত্যু হইল। তাঁহার আর বড়ো কেহ ছিল না। এক ভাই বহুকাল হইতে সেনট্রাল প্রভিসে কাজ করিতেন, দেশে আসা তাঁহার বড়ো ঘটিয়া উঠিত না, সেইখানেই তিনি বাড়ি তৈয়ারি করিয়া সপরিবারে স্থায়ী হইয়া বসিয়াছিলেন। দেশে বিষয়সম্পত্তি যাহা ছিল নায়েব হরকুমার তাহার অধিকাংশ নানা কৌশলে আত্মসাং করিলেন।
শশিভূষণ জেলে প্রবেশ করিবার অনতিকাল পরেই তাঁহার পিতার মৃত্যু হইল। তাঁহার আর বড়াে কেহ ছিল না। এক ভাই বহুকাল হইতে সেন্‌ট্রাল প্রভিন্সে কাজ করিতেন, দেশে আসা তাঁহার বড়াে ঘটিয়া উঠিত না, সেইখানেই তিনি বাড়ি তৈয়ারি করিয়া সপরিবারে স্থায়ী হইয়া বসিয়াছিলেন। দেশে বিষয়সম্পত্তি যাহা ছিল নায়েব হরকুমার তাহার অধিকাংশ নানা কৌশলে আত্মসাৎ করিলেন।

জেলের মধ্যে অধিকাংশ কয়েদিকে যে পরিমাণে দুঃখ ভোগ করিতে হয় দৈববিপাকে শশিভূষণকে তদপেক্ষা অনেক বেশি সহ্য করিতে হইয়াছিল। তথাপি দীঘ" পাঁচ বৎসর কাটিয়া গেল।
{{gap}}জেলের মধ্যে অধিকাংশ কয়েদিকে যে পরিমাণে দুঃখ ভােগ করিতে হয় দৈববিপাকে শশিভূষণকে তদপেক্ষা অনেক বেশি সহ্য করিতে হইয়াছিল। তথাপি দীর্ঘ পাঁচ বৎসর কাটিয়া গেল।
আবার একদা বর্ষার দিনে জীণ শরীর ও শন্য হাদয় লইয়া শশিভূষণ করা

বাহিরে তাঁহার আর-কেহ অথবা আর-কিছু ছিল না। গহহীন আত্মীয়হীন সমাজহীন কেবল তাঁহার একলাটির পক্ষে এত বড়ো জগৎসংসার অত্যন্ত ঢিলা বলিয়া ঠেকিতে লাগিল ।
{{gap}}আবার একদা বর্ষার দিনে জীর্ণ শরীর ও শূন্য হদয় লইয়া শশিভূষণ কারাপ্রাচীরের বাহিরে আসিয়া দাঁড়াইলেন। স্বাধীনতা পাইলেন কিন্তু তাহা ছাড়া কারার বাহিরে তাঁহার আর-কেহ অথবা আর-কিছু ছিল না। গৃহহীন আত্মীয়হীন সমাজহীন কেবল তাঁহার একলাটির পক্ষে এত বড়াে জগৎসংসার অত্যন্ত ঢিলা বলিয়া ঠেকিতে লাগিল।
জীবনযাত্রার বিচ্ছিন্ন সত্র আবার কোথা হইতে আরম্ভ করিবেন) এই কথা ভাবিতেছেন, এমন সময়ে এক বৃহৎ জড়ি তাঁহার সম্মখে আসিয়া দাঁড়াইল। একজন ভৃত্য নামিয়া আসিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “আপনার নাম শশিভূষণবাব ?”

তিনি কহিলেন, “হাঁ।” -: সে তৎক্ষণাৎ গাড়ির দরজা খালিয়া তাঁহার প্রবেশের প্রতীক্ষায় দাঁড়াইল । তিনি আশ্চর্য হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “আমাকে কোথায় যাইতে হইবে।” সে কহিল, “আমার প্রভু আপনাকে ডাকিয়াছেন।” পথিকদের কৌতুহলদীটিপাত অসহ্য বোধ হওয়াতে তিনি সেখানে আর অধিক বাদানবোদ না করিয়া গাড়িতে উঠিয়া পড়িলেন। ভাবিলেন, নিশ্চয় ইহার মধ্যে একটা কিছ ভ্ৰম আছে। কিন্তু একটা কোনো দিকে তো চলিতে হইবে-নাহয় এমনি করিয়া ভ্রম দিয়াই এই নতন জীবনের ভূমিকা আরম্ভ হউক।
{{gap}}জীবনযাত্রার বিচ্ছিন্ন সূত্র আবার কোথা হইতে আরম্ভ করিবেন এই কথা ভাবিতেছেন, এমন সময়ে এক বহৎ জুড়ি তাঁহার সম্মুখে আসিয়া দাঁড়াইল। একজন ভৃত্য নামিয়া আসিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “আপনার নাম শশিভূষণবাবু?”
সেদিনও মেঘ এবং রোঁদু আকাশময় পরস্পরকে শিকার করিয়া ফিরিতেছিল; পথের প্রান্তবতী বর্ষার জল-পলাবিত গাঢ়শ্যাম শস্যক্ষেত্র চঞ্চল ছায়ালোকে বিচিত্র হইয়া উঠিতেছিল। হাটের কাছে একটা বহৎ রথ পড়িয়া ছিল এবং তাহার আদরেবতী মদির দোকানে একদল বৈষ্ণব ভিক্ষক গপিযন্ত্রখোল করতাল -যোগে গান গাহিতেছিল—

এসো এসো ফিরে এসো— নাথ হে, ফিরে এসো ! আমার ক্ষধিত তৃষিত তাপিত চিত, ব’ধ হে, ফিরে এসো !
{{gap}}তিনি কহিলেন, “হাঁ।”

{{gap}}সে তৎক্ষণাৎ গাড়ির দরজা খুলিয়া তাঁহার প্রবেশের প্রতীক্ষায় দাঁড়াইল।

{{gap}}তিনি আশ্চর্য হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “আমাকে কোথায় যাইতে হইবে।”

{{gap}}সে কহিল, “আমার প্রভু আপনাকে ডাকিয়াছেন।”

{{gap}}পথিকদের কৌতুহলদৃষ্টিপাত অসহ্য বােধ হওয়াতে তিনি সেখানে আর অধিক বাদানুবাদ না করিয়া গাড়িতে উঠিয়া পড়িলেন। ভাবিলেন, নিশ্চয় ইহার মধ্যে একটা কিছু ভ্রম আছে। কিন্তু একটা কোনাে দিকে তাে চলিতে হইবে-নাহয় এমনি করিয়া ভ্রম দিয়াই এই নতন জীবনের ভূমিকা আরম্ভ হউক।

{{gap}}সেদিনও মেঘ এবং রৌদ্র আকাশময় পরস্পরকে শিকার করিয়া ফিরিতেছিল; পথের প্রান্তবতী বর্ষার জল-প্লাবিত গাঢ়শ্যাম শস্যক্ষেত্র চঞ্চল ছায়ালােকে বিচিত্র হইয়া উঠিতেছিল। হাটের কাছে একটা বৃহৎ রথ পড়িয়া ছিল এবং তাহার অদূরবতী মুদির দোকানে একদল বৈষ্ণব ভিক্ষুক গুপিযন্ত্রখােল করতাল -যােগে গান গাহিতেছিল-

{{gap}}{{gap}}এসাে এসাে ফিরে এসাে—নাথ হে, ফিরে এসাে!

{{gap}}{{gap}}আমার ক্ষুধিত তৃষিত তাপিত চিত,

{{gap}}{{gap}}বঁধু হে, ফিরে এসাে!
{{nop}}