পাতা:গল্পগুচ্ছ (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫২: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh||গল্পগুচ্ছ|২৬৩}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh||নিশীথে|}}
গল্পগুচ্ছ 象尊心
“ডাক্তার! ডাক্তার।”
নিশীথে

“ড়াঙ্কার ; ডাঙ্কার ”ি
{{gap}}জ্বালাতন করিল। এই অর্ধেক রাত্রে-
জবালাতন করিল। এই অধোক রায়ে-- চোখ মেলিয়া দেখি আমাদের জমিদার দক্ষিণাচরণবাব। ধড়ফড় করিয়া উঠিয়া পিঠভাঙা চৌকিটা টানিয়া আনিয়া তাঁহাকে বসিতে দিলাম এবং উদবিগুনভাবে তাঁহার মখের দিকে চাহিলাম। ঘড়িতে দেখি, তখন রান্ত্রি আড়াইটা।

দক্ষিণাচরণবাব বিবর্ণমখে বিসফারিতনেয়ে কহিলেন, “আজ রাত্রে আবার সেইরূপ উপদ্রব আরম্ভ হইয়াছে—তোমার ঔষধ কোনো কাজে লাগিল না।”
{{gap}}চোখ মেলিয়া দেখি আমাদের জমিদার দক্ষিণাচরণবাবু। ধড়্‌ফড়্‌ করিয়া উঠিয়া পিঠভাঙা চৌকিটা টানিয়া আনিয়া তাঁহাকে বসিতে দিলাম এবং উদ্‌বিগ্নভাবে তাঁহার মুখের দিকে চাহিলাম। ঘড়িতে দেখি, তখন রাত্রি আড়াইটা।
আমি কিঞ্চিৎ সসংকোচে বলিলাম, “আপনি বোধ করি মদের মাত্রা আবার বাড়াইয়াছেন।”

দক্ষিণাচরণবাব অত্যন্ত বিরক্ত হইয়া কহিলেন, “ওটা তোমার ভারি প্রম। মদ নহে; আদ্যোপাত বিবরণ না শুনিলে তুমি আসল কারণটা অনুমান করিতে পারবে ना ।”
{{gap}}দক্ষিণাচরণবাবু বিবর্ণমুখে বিস্ফারিতনেত্রে কহিলেন, “আজ রাত্রে আবার সেইরূপ উপদ্রব আরম্ভ হইয়াছে—তােমার ঔষধ কোনাে কাজে লাগিল না।”
কুলুঙ্গির মধ্যে ক্ষুদ্র টিনের ডিবায় লানভাবে কেরোসিন জবলিতেছিল, আমি তাহা উকাইয়া দিলাম; একটখানি আলো জাগিয়া উঠিল এবং অনেকখানি ধোঁয়া বাহির হইতে লাগিল। কোঁচাখানা গায়ের উপর টানিয়া একখানা খবরের-কাগজ-পাতা প্যাকবাক্সের উপর বসিলাম। দক্ষিণাচরণবাব বলিতে লাগিলেন—

আমার প্রথম পক্ষের পল্লীর মতো এমন গহিণী অতি দলেভ ছিল। কিন্তু আমার তখন বয়স বেশি ছিই না, সহজেই রসাধিক্য ছিল, তাহার উপর আবার কাব্যশাম্মটা ভালো করিয়া অধ্যয়ন করিয়াছিলাম, তাই অবিমিশ্র গহিণীপনায় মন উঠিত না। কালিদাসের সেই শ্লোকটা প্রায় মনে উদয় হইত— -
{{gap}}আমি কিঞ্চিৎ সসংকোচে বলিলাম, “আপনি বােধ করি মদের মাত্রা আবার বাড়াইয়াছেন।”
গহিণী সচিবঃ সখী মিথঃ প্রিয়শিয্যা ললিতে কলাবিধোঁ । কিন্তু আমার গহিণীর কাছে ললিত কলাবিধির কোনো উপদেশ খাটিত না এবং সখীভাবে প্রণয়সম্ভাষণ করিতে গেলে তিনি হাসিয়া উড়াইয়া দিতেন। গঙ্গার স্রোতে যেমন ইন্দ্রের ঐরাবত নাকাল হইয়াছিল, তেমনি তাঁহার হাসির মখে বড়ো বড়ো কাব্যের টুকরা এবং ভালো ভালো আদরের সম্ভাষণ মহাতের মধ্যে অপদস্থ হইয়া ভাসিয়া যাইত। তাঁহার হাসিবার আশচষ ক্ষমতা ছিল।

তাহার পর, আজ বছর চারেক হইল আমাকে সাংঘাতিক রোগে ধরিল। ওঠয়ণ হইয়া, জরবিকার হইয়া, মরিবার দাখিল হইলাম। বাঁচিবার আশা ছিল না। একদিন এমন হইল যে, ডাক্তার জবাব দিয়া গেল । এমন সময় আমায় এক আত্মীয় কোথা হইতে এক ব্রহমচারী আনিয়া উপস্থিত করিল; সে গব্য ঘাতের সহিত একটা শিকড় বটিয়া আমাকে খাওয়াইয়া দিল। ঔষধের গুণেই হউক বা আদষ্টরুমেই হউক সে যাত্রা বাঁচিয়া গেলাম । -
{{gap}}দক্ষিণাচরণবাবু অত্যন্ত বিরক্ত হইয়া কহিলেন, “ওটা তােমার ভারি ভ্রম। মদ নহে; আদ্যোপান্ত বিবরণ না শুনিলে তুমি আসল কারণটা অনুমান করিতে পারিবে না।”
রোগের সময় আমার পল্লী অহমিশি এক মহতের জন্য বিগ্রাম করেন নাই।

{{gap}}কুলুঙ্গির মধ্যে ক্ষুদ্র টিনের ডিবায় ম্লানভাবে কেরােসিন জ্বলিতেছিল, আমি তাহা উস্কাইয়া দিলাম; একটুখানি আলাে জাগিয়া উঠিল এবং অনেকখানি ধোঁয়া বাহির হইতে লাগিল। কোঁচাখানা গায়ের উপর টানিয়া একখানা খবরের-কাগজ-পাতা প্যাক্‌বাক্সের উপর বসিলাম। দক্ষিণাচরণবাবু বলিতে লাগিলেন-


{{gap}}আমার প্রথম পক্ষের স্ত্রীর মতাে এমন গৃহিণী অতি দুর্লভ ছিল। কিন্তু আমার তখন বয়স বেশি ছিল না, সহজেই রসাধিক্য ছিল, তাহার উপর আবার কাব্যশাস্ত্রটা ভালাে করিয়া অধ্যয়ন করিয়াছিলাম, তাই অবিমিশ্র গৃহিণীপনায় মন উঠিত না। কালিদাসের সেই লােকটা প্রায় মনে উদয় হইত-

{{gap}}{{gap}}{{gap}}গহিণী সচিবঃ সখী মিথঃ

{{gap}}{{gap}}{{gap}}প্রিয়শিষ্যা ললিতে কলাবিধৌ।

{{gap}}কিন্তু আমার গৃহিণীর কাছে ললিত কলাবিধির কোনাে উপদেশ খাটিত না এবং সখীভাবে প্রণয়সম্ভাষণ করিতে গেলে তিনি হাসিয়া উড়াইয়া দিতেন। গঙ্গার স্রোতে যেমন ইন্দ্রের ঐরাবত নাকাল হইয়াছিল, তেমনি তাঁহার হাসির মুখে বড়ো বড়ো কাব্যের টুকরা এবং ভালাে ভালাে আদরের সম্ভাষণ মুহূর্তের মধ্যে অপদস্থ হইয়া ভাসিয়া যাইত। তাঁহার হাসিবার আশ্চর্য ক্ষমতা ছিল।

{{gap}}তাহার পর, আজ বছর চারেক হইল আমাকে সাংঘাতিক রােগে ধরিল। ওষ্ঠব্রণ হইয়া, জ্বরবিকার হইয়া, মরিবার দাখিল হইলাম। বাঁচিবায় আশা ছিল না। একদিন এমন হইল যে, ডাক্তার জবাব দিয়া গেল। এমন সময় আমার এক আত্মীয় কোথা হইতে এক ব্রহ্মচারী আনিয়া উপস্থিত করিল; সে গব্য ঘৃতের সহিত একটা শিকড় বাঁটিয়া আমাকে খাওয়াইয়া দিল। ঔষধের গুণেই হউক বা অদৃষ্টক্রমেই হউক সে যাত্রা বাঁচিয়া গেলাম।

{{gap}}রােগের সময় আমায় স্ত্রী অহর্নিশি এক মুহুর্তের জন্য বিশ্রাম করেন নাই।